সিইসি এবং রাষ্ট্রপতি কি আমেরিকার চাপে নির্বাচন বন্ধ করে ক্ষমা চেয়েছেন?

12
সিইসি এবং রাষ্ট্রপতি কি আমেরিকার চাপে নির্বাচন বন্ধ করে ক্ষমা চেয়েছেন? সিইসি এবং রাষ্ট্রপতি কি আমেরিকার চাপে নির্বাচন বন্ধ করে ক্ষমা চেয়েছেন?

Published on: [post_published]

সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে শেয়ারকৃত একটি ভিডিওতে দাবি করা হচ্ছে যে, আমেরিকার চাপে নির্বাচন বন্ধ করে ক্ষমা চেয়েছেন সিইসি এবং রাষ্ট্রপতি। তবে অনুসন্ধান করে দেখা গেছে, সিইসি কিংবা রাষ্ট্রপতি – কেউই আমেরিকার চাপে নির্বাচন বন্ধ করে ক্ষমা চাননি। বরং ভিন্ন প্রসঙ্গে প্রদত্ত সিইসি এবং রাষ্ট্রপতির বক্তব্যকে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে এমনভাবে প্রচার করা হচ্ছে যেন তাঁরা আসলেই নির্বাচন বন্ধ করার কথা বলেছেন। তাছাড়া, মূলধারার সংবাদমাধ্যমগুলোতে আমেরিকার চাপে নির্বাচন বন্ধ করা হয়েছে – এই সংক্রান্ত কোন তথ্য পাওয়া যায়নি৷ তাই সঙ্গত কারণে ফ্যাক্টওয়াচ সামাজিক মাধ্যমে শেয়ারকৃত ভিডিওটির দাবিকে “মিথ্যা” বলে সাব্যস্ত করছে।

এমন কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে এবং এখানে

 

ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধান:

সামাজিক মাধ্যমে শেয়ারকৃত ভিডিওটির দাবি সঠিক কিনা তা যাচাই করতে আমরা উক্ত ভিডিওতে ভয়েস অব আমেরিকাকে দেওয়া সিইসি’র যে সাক্ষাৎকারকে সূত্র হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে সেই সাক্ষাৎকারটি খুঁজে বের করি। ভয়েস অব আমেরিকা বাংলা এর অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেল থেকে প্রাপ্ত এই সাক্ষাৎকারের আট মিনিট দুই সেকেন্ডে গিয়ে দেখা গেছে প্রশ্নকর্তা শতরূপা বড়ুয়া সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালের কাছে জানতে চাচ্ছেন আগামী ০৭ই জানুয়ারির নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রগুলোতে সিসিটিভি ক্যামেরা থাকবে কিনা। জবাবে সিইসি বলেন, বাংলাদেশে দুই লক্ষ ৬০ হাজার ভোট কেন্দ্রের জন্য প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ সিসিটিভি ক্যামেরা লাগবে এবং এই পরিমাণ সিসিটিভি ক্যামেরা কেন্দ্রীয়ভাবে মনিটরিং করা নির্বাচন কমিশনের পক্ষে সম্ভব হবে না। এরপর তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমরা (নির্বাচন কমিশন) অনেক চিন্তাভাবনা করেছি এবং বস্তুগতভাবে এটা সম্ভব হবে না বলে আমরা সিসিটিভি ক্যামেরা ব্যবহারের প্ল্যানটি পরিত্যাগ করছি। তখন প্রশ্নকর্তা জানতে চান এটা কি নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত এবং সিইসি সেই প্রশ্নের জবাবে হ্যাঁ-সূচক উত্তর দেন। মূলত সাক্ষাৎকারের এই অংশটিকে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় এমনভাবে সম্পাদনা করা হয়েছে যা দেখে মনে হচ্ছে সিইসি নির্বাচন পরিত্যাগ করার কথা বলছেন! 

অন্যদিকে, সামাজিক মাধ্যমে শেয়ারকৃত আলোচিত ভিডিওটির একটি অংশে দেখা গেছে রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন চুপ্পু সকলের কাছে ক্ষমা চাচ্ছেন। তবে রিভার্স ইমেজ সার্চ পদ্ধতিতে অনুসন্ধান করে দেখা গেছে, গত ১৮ ডিসেম্বর ২০২৩ এ সুপ্রিম কোর্ট দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে শুরুতেই তিনি বলছেন, “এখানে উপস্থিত জ্ঞানগর্ভ মানুষদের সামনে আমি এই রাষ্ট্রপতি হিসেবে কি বক্তব্য দিব জানি না৷ কোথাও কোন ভুল হয়ে গেলে আপনারা ক্ষমা করবেন।” মূলত রাষ্ট্রপতির বক্তব্যের এই অংশটুকুকে মূল ভিডিও থেকে কেটে নিয়ে এমনভাবে প্রচার করা হচ্ছে যেন তিনি নির্বাচন বন্ধ করে ক্ষমা প্রার্থনা করছেন!

অতএব, উপরের আলোচনা থেকে এই বিষয়টি স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে যে, সামাজিক মাধ্যমে শেয়ারকৃত ভিডিওটির দাবি সঠিক নয়। 

সুতরাং, সবকিছু বিবেচনা করে ফ্যাক্টওয়াচ সামাজিক মাধ্যমে শেয়ারকৃত ভিডিওটির দাবিকে “মিথ্যা” বলে সাব্যস্ত করছে। 

এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।।
এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে
এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।

কোনো তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকেঃ
ইমেইল করুনঃ contact@factwatch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh

No Factcheck schema data available.