সম্প্রতি ফেসবুকে একটি মিছিলের ভিডিও ছড়িয়ে পড়তে দেখা যাচ্ছে। দাবি করা হচ্ছে এই ভিডিওতে ‘ইসকন জবাই কর’ বলে কোনো স্লোগান দেওয়া হয়েছে। কিন্তু, ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে যে, ভিডিওটি ছিল গত ১০ নভেম্বর ২০২৪ এ অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের বিচারের দাবিতে চট্টগ্রামে স্বৈরাচার বিরোধী মিছিলের সময়কার। সেখানে ‘লীগ ধর, জবাই কর’ স্লোগান দেওয়া হয়েছিল, ‘ইসকন জবাই কর’ নয়। সুতরাং, ফ্যাক্টওয়াচের বিবেচনায় ভাইরাল পোষ্টগুলো মিথ্যা।
ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটি খেয়াল করলে সেখানে ‘লীগ ধর জবাই কর’ এমন স্লোগান শোনা যাবে। কিন্তু “ইসকন” কথাটির উল্লেখ কোথাও পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে এই মিছিলটি সম্পর্কে আরও নিশ্চিত হওয়ার জন্য ভিডিওর বিভিন্ন অংশ ব্যবহার করে রিভার্স ইমেজ অনুসন্ধান করা হয়। অনুসন্ধানে দেশ রূপান্তরের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি ছবির সাথে ভিডিওটির কিছু ফ্রেমের মিল খুঁজে পাওয়া যায়।
প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ আওয়ামী লীগের বিচারের দাবিতে ১০ নভেম্বর ২০২৪ এ চট্টগ্রামে গণ জমায়েত ও বিক্ষোভ করেছিল। চট্টগ্রাম শহরের চকবাজার প্যারেড কর্নারে এই গণজমায়েত অনুষ্ঠিত হয়। গণজমায়েত শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল শহরের জামালখান, ডিসি হিল, বৌদ্ধ মন্দির হয়ে নিউমার্কেট মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।
এই সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কিছু কি-ওয়ার্ড ধরে অনুসন্ধান করে যমুনা টিভির অফিশিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে ১০ নভেম্বর ২০২৪ এ প্রকাশিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়। সেখানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চট্টগ্রামের একজন সমন্বয়ক তালাত মাহমুদ রাফিকে দেখতে পাওয়া যায় এবং ‘লীগ ধর, জবাই কর’ স্লোগান স্পষ্ট শুনতে পাওয়া যায়। এই ভিডিওটির ভিন্ন অ্যাঙ্গেল থেকে ধারণ করা হয়েছে বলে এর সাথে ভাইরাল ভিডিওটির হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে, দুই ভিডিওতেই তালাত মাহমুদ রাফির রিকশায় চড়ে স্লোগান দেওয়া, তার পোশাক, আশেপাশের স্থাপনা এবং মানুষজনের সাথে সাদৃশ্য খুঁজে পাওয়া যায়। এর মাধ্যমে এতটুকু হওয়া যায় যে, ভিডিও দুটি একই বিক্ষোভ মিছিলের।
এখন টিভির অফিশিয়াল ওয়েবসাইটেও এই একই ঘটনার ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। সেখানেও ‘ইসকন জবাই কর’ বলে কোনো স্লোগান শুনতে পাওয়া যায়নি।
পাশাপাশি, সময় টিভি এবং ঢাকা ট্রিবিউন চট্টগ্রামের এই বিক্ষোভ মিছিল সম্পর্কিত প্রতিবেদন প্রকাশ করে। কিন্তু কোথাও ‘ইসকন জবাই কর’ স্লোগানের উল্লেখ পাওয়া যায়নি।
সুতরাং, সবকিছু বিবেচনা করে ফ্যাক্টওয়াচ ভাইরাল পোষ্টগুলোকে মিথ্যা হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের
নীতি মেনে লেখা হয়েছে। এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে।
এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।
কোনো তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকে ইমেইল করুনঃ contact@fact-watch.org অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh