ইসকন থেকে প্রকাশিত বইকে নতুন পাঠ্যপুস্তক দাবি

28
ইসকন থেকে প্রকাশিত বইকে নতুন পাঠ্যপুস্তক দাবি ইসকন থেকে প্রকাশিত বইকে নতুন পাঠ্যপুস্তক দাবি

Published on: [post_published]

নতুন বছরের জন্য  প্রস্তুত করা পাঠ্যপুস্তক দাবিতে কয়েকটি বইয়ের পৃষ্ঠার ছবি অনলাইনে ভাইরাল হয়েছে। এসকল পৃষ্ঠায় সনাতন ধর্মের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ বিভিন্ন শব্দ, বাক্য এবং ছবি দেখা যাচ্ছে । অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে, এটা বাংলাদেশের কোনো ক্লাসের আবশ্যিক পাঠ্যপুস্তক নয়, বরং এটি আন্তর্জাতিক কৃষ্ণ ভাবনামৃত সংঘ (ইসকন) থেকে প্রকাশিত একটি শিশুতোষ ধর্মীয় বই।

গুজবের উৎস

১লা জানুয়ারি ২০২৩ সালের নতুন পাঠ্যপুস্তক বিতরণের পর থেকেই পাঠ্যপুস্তক সংক্রান্ত বেশ কিছু গুজব ভাইরাল হয়েছে। তারই পটভূমিতে এই শিশুতোষ বইয়ের কয়েকটি পৃষ্ঠাকে নতুন বছরের বই দাবি করে কিছু পোস্ট ভাইরাল হয়েছে। এমন কয়েকটা পোস্ট দেখুন এখানে , এখানে , এখানে , এখানে , এখানে , এখানে , এখানে , এখানে , এখানে , এখানে , এখানে , এখানে , এখানে , এখানে , এখানে , এখানে , এখানে , এখানে

ফ্যাক্টওয়াচ অনুসন্ধান

ছড়িয়ে পড়া ছবিগুলো রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে দেখা গেল, এই ছবিগুলো অতীতে আন্তর্জাতিক কৃষ্ণ ভাবনামৃত সংঘ (ইসকন) এর সাথে সম্পর্কিত ফেসবুক পেজ থেকে আপলোড করা হয়েছিল । যেমন দেখুন এখানে , এখানে


এ সকল পোস্ট থেকে জানা যাচ্ছে, এই বইটির নাম ‘গুরুকুল শিশুপাঠ’ যা নার্সারী ও ক্লাস ওয়ান এর শিশুদের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে।

ইউটিউবে এই বইটার একটা রিভিউতে বইয়ের বিভিন্ন পৃষ্ঠার ছবি পাওয়া যাচ্ছে, যার সাথে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ছবিগুলোর সাদৃশ্য পাওয়া যাচ্ছে।

kripambudhi Krishna Das নামক এই ইউটিউব চ্যানেল এর ভিডিওটা থেকে বইটা সম্পর্কে আরো বেশ কিছু তথ্য জানা যাচ্ছে। বক্তার বক্তব্য এবং বইয়ের কিছু পৃষ্ঠার তথ্য থেকে জানা যাচ্ছে, এই বইটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল ২০১৬ সালে। বইটা বিপণন করা হচ্ছে কুরিয়ারে এবং যেকোন ইস্কন মন্দিরে জাগ্রত ছাত্র সমাজ বিভাগে ।

বইটা প্রকাশ করেছে জাগ্রত ছাত্র সমাজ (বিশ্ববিদ্যালয় প্রচার বিভাগ) যাদের ঠিকানা হিসেবে ৭৯, স্বামীবাগ আশ্রম, স্বামীবাগ রোড,ঢাকা -ঠিকানাটি ব্যবহার করা হয়েছে। এই ঠিকানায় স্বামীবাগ ইস্কন মন্দির অবস্থিত।

 

Jagrata Chatra Samaj – Iskcon Dhaka নামক ফেসবুক পেজ থেকেও এই ‘গুরুকুল শিশুপাঠ’ বইয়ের প্রচার করতে দেখা গিয়েছে।

ফেসবুকের ভাইরাল পোস্টে নিশ্চিত করে বলা হয়নি যে, আলোচ্য ছবিগুলো কোন শ্রেণির বই। তবে এখানে যেহেতু বর্ণপরিচয় দেখা যাচ্ছে, তাই ১ম শ্রেণী বা সমপর্যায়ের ক্লাসেই এই বিষয়গুলো থাকার কথা।

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের ওয়েবসাইটে প্রাক প্রাথমিক স্তর এবং প্রথম শ্রেণীর বইয়ে স্বরবর্ণ পরিচিতি অংশটা দেখা যাচ্ছে। তবে এখানে কোনো পৃষ্ঠার সাথে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ছবিগুলোর কোনো মিল পাওয়া যাচ্ছে না।

 

প্রাক- প্রাথমিক স্তর এর বইয়ে বর্ণশিক্ষা

প্রথম শ্রেণীর বইয়ে বর্ণশিক্ষা

 

সার্বিক বিবেচনায় ফ্যাক্টওয়াচ ভুল দাবিতে ছড়িয়ে পড়া এ সকল পোস্টকে ‘মিথ্যা’ সাব্যস্ত করছে।

এছাড়া, বেশ কিছু পোস্টে এই ছবির ক্যাপশনে বিভিন্ন শ্রেণীর পাঠ্যপুস্তক থেকে নির্দিষ্ট কয়েকটি প্রবন্ধ বাদ দেওয়ার অভিযোগ করা হয়েছে, যে তালিকাটি সঠিক নয়। এ বিষয়ে পড়তে পারেন ফ্যাক্টওয়াচের পুরনো এই প্রতিবেদন-  পাঠ্যবইয়ের বিতর্কিত গল্প-কবিতার তালিকাটি ৬ বছরের পুরনো

আপনি কি এমন কোন খবর দেখেছেন যার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন?
কোন বিভ্রান্তিকর ছবি/ভিডিও পেয়েছেন?
নেটে ছড়িয়ে পড়া কোন গুজব কি চোখে পড়েছে?

এসবের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকে জানান।
আমাদেরকে ইমেইল করুনঃ contact@factwatch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh

No Factcheck schema data available.