ফাতিমা (রাঃ) এর বাড়ি দাবিতে তুরস্কের একটি বাড়ির ছবি প্রচার

12
ফাতিমা (রাঃ) এর বাড়ি দাবিতে তুরস্কের একটি বাড়ির ছবি প্রচার ফাতিমা (রাঃ) এর বাড়ি দাবিতে তুরস্কের একটি বাড়ির ছবি প্রচার

Published on: [post_published]

সম্প্রতি একটি বাড়ির ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হতে দেখা যাচ্ছে। দাবি করা হচ্ছে এটি হযরত ফাতিমা (রাঃ) এর বাড়ি। কিন্তু, ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে দেখা গেছে এটি তুরস্কের সানলিউরফা প্রদেশের হাররান জেলায় অবস্থিত একটি বাড়ির ছবি। সাধারণত এই ধরণের বাড়িগুলো সৌদি আরবে নয় বরং তুরস্কে ও সিরিয়ায় দেখা যায়। অন্যদিকে, তুরস্কে ফাতিমা (রাঃ) এর কোনো বাড়ি ছিল কি না এ সংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। এই ধরণের একাধিক বাড়ি তুরস্কের সানলিউরফা প্রদেশের বিভিন্ন স্থানে দেখতে পাওয়া গেলেও মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বা তার মেয়ে ফাতিমা (রাঃ) এর সাথে এর কোনো সংশ্লিষ্টতা খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাই ফ্যাক্টওয়াচ এই দাবিকে মিথ্যা হিসেবে সাব্যস্ত করছে।

ফেসবুকে ভাইরাল এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে

ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধান:

ভাইরাল হওয়া ছবিটির মাধ্যমে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে আদিল হাফিজা নামের একটি টুইটার আকাউন্টে ফেসবুকে শেয়ার হওয়া ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। ক্যাপশনে লেখা ছিল “Harran evleri”। বাংলায় অনুবাদ করলে এর অর্থ দাঁড়ায় হাররানের বাড়ি। হাররান হচ্ছে  তুরস্কের সানলিউরফা প্রদেশের একটি শহর। এছাড়াও আনাতোলিয়া কালচারাল ট্রাভেল নামের একটি ট্রাভেল এজেন্সির ওয়েবসাইটেও এই একই ছবি পাওয়া যায় যেখানে বলা হয়েছে বাড়িটি হাররান শহরে অবস্থিত। এবং বাড়িগুলো মৌচাক ঘর (beehive house) নামে পরিচিত।

অর্থাৎ, দেখা যাচ্ছে যে, ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া ছবিটি তুরস্কের হাররান জেলায় অবস্থিত একটি একাধিক গম্বুজ বিশিষ্ট একটি বাড়ির অংশ। সম্পুর্ণ  বাড়ির ছবি থেকে কিছু অংশ কেটে এটিকে ফাতিমা (রাঃ) এর বাড়ি দাবি করা হচ্ছে ।

পরবর্তীতে হাররান শহরে অবস্থিত এই বাড়িগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জানতে প্রাসঙ্গিক কিছু কি-ওয়ার্ড ধরে অনুসন্ধান করা হয়। অনুসন্ধানে TRT World এর অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে ২০১৭ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর প্রচারিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, কাদা, খড় এবং ইট দিয়ে বাড়িগুলো বানানো হয়েছিল। এছাড়াও এই ভিডিওর মাধ্যমে প্রাচীন এই বাড়িগুলো সম্পর্কে একটি বিস্তারিত বর্ণনা পাওয়া যায়। বাড়িগুলোর গম্বুজের উপরের অংশগুলো উন্মুক্ত, যার ফলে ঘরের ভিতরে সূর্যের আলো সহজেই প্রবেশ করতে পারে, বায়ু চলাচল করতে পারে এবং ভিতর থেকে ধোঁয়া সহজেই বেরিয়ে যেতে পারে।

অন্যদিকে, বিভিন্ন ভাবে ভিন্ন ভিন্ন কি-ওয়ার্ড ধরে অনুসন্ধান করেও  সৌদি আরবে এ ধরণের বাড়ির অস্তিত্ব পাওয়া যায় নি । তবে, মাটির তৈরি একাধিক গম্বুজ বিশিষ্ট  বাড়ি তুরস্ক ছাড়াও সিরিয়ার হামায় অবস্থিত সারৌজ গ্রামে দেখতে পাওয়া যায়। কিন্তু সেই বাড়িগুলো দেখতে কিছুটা আলাদা।

অতএব, সবকিছু বিবেচনা করে ভিত্তিহীন এই দাবিটিকে ফ্যাক্টওয়াচ “মিথ্যা” হিসেবে সাব্যস্ত করছে।

আপনি কি এমন কোন খবর দেখেছেন যার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন?
কোন বিভ্রান্তিকর ছবি/ভিডিও পেয়েছেন?
নেটে ছড়িয়ে পড়া কোন গুজব কি চোখে পড়েছে?

এসবের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকে জানান।
আমাদেরকে ইমেইল করুনঃ contact@factwatch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh

No Factcheck schema data available.