যাদাবিকরাহচ্ছে: আগামীতে রাষ্ট্র হবে ইসলাম এবং সংবিধান হবে আল কোরআন -এমন প্রতিশ্রুতি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলমের নামে ফেসবুকে ছড়ানো হচ্ছে।
যাপাওয়াযাচ্ছে: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলমের আসল ফেসবুক পোস্ট বা গণমাধ্যম কোথাও সরাসরি এমন বক্তব্য পাওয়া যায়নি। মূলত তাঁর নামে খোলা একটি ফেক আইডি থেকে এই বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে, যে কথা তিনি নিজেই তাঁর আসল একাউন্ট থেকে জানিয়েছেন। তাই ফ্যাক্টওয়াচ এ ধরণের পোস্টগুলোকে “মিথ্যা” হিসেবে চিহ্নিত করছে।
৬ আগস্ট, ২০২৪ তারিখে ফেসবুকে একটি ভিডিওবার্তার মাধ্যমে সারজিস আলম Sarjis Alam নামক এই ফেসবুক আইডিকে তার আসল ফেসবুক আইডি বলে জানান। তিনি ৪মিনিট ৩৩ সেকেন্ডের ভিডিও বার্তার প্রথম ৫১ সেকেন্ডে বলেন “ সম্প্রতিফেসবুকেদেখতেপাচ্ছিযেআমারনামেআসলেবেশকিছুফেসবুকআইডিরয়েছে।এইআইডিসংখ্যা৫০ছাড়িয়েগিয়েছে।কিন্তুআমারশুধুমাত্রএকটিফেসবুকআইডিইরয়েছেএবংঅন্যকোনফেসবুকেপেজবাএইরকমকোনকিছুইনেই।অর্থাৎআমিএখনএইমুহুর্তেযেআইডিথেকেলাইভকরছি, এটিইআমারএকমাত্রফেসবুকআইডি।অন্যকোনআইডিবাপেজআমারনেই।আমিদেখছিযেবিভিন্নমিডিয়ারভাইবোনেরাতাদেরযেমিডিয়ারবিভিন্নপেজরয়েছেবাআইডিরয়েছেসেগুলোতেআমারনামমেনশনকরেওইআইডিগুলোরমিথ্যাকিছুবিভ্রান্তিরতথ্যছড়াচ্ছে।এজন্যআমিআপনাদেরবলেদিতেচাইসেগুলোআমারআইডিনয়, ফেকআইডি।এবংআপনারাসেগুলোফলোকরাথেকেবিরতথাকবেন।এবংযারাএইমুহুর্তেআমারআইডিতেরয়েছেনতাদেরকেঅনুরোধকরবোওইআইডিগুলোআপনারাআনফলোকরেদিবেনএবংসেগুলোতেসম্ভবহলেরিপোর্টকরবেন।“
তাঁর এই একাউন্টে ৮৩২,০০০ ফলোয়ার দেখা যাচ্ছে, যা ‘Sarjis Alam’ নামক অন্যান্য ফেসবুক একাউন্ট গুলোর ফলোয়ার সংখ্যার চেয়ে অনেক বেশি। এছাড়া এই আইডি থেকে তাকে নিয়মিত লাইভে আসতে দেখা যায়। এছাড়া,২০১৪ সাল থেকে তাকে এই একাউন্টে সক্রিয় দেখা যাচ্ছে। সবমিলিয়ে এই একাউন্টটিই তাঁর আসল একাউন্ট বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।
সারজিস আলমের এই ফেসবুক একাউন্ট থেকে“আগামীররাষ্ট্রহবেইসলাম✊সংবিধানহবেআলকোরআন – ইনশাআল্লাহএমন কোন পোস্ট পাওয়া যায়নি। অর্থাৎ তিনি রাষ্ট হবে ইসলাম হবে সংবিধান হবে কোরআন এমন কোন পোস্ট করেনি।
তবে তার নামে খোলা ভিন্ন একটি আইডিতে এমন পোস্ট দেখা গিয়েছে। মূলত এই পোস্টের কারণেই সবাই বিভ্রান্ত হয়েছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য,ভাইরাল এই পোস্টে ‘রাষ্ট্র হবে ইসলাম’ বাক্যাংশের মধ্যে বেশ অস্পষ্টতা রয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম। সংবিধানের ২ক অনুচ্ছেদে এই রাষ্ট্রধর্মের কথা বলা হয়েছে। মাঝে মাঝে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল বা গোষ্ঠী এই ‘রাষ্ট্রধর্ম’ বাতিল করার দাবি জানালেও সাম্প্রতিক রাজনৈতিক আন্দোলনের মাঝে এমন কোনো দাবি ছিলনা।
এছাড়া,১৯৭২ সালের ১৬ই ডিসেম্বর থেকে বাংলাদেশে একটি সংবিধান কার্যকর রয়েছে,যা ডক্টর কামাল হোসেনের নেতৃত্বে ৩৫ সদস্যবিশিষ্ট ‘সংবিধান প্রণয়ন কমিটি’ দ্বারা রচনা করা হয়েছিল, এবং তৎকালীন গণপরিষদ দ্বারা অনুমোদন লাভ করেছিল। বিভিন্ন সেনাশাসনের সময় এই সংবিধান স্থগিত করা হলেও কখনো ধর্মগ্রন্থ আল কোরআন কে বর্তমান সংবিধানের বিকল্প হিসেবে প্রতিস্থাপন করা হয়নি।
সিধান্ত:
অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে সারজিস আলমের আসল ফেসবুক আইডিতে তিনি রাষ্টধর্ম পরিবর্তন কিংবা বর্তমান সংবিধান বাতিলের প্রতিশ্রুতি দিয়ে কোন পোস্ট করেননি। তার নামে তৈরা করা ভুয়া ফেসবুক আইডি থেকে এমন পোস্ট করা হচ্ছে। কোন গণমাধ্যমেও তিনি এমন কোন বক্তব্য দেননি। তাই ফ্যাক্টওয়াচ এধরণের পোস্টগুলোকে “মিথ্যা” হিসেবে চিহ্নিত করছে।
এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।। এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে। এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।