১ মার্চ ২০২২ তারিখে “রাতেই রাশিয়া ধ্বংস। ন্যাটোর ৩০ দেশ পাল্টা হামলা। রাশিয়ার ৭৫% সেনা খতম” ক্যাপশনে ৮ মিনিট ৪১ সেকেন্ডের একটি ভিডিও শেয়ার হয়েছে ফেসবুকে, যার থাম্বনেইলে বলা হয়েছে “রাতেই ন্যাট’র ৩০ দেশ পরমাণু হামলা, রাশিয়ার ৭৫% সেনা নিহত যুদ্ধে”। ভিডিওতে আরও দাবি করা হয়েছে, “ন্যাটো’র তিন দেশ ইউক্রেনে যুদ্ধের সহযোগী হিসেবে ৭০ টি যুদ্ধ বিমান পাঠাচ্ছে”। মূলত ভিডিওর এই দাবি মিথ্যা। বাস্তবে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে ন্যাটোর ৩০ সদস্য দেশ পরমাণু হামলা করে নি। ইউক্রেনে যুদ্ধবিমান পাঠাবে না বলেও নিশ্চিত করেছে ন্যাটো’র সদস্যভুক্ত তিনটি দেশ।
সম্প্রতি ফেসবুকের বিভিন্ন পেজ থেকে শেয়ার হওয়া এমন কিছু ভিডিও দেখুন এখানে, এখানে, এখানে,এখানে, এবং এখানে।
৮ মিনিট ৪১ সেকেন্ডের এই ভিডিওর ক্যাপশনের দাবি অনুযায়ী ন্যাটো-র (North American Treaty Organization) ৩০ দেশ পাল্টা হামলা করছে। বাস্তবে ন্যাটোর কোনো সদস্য রাষ্ট্রই এখন পর্যন্ত রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে সম্মুখযুদ্ধে অংশ নেয় নি এবং পরমাণু হামলাও করে নি। তবে বেশ কিছু দেশ ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা দেবে বলে ঘোষণা দিয়েছে। এই দেশগুলো হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ড, জার্মানি, কানাডা, সুইডেন, নরওয়ে, ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, বেলজিয়াম, পর্তুগাল, গ্রিস, রোমানিয়া, স্পেন, চেক রিপাবলিক এবং ক্রোয়েশিয়া।
ভাইরাল ভিডিওটির ২ মিনিট ৪৬ সেকেন্ডে বলা হয়েছে “ন্যাটোর তিন দেশ ইউক্রেনে যুদ্ধের সহযোগী হিসেবে ৭০ টি যুদ্ধবিমান পাঠাচ্ছে যা রাশিয়াকে কাঁপুনি ধরাচ্ছে। ন্যাটোভুক্ত তিনটি দেশ ইউক্রেনের জন্য ৭০ টি যুদ্ধ বিমান সরবরাহ করবে বলে জানিয়েছে কিয়েভের সেনাবাহিনী।“
১ মার্চ ২০২২ তারিখে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে রাশিয়ান সংবাদ সংস্থা তাশ ইউক্রেনীয় নৌবাহিনীর প্রেস সার্ভিস এর বরাতে বলছে, বুলগেরিয়া, পোল্যান্ড এবং স্লোভাকিয়া ইউক্রেনে ৭০ টি যুদ্ধবিমান স্থানান্তর করবে যা পোল্যান্ডের এয়ারফিল্ডে স্থাপন করা যেতে পারে।
তবে ইউক্রেনে যুদ্ধবিমান পাঠাবে না বলে নিশ্চিত করেছে ন্যাটো’র সদস্যভুক্ত উক্ত তিনটি দেশ।
বুলগেরিয়ার প্রধানমন্ত্রী কিরিল পেটকভ সোমবার বলেছেন যে, তার দেশের বিমানবাহিনীর নিজস্ব আকাশসীমা পাহারা দেওয়ার মতো পর্যাপ্ত বিমান নেই।
ন্যাটোর এক সংবাদ সম্মেলনের পর পোলিশ প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেজ ডুদা বলেছেন, “আমরা ইউক্রেনে কোনো জেট বিমান পাঠাচ্ছি না কারণ এটি ইউক্রেনের সংঘাতে সামরিক হস্তক্ষেপ হবে। আমরা সেই সংঘাতে জড়াচ্ছি না। ন্যাটো সেই সংঘাতের পক্ষ নয়।”
স্লোভাকিয়া জানিয়েছে তারা ইতিমধ্যে ইউক্রেনে জ্বালানি, গোলাবারুদ এবং অস্ত্র সহায়তা পাঠিয়েছে। মঙ্গলবার স্লোভাকিয়ান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র যুদ্ধবিমান পাঠানোর বিষয়টি অস্বীকার করে বলেছেন: “স্লোভাকিয়া ইউক্রেনকে যুদ্ধবিমান সরবরাহ করবে না”।
এছাড়াও, ভাইরাল ভিডিওটির থাম্বনেইলে উল্লেখিত “ন্যাটোর ৩০ দেশের পারমাণবিক হামলা” বিষয়টিও সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। রাশিয়ার ৭৫% সেনা নিহতের তথ্যটিও কোথাও পাওয়া যায় নি। সঙ্গত কারণেই ফ্যাক্টওয়াচ এটিকে “মিথ্যা” সাব্যস্ত করেছে।
আপনি কি এমন কোন খবর দেখেছেন যার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন? কোন বিভ্রান্তিকর ছবি/ভিডিও পেয়েছেন? নেটে ছড়িয়ে পড়া কোন গুজব কি চোখে পড়েছে?