গত ১৫ জুলাই, ২০২৪ এ কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনের এক পর্যায়ে তাদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এরই প্রেক্ষিতে একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে ইব্রাহীম নীরব (Ibrahim Nirob) নামে এক ব্যক্তির মারা যাওয়ার কথা জানানো হয়। তবে অনুসন্ধানে জানা যাচ্ছে, ইব্রাহীম নীরব মারা যায় নি। তিনি সামাজিক মাধ্যমে নিজে একটি ভিডিওবার্তার মাধ্যমে এটি নিশ্চিত করেছেন।
মৃত্যুর গুজব সংক্রান্ত কয়টি ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধান:
ভাইরাল ভিডিওটি পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, ভিডিওতে একজন ব্যক্তি আহত হয়ে শুয়ে আছেন এবং “ছাত্রলীগের হামলার” নিন্দা জানাচ্ছেন। তিনি এক পর্যায়ে বলেন, তার শরীরের বাম পাশ অবশ হয়ে আছে এবং নড়াচড়া করতে পারছেন না। ভিডিওতে কোথাও তার মৃত্যু সংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায় নি। কিন্তু ক্যাপশনে বলা হচ্ছে “কোটার প্রথম শহীদ। ঢাবিয়ান! ইন্নানিল্লাহী ওয়া ইন্নাইলাহী রাজিউন।”
পরবর্তীতে, ভিডিওতে থাকা ব্যক্তির পরিচয় অনুসন্ধান করে জানা যায় তার নাম ইব্রাহীম নীরব। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এর সহ-সমন্বয়ক। তার ফেসবুক আইডি পর্যালোচনা করে দেখা যায় ভাইরাল এই ভিডিওটি মূলত তার প্রোফাইল থেকেই নেয়া হয়েছে। নীলয় বাদশাহ নামের একজন যাকে তিনি ছোট ভাই হিসেবে দাবি করছেন, তিনি ১৫ জুলাই, ২০২৪ সন্ধ্যায় ভিডিওটি তার আইডি থেকে পোস্ট করেছিলেন। ক্যাপশনে বলা হচ্ছে, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের নারকীয় সন্ত্রাসী হামলায় আহত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এর সহ-সমন্বয়ক ইব্রাহীম নিরব; শিক্ষার্থীদের জন্য মেডিকেল থেকে বার্তা।
পোস্ট: Niloy Badshah (ছোটভাই)”
পরিষ্কার বুঝা যাচ্ছে, তার এই পোস্টের ক্যাপশন বদলে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে। অথচ, মূল পোস্টে এমন কিছুই ছিলো না।
পরবর্তীতে, তার এই ফেসবুক আইডিটি লক্ষ্য করলে সেখানে আরেকটি ভিডিও পাওয়া যায়। উল্লেখিত ভিডিওটি আপলোডের তিন ঘন্টার মধ্যেই এই ভিডিওটি আপলোড করা হয়। জানা যায় তার মৃত্যুর দাবিটি গুজব। এই ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন “আর আমার নামে যে গুজব ছড়িয়েছে যে, ‘ঢাবি শিক্ষার্থী ইব্রাহীম নিরব মারা গেছে।” আসলে আমি মারা যাইনি বা এখনো পর্যন্ত কেউ মারা যায়নি, আমি নিউজ পাইনি।”
তবে তিনি এটিও বলেন যে, তার শারীরিক অবস্থা এখনো জটিল, বাম পা এবং বাম হাত মচকে গিয়ে শরীরের বামপাশ পুরো অবশ হয়ে আছে।
অর্থ্যাৎ, ইব্রাহীম নীরব আহত হয়েছেন বিষয়টি সত্য, কিন্তু তার মৃত্যুর খবরটি গুজব। তাই ফ্যাক্টওয়াচ দাবিটিকে মিথ্যা চিহ্নিত করছে।
এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।। এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে। এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।