গাছের আগায় নিহত প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির পাগড়ির ছবি? 

108
গাছের আগায় নিহত প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির পাগড়ির ছবি? 
গাছের আগায় নিহত প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির পাগড়ির ছবি? 

Published on: [post_published]

যা দাবি করা হচ্ছেঃ এটা হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে নিহত হওয়া ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির পাগড়ি গাছের মাথায় আটকে থাকার ছবি।

অনুসন্ধানে যা পাওয়া যাচ্ছেঃ ছবিটি বিকৃত। ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া রেডউড গাছের ছবিটি বেশ কয়েক বছর ধরেই বিভিন্ন ওয়েবসাইটে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে। যেগুলোর মধ্য থেকে পুরোনো একটি ছবি ব্যবহার করে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে গাছের মাথায় একটি পাগড়ির ছবি জুড়ে দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে, ‘হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায়  নিহত ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির পাগড়ি গাছের মাথায় আটকে ছিল’ এই দাবিটির সমর্থনে নির্ভরযোগ্য কোনো মাধ্যম থেকে প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া এমন কিছু পোষ্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে

 

ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানঃ 

ইব্রাহিম রাইসি ১৯ মে ২০২৪-এ ইরান এবং আজারবাইজানের সীমান্তবর্তী এলাকায় আরাস নদীর উপর দুই দেশের যৌথভাবে নির্মিত জলবিদ্যুৎ প্রকল্প, কিজ কালাসি এবং খোদা আফারিন বাঁধ উদ্বোধন করতে গিয়েছিলেন। সেখানে আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভও ছিলেন। বাঁধ উদ্বোধন শেষে হেলিকপ্টারে করে রাইসি ইরানের পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের রাজধানী তাবরিজে যাচ্ছিলেন। হেলিকপ্টারটি যখন পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের জোলফা অঞ্চলের পাহাড়ি এলাকা দিয়ে উড়ে যাচ্ছিল তখন এর সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পরবর্তিতে, এই প্রদেশের উজি গ্রামের কাছে পাহাড়ি জঙ্গলে হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়। এর ফলে হেলিকপ্টারে থাকা ইব্রাহিম রাইসি, ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেন আমির-আব্দুল্লাহিয়ান এবং আরও কয়েকজন কর্মকর্তা নিহত হন।

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ফেসবুকে একটি ছবি ছড়িয়ে পড়তে দেখা যাচ্ছে। সেখানে দাবি করা হচ্ছে যে, ছবিটি একটি গাছের মাথায় ইব্রাহিম রাইসির পাগড়ি আটকে থাকার দৃশ্য। তাই এ ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়ার জন্য ছবিটি ব্যবহার করে রিভার্স ইমেজ অনুসন্ধান করা হয়। অনুসন্ধানে পরিবেশ সচেতনতামূলক একটি ওয়েবসাইট Treehugger এ ৫ নভেম্বর ২০১৯-এ প্রকাশিত একটি নিবন্ধে ভাইরাল ছবিটির পূর্ব সংস্করণের একটি ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। সেখানে গাছগুলোর নাম রেডউড বলে উল্লেখ করা হয়। কিন্তু এই রেডউড গাছের মাথায় রাইসির পাগড়ির মত দেখতে কোনো কিছুই খুঁজে পাওয়া যায়নি।

পরবর্তিতে, উইকিমিডিয়া কমন্স-এ ভাইরাল ছবিটির পূর্ব সংস্করণের ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। সেখানেও রাইসির পাগড়ির ছবি দেখা যায়নি। তবে সেখানে এই ছবির বর্ণনায় উল্লেখ করা হয় যে, ছবিটি ৯ মার্চ ২০১০ এ ধারণ করা হয়েছিল।

অর্থাৎ, মূল ছবিটি রাইসির মৃত্যুর অনেক বছর আগের।

অন্যদিকে, নির্ভরযোগ্য মাধ্যম থেকে এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় নি যার মাধ্যমে এটা নিশ্চিত হওয়া যায় যে, নিহত হওয়ার পরে ইব্রাহিম রাইসির পাগড়ি কোনো রেডউড গাছের মাথায় আটকে  ছিল।

সুতরাং ফ্যাক্টওয়াচের বিবেচনায় ভাইরাল ছবিগুলো বিকৃত।

এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।।
এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে
এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।

কোনো তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকেঃ
ইমেইল করুনঃ contact@factwatch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh

No Factcheck schema data available.