যা দাবি করা হচ্ছেঃ এটা ইসরায়েলের গ্যাস ফিল্ডে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড এবং বিস্ফোরণ ঘটার ভিডিও।
ফ্যাক্টওয়াচের সিদ্ধান্তঃ ক্যাপশনটি মিথ্যা। বাস্তবে এটা ২০১১ সালের ৩ অক্টোবর আমেরিকার টেক্সাসের ম্যাগনাব্লেন্ড ইনকর্পোরেটেড নামের একটি কেমিক্যাল কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ভিডিও, ইসরায়েলের কোনো গ্যাস ফিল্ডের নয়। তাছাড়া মূলধারার সংবাদমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য কোনো মাধ্যম থেকেও ইসরায়েলের কোনো গ্যাস ফিল্ডে অগ্নিকাণ্ড সংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। সঙ্গত কারণে ফ্যাক্টওয়াচ ভাইরাল হওয়া পোস্টগুলোকে বিভ্রান্তিকর হিসেবে সাব্যস্ত করেছ।
ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি ইসরায়েলের কোনো গ্যাস ফিল্ডের কি না এ ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়ার জন্য ভিডিওটির বিভিন্ন অংশ ব্যবহার করে রিভার্স ইমেজ অনুসন্ধান করা হয়। অনুসন্ধানে Lazar Otasevic নামের একটি ইউটিউব চ্যানেল থেকে ২০১১ সালের ৪ অক্টোবর আপলোড করা একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায় যার সাথে ভাইরাল ভিডিওটির মিল খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিওর ক্যাপশনে লেখা ছিল “টেক্সাস রাসায়নিক প্ল্যান্টে আগুন ৩ অক্টোবর, ২০১১।”
এই সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কিছু কী-ওয়ার্ড ধরে অনুসন্ধান করা হয়। অনুসন্ধানে CBS News এর অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে ২০১১ সালের ৩ অক্টোবর প্রকাশিত একই ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিওটি থেকে জানা যায়, ভয়াবহ এক অগ্নিকাণ্ডে টেক্সাসের ওয়াক্সহাচিতে একটি রাসায়নিক প্ল্যান্ট পুড়ে গিয়েছিল এবং, কালো ধোঁয়ার ফুলকিতে চারপাশ ছেয়ে গিয়েছিল। বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় আন্তর্যাতিক সংবাদমাধ্যম The Telegraph এবং Associated Press এর অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেলেও একই ঘটনার ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।
টেক্সাসের ওয়াক্সাহাচিতে অবস্থিত এই রাসায়নিক প্ল্যান্টের নাম হচ্ছে ম্যাগনাব্লেন্ড ইনকর্পোরেটেড। ওয়াক্সাহাচির তৎকালীন ফায়ার চিফ ডেভিড হাডগিন্সের মতে, ম্যাগনাবেলেন্ড ইনকর্পোরেটেড এর কর্মীরা যখন ৭০০০-গ্যালন ভ্যাটে রাসায়নিক মেশাচ্ছিলেন, তখনই আগুনের সূত্রপাত হয়।
অন্যদিকে, বিভিন্ন ভাবে ভিন্ন ভিন্ন কী-ওয়ার্ড ধরে অনসন্ধান করেও সম্প্রতি ইসরাইলের গ্যাস ফিল্ডে অগ্নিকাণ্ড এবং বিস্ফোরণের ঘটনা সংক্রান্ত কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাস কর্তৃক আক্রমণ শুরু হওয়ার দুই দিন পর স্থানীয় কর্মকর্তাদের নির্দেশে ইসরায়েলের উপকূলের তামার গ্যাস ক্ষেত্র বন্ধ করে দিয়েছিল। কিন্তু সেখানে বিস্ফোরণ বা অগ্নিকাণ্ড সম্পর্কিত নিশ্চিত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
সুতরাং, সবকিছু বিবেচনা করে ফ্যাক্টওয়াচ ভাইরাল হওয়া পোস্টগুলোর শিরোনামকে মিথ্যা সাব্যস্ত করেছ।
এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।। এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে। এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।