হিন্দু এনজিও কর্মীর আত্মহত্যার ঘটনাকে সাম্প্রদায়িক হত্যাকাণ্ড হিসেবে প্রচার

72
হিন্দু এনজিও কর্মীর আত্মহত্যার ঘটনাকে সাম্প্রদায়িক হত্যাকাণ্ড হিসেবে প্রচার
হিন্দু এনজিও কর্মীর আত্মহত্যার ঘটনাকে সাম্প্রদায়িক হত্যাকাণ্ড হিসেবে প্রচার

সম্প্রতি ফেসবুকে একজন হিন্দু ধর্মাবলম্বী নারীর ছবি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে চট্টগ্রামের শুক্লা দে নামক এই নারী এনজিওকর্মীকে সাম্প্রদায়িক কারণে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে জানা যাচ্ছে, এখানে কোনো সাম্প্রদায়িক হত্যার ঘটনা ঘটেনি, শুক্লা দে তার কর্মস্থলের অতিরিক্ত মানসিক চাপে আত্মহত্যা করেন। নিহতের স্বামী যে মামলাটি করেছেন সেখানে ধর্ষণ কিংবা সাম্প্রদায়িকতার কথা বলা হয়নি, তিনি আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির চার কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন।

গুজবের উৎস

৬ জানুয়ারি থেকে ফেসবুকে পোস্টটি শেয়ার করা হচ্ছে। কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে

ফ্যাক্টওয়াচ অনুসন্ধান 

পোস্টে সংযুক্ত নারীর ছবিটি নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে একাধিক দেশীয় সংবাদমাধ্যমে (ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভি, যমুনা টিভি, দৈনিক ইনকিলাব) হুবহু একই ছবিযুক্ত প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, হিন্দু ধর্মাবলম্বী এই নারীর নাম শুক্লা দে টিকলি। শুক্লা রুপসা সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন সমবায় সমিতি লিমিটেড নামক একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ফিল্ড অফিসার হিসেবে কাজ করতেন। প্রতিষ্ঠানটি স্থানীয়ভাবে ক্ষুদ্রঋণ প্রদান করে। ৫ আগস্টের পর থেকে কিস্তি আদায়ে ধীরগতি দেখা দেয়, যার কারণে কানুনগোপাড়া শাখার ম্যানেজার কাঞ্চন দেবনাথ শুক্লার ওপর কিস্তি আদায়ের জন্য চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন। গত নভেম্বরে শুক্লার মাসিক বেতন থেকে অনাদায়ী কিস্তির টাকা কেটে নেওয়া হয়। অতিরিক্ত মানসিক চাপ ও অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে শুক্লা আত্মহত্যা করেন। নিহতের স্বামী আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির চার কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন।

এ থেকে নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে, শুক্লা দে নামক এনজিও কর্মীর আত্মহত্যার ঘটনাকে সাম্প্রদায়িক হত্যাকান্ড দাবিতে ফেসবুকে মিথ্যা প্রচারণা চালানো হচ্ছে। তাই ফ্যাক্টওয়াচ এ পোস্টকে মিথ্যা সাব্যস্ত করছে।

Claim:
সম্প্রতি ফেসবুকে একজন হিন্দু ধর্মাবলম্বী নারীর ছবি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে চট্টগ্রামের শুক্লা দে নামক এই নারী এনজিওকর্মীকে সাম্প্রদায়িক কারণে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে।

Claimed By:
Facebook users

Rating:
False

এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে। এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে

এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।

কোনো তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকে
ইমেইল করুনঃ contact@fact-watch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh