“মারা গেলেন জিহ্বা কাটা ইসলামি বক্তা শরিফুল ইসলাম” — এমন শিরোনামে একটি তথ্য ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে দেখা যায়, দাবিটির পক্ষে নির্ভরযোগ্য কোনো প্রমাণ নেই এবং শিরোনামের সাথে বিস্তারিত তথ্যেরও কোনো মিল নেই। অন্যদিকে, মূলধারার সংবাদমাধ্যমগুলো থেকেও ইসলামি বক্তা শরিফুল ইসলামের মারা যাওয়া সংক্রান্ত কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাছাড়া, পোস্টে যে ছবিটি ব্যবহার করা হয়েছে সেটা সাম্প্রতিক সময়ের কোনো ছবি নয়। এ কারণে ফ্যাক্টওয়াচ ভাইরাল হওয়া তথ্যটিকে “মিথ্যা” হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
গত ৪ মার্চ ২০২৩ বিজয়নগর উপজেলার দৌলতবাড়ি দরবার শরীফের মাহফিলে মাওলানা শরীফুল ইসলাম ভূইয়া বক্তব্য দিচ্ছিলেন। মাহফিল থেকে মোটরসাইকেলে করে বাড়ি ফেরার পথে শরীফুলের উপর এলোপাতাড়িভাবে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়। ফলে, তার মুখে আঘাত লাগে এবং জিহ্বা কেটে যায়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শরিফুলের চাচা বাদী হয়ে আখাউড়া থানায় মামলা দায়ের করেন। অতঃপর গত ৭ মার্চ চট্টগ্রাম ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে মামলায় অভিযুক্ত আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সংক্রান্ত কিছু প্রতিবেদন দেখুন এখানে এবং এখানে।
শরিফুল ইসলামকে হামলাকারীদের থেকে উদ্ধার করার পরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়। সেখানেই তিনি চিকিৎসা নেন। কিন্তু সেখানে তিনি মারা গেছেন কি না এ ব্যাপারে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। মারা গেলে নিশ্চিতভাবেই মূলধারার সংবাদপত্রে বিষয়টি প্রতিবেদন আকারে আসতো।
অন্যদিকে, ভাইরাল হওয়া পোস্টে ব্যবহৃত ছবিটির মাধ্যমে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে জানা যায়, এটি ইসলামি বক্তা শরিফুল ইসলামের কোনো ছবি না। ২০২০ সালের ৫ মার্চ বিভিন্ন ফেসবুক আইডি থেকে ছবিটি প্রথম শেয়ার করা হয়েছিল এবং বলা হয়েছিল মৃত দেহটি মুফতি গিয়াস উদ্দিন আত-তাহেরীর বাবার। অর্থাৎ, ছবিটি সাম্প্রতিক সময়ের কোনো ছবি নয়। পোস্ট গুলো দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
এছাড়া, কিছু ভুঁইফোড় অনলাইন পোর্টালে “পুরো দেশ কাঁদিয়ে মারা গেলেন জিহ্বা কাটা বক্তা শরিফুল ইসলাম, কেঁদে কেঁদে যা বললেন মিজানুর রহমান” শীর্ষক একটি শিরোনাম ব্যবহার করে অপ্রাসঙ্গিক তথ্য লাগিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হচ্ছে। বিস্তারিত অংশে বাংলা নিউজ টোয়েন্টিফোরের ওয়েবসাইটে গত ৮ মার্চ প্রকাশিত ইসলামি বক্তা শরিফুল ইসলামের জিহ্বা কেটে নেওয়ার মামলায় চার জনকে গ্রেফতার করা সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদনের কিছু অংশ কপি করে বসিয়ে দেয়া হয়েছে। কিন্তু, সেখানে মিজানুর রহমান আজহারীর কোনো বক্তব্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।
সঙ্গত কারণে ফ্যাক্টওয়াচ ভাইরাল হওয়া তথ্যটিকে “মিথ্যা” হিসেবে সাব্যস্ত করেছে।
আপনি কি এমন কোন খবর দেখেছেন যার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন? কোন বিভ্রান্তিকর ছবি/ভিডিও পেয়েছেন? নেটে ছড়িয়ে পড়া কোন গুজব কি চোখে পড়েছে?