বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতিকে কেন্দ্র করে কাপ্তাই হ্রদের পানি অতিরিক্ত হয়ে যাওয়ার কারণে কাপ্তাই বাঁধের সবগুলো জলকপাট খুলে পানি ছেড়ে দেয়া হবে–এমন একটি তথ্য ফেসবুকে শেয়ার করা হচ্ছে। কিন্তু অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে যে, এই পানি ছাড়ার তথ্যটি ভিত্তিহীন। কাপ্তাই বাঁধের সবগুলো জলকপাট খুলে দেয়ার জন্য সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে যতটুকু উচ্চতায় পানি জমা হওয়া প্রয়োজন তা এখনও হয়নি। আর যদি পানি ছাড়া হয়, তাহলে সরকারি বিভিন্ন সংস্থা এবং গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জনসাধারণকে জানানো হবে বলে নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। সুতরাং, ফ্যাক্টওয়াচের বিবেচনায় ভাইরাল পোস্টগুলো মিথ্যা।
কর্ণফুলী নদীতে বাঁধ দিয়ে কর্ণফুলী জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র বা কাপ্তাই বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছিল। বাঁধ দিয়ে পানি সংরক্ষণ করার জন্য যে কৃত্রিম জলাধার তৈরি হয়েছিল সেটিই হচ্ছে কাপ্তাই হ্রদ।
ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া দাবি অনুযায়ী কাপ্তাই হ্রদের পানি ধারণ ক্ষমতার বাইরে চলে যাওয়ার কারণে কাপ্তাই বাঁধের সবগুলো জলকপাট খুলে পানি ছেড়ে দেয়া হচ্ছে কি না এ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার জন্য বিভিন্ন কি-ওয়ার্ড ধরে অনুসন্ধান করা হয়। এর মাধ্যমে জানা যায়, কাপ্তাই হ্রদের পানি ছাড়ার ব্যাপারে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। কাপ্তাই হ্রদে ১০৯ মিনস সি লেভেল (এমএসএল) পানি ধারণ করার সক্ষমতা রয়েছে। অর্থাৎ, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১০৯ মিটার উচ্চতা পর্যন্ত পানি জমা হয়ে গেলে কাপ্তাই বাঁধের সবগুলো জলকপাট খুলে পানি ছাড়া হবে। আপাতত হ্রদে পানি আছে ১০৪ এমএসএল। এর মানে দাঁড়ায়, এখনও এই হ্রদের পানি ধারণক্ষমতার মধ্যেই রয়েছে। অন্যদিকে, পানি ছাড়ার মতো অবস্থা হলে ছয় ঘণ্টা আগেই বিভিন্ন সংস্থা এবং গণমাধ্যমে বিবৃতি দেয়া হবে। কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক এটিএম আব্দুজ্জাহের এবং কাপ্তাই হ্রদ ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোশারফ হোসেন খান এ ব্যাপারে নিশ্চিত করেছেন।
দেখা যাচ্ছে যে, ‘কাপ্তাই বাঁধের সবগুলো জলকপাট খুলে দেয়া হবে’ – এই দাবিটির সমর্থনে নির্ভরযোগ্য কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তাই ফ্যাক্টওয়াচ ভাইরাল হওয়া পোস্টগুলোকে মিথ্যা হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।। এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে। এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।