“হিরো আলম আমাদের অনুপ্রেরণা, সাহস। বিএনপি নির্বাচনে এলে হিরো আলমকে বিএনপি থেকে মনোনয়ন দেওয়া হবে।”- শিরোনামে প্রথম আলোর ফটোকার্ড সদৃশ একটি ফটোকার্ড ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। দাবি করা হচ্ছে, আশরাফুল আলম সাঈদ ওরফে হিরো আলমকে নিয়ে মির্জা ফখরুল এমন মন্তব্য করেছেন। কিন্তু অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে, ছবিটি বিকৃত। প্রথম আলো তাদের ভ্যারিফাইড ফেসবুক পেজ থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। তারা জানায় যে, ছড়িয়ে পড়া ছবিটি নকল এবং তার সেটি বানায় নি। এছাড়া, মির্জা ফখরুলের এমন কোনো মন্তব্য মূলধারার গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্য কোনো মাধ্যম থেকে খুঁজে পাওয়া যায় নি।
ভাইরাল এই ছবিতে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উদ্ধৃতিতে দাবি করা হচ্ছে, “হিরো আলম আমাদের অনুপ্রেরণা, সাহস। বিএনপি নির্বাচনে এলে হিরো আলমকে বিএনপি থেকে মনোনয়ন দেওয়া হবে।”। প্রথম আলো’র লোগো ব্যবহার করে ছবিতে ১৮ জুলাই, ২০২৩ তারিখটি উল্লেখ করা হয়।
ফ্যাক্টোওয়াচের অনুসন্ধান
ভাইরাল ছবিতে পাওয়া “প্রথম আলো” এর সূত্র ধরে অনুসন্ধান করা হলে, ১৮ জুলাই ২০২৩ এর একটি ফেসবুক পোস্ট পাওয়া যায়। প্রথম আলোর ভ্যারিফাইড ফেসবুক পেজ থেকে ভাইরাল ফটোকার্ডটিকে “মিথ্যা প্রচারণা” বলে জানানো হয়। সেখানে বলা হয় “প্রথম আলোর নামে ছড়ানো এই ছবিটি নকল, আমাদের তৈরি নয়। বিভ্রান্তি এড়াতে আমাদের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ ও অনলাইনের সঙ্গে থাকুন।”
অর্থ্যাৎ, ভাইরাল এই ফটোকার্ডটি প্রথম আলোর নয়। ছবিটি বিকৃত করে প্রথম আলো’র লোগোসহএকে ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে।
এর আগেও প্রথম আলোর পরিচয়ে এমন কিছু ফটোকার্ড ভাইরাল হয়েছিলো। সেগুলো নিয়ে ফ্যাক্টওয়াচের কয়েকটি প্রতিবেদন পড়ুন এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে।
পরবর্তীতে মির্জা ফখরুল এমন মন্তব্য করেছেন কি না অনুসন্ধান করা হলে, মূলধারার গণমাধ্যমে এমন কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায় নি।
সম্প্রতি হিরো আলমকে নিয়ে বিএনপি মহাসচিবের কোনো মন্তব্য রয়েছে কি না সেটি জানার চেষ্টা করা হলে, গত ১৮ জুলাই, ২০২৩ এ এটিএন বাংলা প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। জানা যায়, গত ১৭ জুলাই খুলনায় “তারুণ্যের সমাবেশে” মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর হিরো আলমের ওপর হামলার ঘটনা নিয়ে কথা বলেন। এই ঘটনায় আওয়ামীলীগকে রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া বলে দাবি করেন তিনি। কিন্তু সেখানে কোথাও হিরো আলমকে বিএনপি থেকে মনোনয়ন দেয়া নিয়ে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায় নি।
পরবর্তীতে খুলনার সেই সমাবেশে মির্জা ফখরুলের দেয়া সম্পূর্ণ বক্তব্যটি খোঁজা হলে, “বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি নোয়াখালী ৫” নামে একটি ফেসবুক পেজ থেকে সেটি পাওয়া যায়। ৩২ মিনিট দীর্ঘ ভাষণে কোথাও ভাইরাল এই মন্তব্যটি খুঁজে পাওয়া যায় নি।
এছাড়া বিএনপিসহ অন্য কোনো সূত্র থেকেও এই তথ্যটি খুঁজে পাওয়া যায় নি।
সুতরাং, পরিষ্কারভাবেই বুঝা যাচ্ছে ভাইরাল ফটোকার্ডটি বিকৃত এবং সেখানে থাকা দাবিটি ভিত্তিহীন। মূলধারার গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট কোনো সূত্র থেকেই উক্ত মন্তব্যটি খুঁজে পাওয়া যায় নি। তাই ফ্যাক্টওয়াচ মন্তব্যটিকে “মিথ্যা” হিসেবে চিহ্নিত করছে।
এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।। এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে। এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।