ইরানের সেনা ফিলিস্তিনের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়েছে — এমন ক্যাপশনযুক্ত একটি ভিডিও অনলাইনে ছড়িয়ে পড়েছে। উক্ত ভিডিওতে একটি সুসজ্জিত বাহিনীকে কুচকাওয়াজ করতে দেখা যায়। তবে এই ভিডিওতে ইরানের কোনো পতাকা, বা ইরান সম্পর্কিত কোনো প্রমাণ দেখা যায়নি। এছাড়া ইমেজ সার্চের মাধ্যমে দেখা যাচ্ছে, এটি আসলে ফিলিস্তিনের ‘প্যালেস্টাইন ইসলামিক জিহাদ’ নামক সংগঠনটির সামরিক মহড়ার ভিডিও, যা গত ৪ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এছাড়া, ইরান সরকার ফিলিস্তিনকে সমর্থন করলেও ইরান থেকে সেনাবাহিনী পাঠানোর কোনো খবর আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে পাওয়া যাচ্ছে না। তাই ফ্যাক্টওয়াচ এই দাবিগুলোকে ‘মিথ্যা’ সাব্যস্ত করছে।
২ মিনিট ১৭ সেকেন্ড দৈর্ঘ্যের এই ভিডিও’র অডিও থেকে কোনো তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না। ফুটেজের কয়েক জায়গায় ফিলিস্তিন এর পতাকা দেখা গেলেও ইরানের কোনো পতাকা দেখা যায়নি।
রিভার্স ইমেজ সার্চের সাহায্যে দেখা যাচ্ছে,২ মিনিট ১৭ সেকেন্ড এর মূল ভিডিওটি চায়না সিনহুয়া নিউজ এর ভেরিফাইড পেজ থেকে তারিখে আপলোড করা হয়েছিল। এই ভিডিওর সাথে ইন্দোনেশয়ান ভাষায় একটি দীর্ঘ ক্যাপশন যুক্ত করা হয়, যেখানে বলা হয়, এটি ফিলিস্তিনি ইসলামী জিহাদ ( পি আই জে) বাহিনি কর্তৃক আয়োজিত গত ৪ঠা অক্টোবর এর সামরিক মহড়ার দৃশ্য। ১৯৮৭ সালে প্রতিষ্ঠিত এই সংগঠনটি ৪ঠা অক্টোবর তাদের ৩৬ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করে । এদিন পি আই জি’র সশস্ত্র উইং, আল কুদস ব্রিগেড, বিপুল সমরাস্ত্র সহ গাজার প্রধান সড়কে প্যারেড করে।
ইন্দোনেশীয় ভাষার আরো কিছু ওয়েবসাইট এবং ইউটিউব চ্যানেলে একই ভিডিও কাছাকাছি সময়েই আপলোড করা হয়েছিল। যেমন দেখুন এখানে , এখানে ।
এছাড়া, প্যারেডে দেখানো কয়েকটি যানবাহনের বিভিন্ন স্থানে আরবী হরফে سرايا القدس القوة الصاروخية (সারায়া আল কুদস- আল কুউওয়াতুস সারুখিয়্যাহ) কথাটি দেখা যায়, যার অর্থ “আল কুদস ব্রিগেড মিসাইল বাহিনি”।
অর্থাৎ এটা নিশ্চিত যে এটা ইরান, অথবা ফিলিস্তিনের বাইরের কোনো দৃশ্য নয়, বরং এটা গাজা এলাকারই দৃশ্য । এখানে ইরানের কোনো বাহিনীকে দেখা যাচ্ছে না বরং ফিলিস্তিনের ইসলামী জিহাদ নামক বাহিনিকে দেখা যাচ্ছে।
আজতক, এবং বুমবিডি থেকে ইতিমধ্যে এই দাবি খণ্ডন করা হয়েছে। এসম্পর্কিত ফ্যাক্টচেক রিপোর্ট দেখুন এখানে, এখানে।
এছাড়া, ইরান ফিলিস্তিনে যুদ্ধ করার জন্য কোনো বাহিনী পাঠাচ্ছে- এমন কোনো প্রকাশ্য ঘোষণা পাওয়া যায়নি।
সার্বিক বিবেচনায় ‘ইরানের সেনা ফিলিস্তিনের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে’- এমন দাবিযুক্ত পোস্টগুলোকে ফ্যাক্টওয়াচ ‘মিথ্যা’ সাব্যস্ত করছে।
এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।। এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে। এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।