সম্প্রতি “সিলেটে ধনী-গরিব সবার ঘরেই এখন বন্যার পানি”- শিরোনামে একটি ভিডিওসামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। অনুসন্ধানে জানা যায়, ভিডিওটি ২০১৭ সালের রোহিঙ্গা সংকটের। ভয়েস অব আমেরিকা এবং ইউরো নিউজসহ আন্তর্জাতিক কয়েকটি গণমাধ্যমের কয়েকটি প্রতিবেদনে ভিডিওটি দেখতে পাওয়া যায়। তাই ফ্যাক্টওয়াচ দাবিটিকে মিথ্যা চিহ্নিত করছে।
ভিডিওতে অনেক মানুষকে ঘরের আসবাবপত্র, পরিবারের সদস্যদের নিয়ে পানি ভেঙে নিরাপদে সরে যেতে দেখা যাচ্ছে। ভিডিওর ক্যাপশনে দাবি করা হয়, এটি সিলেটের সাম্প্রতিক বন্যা পরিস্থিতি। সেখানে বলা হয়,“সিলেটে ধনী-গরিব সবার ঘরেই এখন বন্যার পানি। পার্থক্য হলো গরিবরা বড় অসহায়”।
ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধান
ভিডিও থেকে স্থিরচিত্র নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করা হলে, আফগানিস্তানের গণমাধ্যম Tolonewsএর একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। প্রতিবেদনে থাকা ছবি এবং ভিডিওর একটি দৃশ্য হুবুহু একই। “More than 4,000 Rohingya Muslims have been displaced” শিরোনামে প্রতিবেদনটি ০৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ এ প্রকাশিত হয়।
এখানে বলা হচ্ছে, আর কোনো রাস্তা না পেয়ে অনেকেই নাফ নদী দিয়ে বাংলাদেশ পৌঁছাচ্ছে। যাদের আছে তারা নৌকা দিয়ে পার হচ্ছে। কিন্তু অনেকেই কিছু না পেয়ে ঝুঁকি নিয়ে সাঁতরে নদী পার হচ্ছে।
এছাড়া,২৪ নভেম্বর ২০১৭ এ ভয়েস অব আমেরিকার হাউজা (VOA Hausa) প্রকাশিত একটি ফেসবুক পোস্ট পাওয়া যায়। রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে প্রকাশিত ১ মিনিটের এই ভিডিও প্রতিবেদনেও ভাইরাল ভিডিওর একটি ক্লিপ পাওয়া যায়।
অর্থাৎ, বর্তমানে ভাইরাল ভিডিওটি ২০১৭ সালের। রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়ার সময়ের ভিডিও এটি।
উল্লখ্য, সাম্প্রতিক বন্যায় সিলেটের ১৩ টি উপজেলার ৮৫ টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। তবে পানি কমতে শুরু করেছে। বন্যা পরিস্থিতির “অবনতি” না হওয়ার আভাস দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
সুতরাং, বিষয়টি পরিষ্কার যে, ভাইরাল ভিডিওটি সিলেটের বন্যার নয়। ২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়ার সময়কার ভিডিও এটি। তাই ফ্যাক্টওয়াচ এই ফেসবুক পোস্টগুলোকে মিথ্যা চিহ্নিত করছে।
আপনি কি এমন কোন খবর দেখেছেন যার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন? কোন বিভ্রান্তিকর ছবি/ভিডিও পেয়েছেন? নেটে ছড়িয়ে পড়া কোন গুজব কি চোখে পড়েছে?