তুর্কমেনিস্তানে গ্যাস, বিদ্যুৎ এবং পানি বিনামূল্যে প্রদান করা হয়- এমন একটি দাবি সম্প্রতি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ছে। অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে, তুর্কমেনিস্তান দীর্ঘ ২৫ বছর বিনামূল্যে গ্যাস, পানি ও বিদ্যুৎ প্রদান করার পর ২০১৮ সালে তা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়। ২০১৯ সাল থেকে দেশটি তার নাগরিকদের গ্যাস, পানি ও বিদ্যুৎ বিনামূল্যে প্রদান করছে না।
এই বিভ্রান্তিকর দাবি-সংবলিত কয়েকটি ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধান
তুর্কমেনিস্তানে আসলেই বিনামূল্যে এসব সুবিধা দেওয়া হচ্ছে কি না জানতে অনুসন্ধান করা হলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম এপির একটি প্রতিবেদন সামনে আসে। “Turkmenistan ends free utilities after a quarter century” শিরোনামে ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮ এ প্রকাশিত এই প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, তুর্কমেনিস্তানের প্রেসিডেন্ট বিনামূল্যে গ্যাস, বিদ্যুৎ এবং পানি সরবরাহ বন্ধের ঘোষণা দেন। দেশটি তার প্রাকৃতিক সম্পদের আরোও যৌক্তিক ব্যবহার এবং মুক্ত বাজার অর্থনীতির উন্নতির লক্ষ্যে প্রেসিডেন্ট “Gurbanguly Berdymukhamedov” ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ এ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যেটি ২০১৯ সাল থেকে কার্যকর হওয়ার কথা।
এমন সিদ্ধান্তের পর দেশটিতে গ্যাসের দাম কেমন হতে পারে এ নিয়ে আরএফই/আরএল একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেখানে বলা হচ্ছে, গ্রাহকদের গ্যাসের জন্য ৭৫ ডলার পর্যন্ত খরচ করতে হবে। এর আগে ১৯৯৩ সাল থেকে তুর্কমেনিস্তান সরকার গ্যাস, পানি এবং বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে ভর্তুকি দেওয়া শুরু করে। যার ফলে গ্রাহকরা একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ গ্যাস, পানি এবং বিদ্যুৎ বিনামূল্যে ব্যবহার করতে পেরেছিল। দীর্ঘ ২৫ বছর পর ২০১৯ সালের শুরু থেকে বিনামূল্যে এসব সুবিধা বন্ধ করে দেওয়া হয়।
সেখানকার বিদ্যুৎ, পানি এবং গ্যাসের দাম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ২০১৯ সালে প্রকাশিত আরেকটি প্রতিবেদন পড়ুন এখানে।
এছাড়া, বর্তমানে আবার এসব সুবিধা বিনামূল্যে দেয়ার কোনো তথ্য নির্ভরযোগ্য কোনো মাধ্যম থেকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
অতএব বিষয়টি পরিষ্কার যে, তুর্কমেনিস্তান ১৯৯৩ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত দেশটির নাগরিকদের জন্য গ্যাস, বিদ্যুৎ এবং পানি বিনামূল্যে প্রদান করেছে। কিন্তু ২০১৯ সালের শুরু থেকে বিনামূল্যে এসব সুবিধা দেওয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়। অর্থাৎ, দেশটিতে এখন আর বিনামূল্যে এসব সুবিধা দেওয়া হচ্ছে না। তাই ফ্যাক্টওয়াচের বিবেচনায় বর্তমানে “বিনামূল্যে গ্যাস, পানি ও বিদ্যুৎ প্রদান করা হচ্ছে” দাবিতে যে ফেসবুক পোস্টগুলো ভাইরাল হচ্ছে তা বিভ্রান্তিকর।
আপনি কি এমন কোন খবর দেখেছেন যার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন? কোন বিভ্রান্তিকর ছবি/ভিডিও পেয়েছেন? নেটে ছড়িয়ে পড়া কোন গুজব কি চোখে পড়েছে?