১০ এবং ১১ নভেম্বর, ২০২১ তারিখে একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে দেশের একাধিক মূলধারার সংবাদমাধ্যম। বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের আওতাধীন জনসংখ্যা ও প্রজনন স্বাস্থ্য সংক্রান্ত গবেষণা ইনস্টিটিউট ১১টি পদে যোগ্যতাসম্পন্ন বাংলাদেশী নাগরিকদের নিকট আবেদনপত্র আহ্বান করছে। বাস্তবে এই ‘জনসংখ্যা ও প্রজনন স্বাস্থ্য সংক্রান্ত গবেষণা ইনস্টিটিউট’- এর কোনো অস্তিত্বই খুঁজে পায়নি ফ্যাক্টওয়াচ। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. মাইদুল ইসলাম প্রধান বলেন, “এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি কারা প্রকাশ করেছে আমাদের জানা নেই। আমাদের নিয়োগ সংক্রান্ত নোটিশ হলে ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।“
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের আওতাধীন ‘জনসংখ্যা ও প্রজনন স্বাস্থ্য সংক্রান্ত গবেষণা ইনস্টিটিউট’- এ নিয়োগের এই বিজ্ঞপ্তিটিতে একাধিক অসামঞ্জস্যতা ধরা পড়েছে।
প্রথমত, ১৭ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে মুজিব শতবর্ষ পালিত হচ্ছে। এই সময়কালে সরকারি যেসব নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে তার সবগুলোতে মুজিব শতবর্ষ লোগো ব্যবহৃত হচ্ছে। তবে উক্ত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে সেই লোগোটি নেই। সর্বশেষ পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের এমন কিছু বিজ্ঞপ্তি দেখুন এখানে।
দ্বিতীয়ত, মন্ত্রণালয় বা অধিদপ্তর থেকে কোনো নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিলে সেখানে প্রকাশের তারিখ উল্লেখ থাকে। এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটিতে প্রকাশের কোনো তারিখ উল্লেখ নেই। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির শেষে ৩ নং শর্তাবলীতে উল্লেখ করা হয়েছে, বিজ্ঞপ্তিটি প্রকাশের তারিখ থেকে ২০ দিনের মধ্যে আবেদন করতে হবে।
তৃতীয়ত, এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির ৩ নং শর্তাবলীতে আবেদনপত্র জমা দিতে একটি জিপিওবক্স নম্বর দেয়া আছে। সরকারি কোনো নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে এ ধরনের জিপিওবক্স নম্বার দেয়া থাকে না।
চতুর্থত, মন্ত্রণালয় অধিদপ্তরের সব নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি, পরীক্ষার নোটিশ ও ফল তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। তবে এই কথিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে পাওয়া যায়নি।
এই বিজ্ঞপ্তির বিষয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. মাইদুল ইসলাম প্রধান নিউজবাংলাকে বলেন, “এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি কারা প্রকাশ করেছে আমাদের জানা নেই। আমাদের নিয়োগ সংক্রান্ত নোটিশ হলে ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। মন্ত্রণালয়ের অনেকগুলো শাখা রয়েছে, যে শাখা নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে, সেই শাখা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার নাম এবং পদবি উল্লেখ করে স্বাক্ষরসহ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। যে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনলাইনে ঘুরে বেড়াচ্ছে সেটাতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার নাম নেই। এটা নিয়ে কিছু গণমাধ্যমে নিউজও হয়েছে দেখছি। আসলে এটি ভুয়া নিয়োগ। এর বিরুদ্ধে নিউজ হওয়া উচিত।“
মাইদুল ইসলাম আরও বলেন, “এ ধরনের ভুয়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির বিষয়ে জনগণকে সতর্ক থাকতে হবে। আর যারা গণমাধ্যমে এ সংক্রান্ত নিউজ করছেন তাদেরকেও আরও সতর্ক হতে হবে। কোনো নিউজ প্রকাশ করার আগে সেগুলো যাচাই-বাছাই করে সঠিক তথ্য জনগণের কাছে উপস্থাপন করতে হবে।“