সম্প্রতি বৈদ্যুতিক গোলযোগের কারণে আগুন লাগার একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। দাবি করা হচ্ছে, ভিডিওটি বঙ্গবাজারে কিভাবে আগুন লেগেছিলো তার ভিডিও। কিন্তু অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে, ভিডিওটি বঙ্গবাজার অগ্নিকাণ্ডের ভিডিও নয়। ১৬ ডিসেম্বর ২০২২ তারিখে এই ভিডিওটি টিকটকে আপলোড হতে দেখা যায়, কিন্তু বঙ্গবাজার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে ৪ এপ্রিল ২০২৩। অর্থাৎ, ভিডিওটি বঙ্গবাজারের ঘটনার নয়। আবার, বঙ্গবাজার অগ্নিকাণ্ডের কারণ যেহেতু এখনো তদন্তাধীন আছে, সেহেতু এটি দাবি করাও ঠিক নয় যে, বৈদ্যুতিক গোলযোগের কারণে সেখানে আগুন লেগেছিলো।
ভাইরাল এই ভিডিওর সাহায্যে অনুসন্ধান করা হলে, বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এই ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়।
এর মধ্যে ১৬ ডিসেম্বর ২০২২ এ টিকটকে এই ভিডিওটি প্রথম দেখতে পাওয়া যায়। তবে সেই ভিডিও থেকে তেমন কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায় নি। এরপর বিভিন্ন সময়ে ফেসবুকে এবং ইউটিউবেও এই ভিডিওটি দেখতে পাওয়া যায়।
রোমান ভাষায় ফেসবুকে ২০ ডিসেম্বর ২০২২ এ প্রকাশিত এই ভিডিওসহ আরেকটি পোস্টে বলা হচ্ছে, খারাপ ইলেকট্রনিক্স জিনিসপত্র ব্যবহার করলে এমন বিপদ অর্থাৎ আগুন লাগার আশঙ্কা থাকে। মূলত, ভিডিওতে একটি শর্ট সার্কিটের মাধ্যমে আগুন লেগে যাওয়ার পেছনে মানহীন ইলেকট্রনিক্স জিনিসকে দায়ী করা হচ্ছে।
তবে, মূল ভিডিওটির উৎস খুঁজে পাওয়া যায় নি।তবে নিশ্চিতভাবে যেটি জানা যাচ্ছে এটি আগে ধারণ করা একটি ভিডিও যার সাথে বঙ্গবাজার অগ্নিকাণ্ডের কোনো সম্পর্ক নেই।
উপরিউক্ত ভিডিওগুলোর সাথে বর্তমানে ভাইরাল ভিডিওটি তুলনা করলে দেখা যাচ্ছে, এগুলো একই ভিডিও।
বঙ্গবাজারে আগুন ঠিক কি কারণে লেগেছিলো তা সঠিকভাবে এখনো জানা যায় নি। এ বিষয়ে তদন্ত চলমান রয়েছে।
ভাইরাল এই ভিডিওর কমেন্টে মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কেউ বলছেন ভিডিওটি সাজানো, কেউ আবার দোষারোপ করছেন যে ভিডিওটি করেছেন তাকে। তাদের মতে, সেসময় ভিডিও না করে আগুন নেভানো উচিত ছিলো। এসব কমেন্ট থেকে বোঝা যাচ্ছে যে, অনেকেই ভিডিওটিকে বঙ্গবাজারের সেই অগ্নিকাণ্ডের সময়কার ভিডিও বলেই মেনে নিচ্ছেন।
ভাইরাল এই পোস্টে দুইটি অসংগতি লক্ষ্যণীয়। প্রথমত, আগুনের কারণ এখনো জানা যায় নি তাই কারণ হিসেবে বৈদ্যুতিক গোলোযোগ দাবি করা সঠিক নয়। দ্বিতীয়ত, ভিডিওটি যেহেতু বঙ্গবাজার অগ্নিকাণ্ডের বহু আগ থেকেই ইন্টারনেটে আছে, এটি কোনোভাবেই বঙ্গবাজারে আগুন লাগার ভিডিও হতে পারে না। তাই সার্বিক বিবেচনায়, ফ্যাক্টওয়াচ এমন ভিডিওসহ ফেসবুক পোস্টগুলোকে “বিভ্রান্তিকর” সাব্যস্ত করছে।
আপনি কি এমন কোন খবর দেখেছেন যার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন? কোন বিভ্রান্তিকর ছবি/ভিডিও পেয়েছেন? নেটে ছড়িয়ে পড়া কোন গুজব কি চোখে পড়েছে?