যুক্তরাষ্ট্রের ২০১১ সালের অগ্নিকান্ডের ঘটনাকে ২০২১-এ ‘ইসরায়েলের গ্যাস ফিল্ডে আগুন’ বলে প্রচার 

9
যুক্তরাষ্ট্রের ২০১১ সালের অগ্নিকান্ডের ঘটনাকে ২০২১-এ ‘ইসরায়েলের গ্যাস ফিল্ডে আগুন’ বলে প্রচার  যুক্তরাষ্ট্রের ২০১১ সালের অগ্নিকান্ডের ঘটনাকে ২০২১-এ ‘ইসরায়েলের গ্যাস ফিল্ডে আগুন’ বলে প্রচার 

Published on: [post_published]

২২ মে, ২০২১ তারিখে “ইসরায়েলের গ্যাস ফিল্ডে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড, আল্লাহর গজব!” শিরোনামে একটি ভিডিও ফেইসবুকে বিভিন্ন একাউন্ট এবং গ্রুপে  শেয়ার করা হয়েছে। দেশী এবং বিদেশী কিছু সংবাদ মাধ্যমে ১৭ মে ২০২১-এ হাইফা উপকুলের কাছে ভূমধ্যসাগরে একটি গ্যাস প্ল্যাটফর্মে  অগ্নিকান্ডের খবর পাওয়া গেছে, কিন্তু  এই ঘটনার ভিডিও এবং ছবির সাথে প্রচারিত ভিডিওটির কোন মিল নেই। প্রকৃতপক্ষে এটি ২০১১ সালের ৩ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস রাজ্যের ডালাস  শহরের একটি রাসায়নিক কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার ভিডিওচিত্র। 

“ইসরায়েলের গ্যাস ফিল্ডে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড, আল্লাহর গজব!” শিরোনামে একটি  ভিডিও ফেইসবুকে বিভিন্ন একাউন্ট এবং গ্রুপে  শেয়ার করা হয়েছে ২২ মে, ২০২১ তারিখে থেকে।  

ভিডিওটি শেয়ার হয়েছে এমন আরও কিছু ফেসবুক পোস্টের লিংক দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানেএর মধ্যে  একটি ভিডিওতেই  ২৫ হাজার লাইক/লাভ , ১৪ হাজার শেয়ার এবং ৭৩৭ টি কমেন্ট। 

ফ্যাক্ট ওয়াচের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, সাম্প্রতিক সময়ে ১৭ মে-তে ইসরায়েলের হাইফার কাছে ভূমধ্যসাগরের মধ্যে একটি গ্যাস প্ল্যাটফর্মে আগুন দেখা গেলে তা টুইটারে এলাকার  নাগরিকরা তার ছবি পোস্ট করেন।  রুশ বার্তা সংস্থা স্পুটনিক এ নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে।  

বাংলাদেশের বিভিন্ন সংবাদ সংস্থা স্পুটনিকের বরাত দিয়ে “ইসরায়েলের হাইফা শহরের গ্যাস ফিল্ডে বড় ধরনের অগ্নিকাণ্ড” শিরোনামে  এই খবরটি প্রকাশ করে,  দেখুন:  বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম, ইনকিলাব এবং সময়নিউজ.টিভি


আরটিভি  তাদের চারটি ভেরিফাইড ফেইসবুক পেইজ থেকে এই খবর টি শেয়ার করে লিখেছে “সেখানে কোনো রকেট আঘাত হেনেছে কি না তা এখনো পরিষ্কার নয়।” দেখুন:Rtv News । সংবাদ , Rtv News Live Update, Rtv International এবং Rtv


স্পুটনিকের প্রতিবেদনে তারা ইসরাইলের হাইফা নিউজের একটি লিংক দেয়, যেখানে বলা হয়েছে এটি কোন অস্বাভাবিক ঘটনা ছিল না, আগুনের উৎস ছিল যান্ত্রিক গোলযোগ। গ্যাস প্ল্যাটফর্মের দায়িত্বে থাকা  আন্তর্জাতিক জ্বালানি কোম্পানি শেভরন জানিয়েছে  এটি কোন বিপদজনক ঘটনা নয়। এই অগ্নিকান্ডে কোন ক্ষয়ক্ষতি বা হতাহতের খবর-ও নেই। 

দেখুন অগ্নিকান্ডের ছবি, যার সাথে ফেইসবুকে শেয়ার হওয়া ভাইরাল ভিডিও-র কোন মিল নেই। ভাইরাল  ভিডিওটির অগ্নিকান্ড সমুদ্রের  বুকে ঘটে নি।   

ছবি: টেক্সাস রাজ্যের ডালাস শহরে ঘটা অগ্নিকান্ড  ইসরায়েলের বলে চালিয়ে দেওয়া ভাইরাল ভিডিও 


ছবি: ইসরায়েলের হাইফা শহরে গ্যাস ক্ষেত্রের অগ্নিকান্ডের ছবি


এর আগে হাইফার বাজান তেল সংশোধনাগারে এপ্রিল ৩০, ২০২১-এ আরেকটি অগ্নিকান্ড ঘটেছিল, দেখুন  জেরুজালেম পোস্টের প্রতিবেদনে। ইসরায়েলের পরিবেশ সুরক্ষা মন্ত্রনালয়ের বরাতে এই প্রত্বেদনে যে ছবি এবং ভিডিও দেখা যাচ্ছে, তার সাথেও ভাইরাল ভিডিও টির সাদৃশ্য নেই। 

ভাইরাল ভিডিওটি  টেক্সাসে ২০১১ সালে ঘটা অগ্নিকান্ডের 

এদিকে ইউটিউবে ‘Texas chemical plant fire October 3, 2011’ শিরোনামে পাওয়া গেছে একই ভিডিও যা প্রকাশ হয়েছিল ৪ অক্টোবর ২০১১ তারিখে।  রয়টার্সের “Hundreds evacuated after Texas chemical plant fire” শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, ৩ অক্টোবর ২০১১ তারিখে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস রাজ্যের ডালাস  শহরের দক্ষিণে একটি রাসায়নিক প্লান্টে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। সাথে সাথে শত শত বাসিন্দাকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেন দমকলকর্মীরা।  


একই বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল সিএনএন। 

দেখা যাচ্ছে,  ইসরায়েলের একটি  তেল শোধনাগার ও সমুদ্রের বুকে একটি গ্যাস প্ল্যাটফর্মে দুইটি সাম্প্রতিক অগ্নিকান্ডের খবর জানা গেলেও,  ফেইসবুকে প্রচারিত ভিডিও  গুলিতে প্রায় দশ বছর আগের টেক্সাস রাজ্যের ডালাস শহরে ঘটা অগ্নিকান্ড  ইসরায়েলের বলে চালিয়ে দেওয়া হচ্ছে। 

 

আপনি কি এমন কোন খবর দেখেছেন যার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন?
কোন বিভ্রান্তিকর ছবি/ভিডিও পেয়েছেন?
নেটে ছড়িয়ে পড়া কোন গুজব কি চোখে পড়েছে?

এসবের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকে জানান।
আমাদেরকে ইমেইল করুনঃ contact@www.fact-watch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ fb.com/search.ulab

 

No Factcheck schema data available.