সম্প্রতি “মুসলিম মেয়েরা শিক্ষাঙ্গণে হিজাব পরে প্রবেশ করতে পারবে এমন রায় দিয়েছে কর্নাটকের হাইকোর্ট” শিরোনামে একটি খবর ভারতীয় গণমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসকে তথ্যসূত্র উল্লেখ করে সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। অনুসন্ধানে জানা যায়, এমন কোনো রায় কর্ণাটকের হাইকোর্ট দেয়নি। বরং চলমান মামলাটিকে প্রধান বিচারপতির কাছে স্থানান্তর করা হয়েছে। ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভির একটি প্রতিবেদন বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। অন্যদিকে হিন্দুস্তান টাইমস-এ উক্ত ভাইরাল দাবিসহ কোনো খবর খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাই ফ্যাক্টওয়াচ এমন একটি দাবিকে মিথ্যা সাব্যস্ত করছে।
উক্ত ফেসবুক পোস্টগুলোতে ঐতিহাসিক রায় হিসেবে চিহ্নিত করে দাবি করা হচ্ছে, এখন থেকে হিজাব পরে শিক্ষাঙ্গণে প্রবেশ করতে পারবে মুসলিম মেয়েরা। সেখানে তথ্যসূত্র হিসেবে হিন্দুস্তান টাইমসের নাম উল্লেখ করা হয়।
ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধান
ভাইরাল দাবিটিতে উল্লেখিত কি-ওয়ার্ডের মাধ্যমে গুগল সার্চ করা হলে, ভারতীয় গণমাধ্যমের বেশ কিছু প্রতিবেদন সামনে আসে। গত বুধবার প্রকাশিত ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভির সর্বশেষ একটি প্রতিবেদনে জানানো হয়, সম্প্রতি ভারতে আলোচিত ছাত্রীদের হিজাব পরার বিষয়টি প্রধান বিচারপতির কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। “Enormity Of Questions”: Karnataka Hijab Row Sent To Chief Justice” শিরোনামে প্রকাশিত এই প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের উদুপি জেলার সরকারি কলেজের কয়েকজন মুসলিম মেয়েরা ক্লাসরুমে হিজাবের উপর নিষেধাজ্ঞার বিপরীতে মামলাটি করেন।
পরবর্তীতে এই বিষয়টি কর্ণাটক হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি ঋতুরাজ আওয়াস্তির নেতৃত্বে বৃহত্তর একটি বেঞ্চে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলার শুনানিতে বিচারক বলেন, “These matters give rise to certain constitutional questions of seminal importance in view of certain aspects of personal law”।
বিচারক কৃষ্ণ এস দিক্সিত আরোও বলেন, “In view of the enormity of questions of importance which were debated, the court is of the considered opinion that the Chief Justice should decide if a larger bench can be constituted in the subject matter”।
অর্থাৎ, উক্ত মামলাটির রায় এখনো হয়নি বরং বৃহত্তর বেঞ্চে বিষয়টি হস্তান্তর করা হয়েছে।
এছাড়া হিন্দুস্তান টাইমসে কোথাও হিজাবের পক্ষে হাইকোর্ট রায় দিয়েছে এমন খবর খুঁজে পাওয়া যায়নি।
বর্তমানে চলমান এই হিজাব বিতর্ক নিয়ে বিস্তারিত দেখুন প্রথম আলোর এই ভিডিও প্রতিবেদনে।
সুতরাং, পরিষ্কারভাবেই বুঝা যাচ্ছে উপরোক্ত রায়ের খবরটি ভিত্তিহীন। ভারতীয় গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে জানা যায়, উক্ত মামলাটি এখনো প্রক্রিয়াধীন এবং এটি প্রধানবিচারপতির নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। তাই ফ্যাক্টওয়াচ এই খবরসংবলিত ফেসবুক পোস্টগুলোকে ‘মিথ্যা’ চিহ্নিত করছে।
আপনি কি এমন কোন খবর দেখেছেন যার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন? কোন বিভ্রান্তিকর ছবি/ভিডিও পেয়েছেন? নেটে ছড়িয়ে পড়া কোন গুজব কি চোখে পড়েছে?