যা দাবি করা হচ্ছে: রংপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী চলমান কোটাবিরোধী আন্দোলনে চোখে গুলি লেগে নিহত হয়েছেন।
অনুসন্ধানে যা পাওয়া যাচ্ছে : মিফতাহুল জান্নাত মিতা নামের এই শিক্ষার্থী চোখের পাশে ছররা গুলি (রাবার বুলেট) লেগে আহত হয়েছেন, তবে তাঁর মারা যাওয়ার খবরটি গুজব।
এই খবরের উৎস হিসেবে কেউ কেউ রংপুরভিত্তিক DRB News (Digital Rangpur Broadcast) এর কথা বলছেন। কথা DRB News এর ফেসবুক পেজে এমন কোনো খবর পাওয়া যায় নি। বরং ১৬ই জুলাই রাত ৯টা ১২ মিনিটে প্রকাশিত এক পোস্টে তারা জানিয়েছে, সঠিক তথ্য জানুন, গুজব ছড়াবেন না।
কোটা আন্দোলনে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আবু সাঈদ নামে একজন শিক্ষার্থী নিহত, আহত যে এক নারী শিক্ষার্থীর মৃত্যুর খবর ফেসবুকে ছড়িয়েছে সেটা মিথ্যা।
এদিকে, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়,রংপুর এর ফ্যান পেজ BRUR Campus এর ফেসবুক পেজে রাত ৮টা ৯ মিনিটে একটি সংক্ষিপ্ত ভিডিও প্রকাশ করা হয়। ভিডিওর ক্যাপশন ছিল- আপডেট : আলহামদুলিল্লাহ আপুটি মারা যায়নি। তার থেকেই শুনুন কি হয়েছিলো তখন।
এই ভিডিওতে মাথায় এবং চোখের নিচে ব্যান্ডেজ বাঁধা এক তরুনীকে বলতে শোনা যায়, আমার নাম মিফতাহুল জান্নাত মিতা। সম্প্রতি বেরোবিতে কোটাবিরোধী আন্দোলনে সবাই আমার মৃত্যুর একটি ভুয়া সংবাদ প্রচার করছেন। প্রথমেই বলতে চাই ওই সংবাদটা সম্পূর্ণরূপে ভুয়া। আমি বর্তমানে ঠিক আছি। আমি ছিলাম, আন্দোলনে ছিলাম আমি। সামনের সারিতেই ছিলাম বলা যায়। যখন আমরা বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নাম্বার গেটে অবস্থান করছিলাম, তখন পুলিশ আচমকাই আমাদের উপর রাবার বুলেট নিক্ষেপ শুরু করে। তো সেই গুলিতে আমার দুইটা রাবার গুলি লাগে, এবং আমার চোখের উপরে এবং নিচে লাগে। (হাত দিয়ে আহত স্থান দেখিয়ে) কিন্তু আমি আপাতত ঠিক আছি। ——
বিডিনিউজটুয়েন্টিফোর ডট কম এর এই খবরে জানানো হয়েছে, পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী শিক্ষার্থীরা দুপুর ১টার দিকে রংপুর জেলা স্কুল মোড়ে থেকে মিছিল নিয়ে বের হয়। লালবাগ খামার মোড়ে শিক্ষার্থীদের আরেকটি মিছিল তাদের সঙ্গে যোগ দেয়।
ওই মিছিল নিয়ে তারা রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নম্বর ফটকের সামনে যান। তারা ক্যাম্পাসে প্রবেশের চেষ্টা করলে পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ বাধে। শিক্ষার্থীদের ঢিলের জবাবে পুলিশ রাবার বুলেট ছোড়ে।
একই রকম ঘটনার বিবরণ পাওয়া যাচ্ছে প্রথম আলো সহ অন্যান্য সংবাদমাধ্যমে।
এই প্রতিবেদনে পুলিশের সাথে সংঘর্ষে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বাদশ ব্যাচের আবু সাইদ এর নিহতের খবর জানানো হলেও, মিতা বা অন্য কোনো নারীর মৃত্যুর খবর জানানো হয়নি।
সার্বিক বিবেচনায় ফ্যাক্টওয়াচ মিতা নামের এই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর দাবিকে মিথ্যা সাব্যস্ত করছে।
এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।। এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে। এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।