ছাত্র-শিক্ষকের অন্তরঙ্গ ফটোশুটের ঘটনাটি ভারতের

10
ছাত্র-শিক্ষকের অন্তরঙ্গ ফটোশুটের ঘটনাটি ভারতের ছাত্র-শিক্ষকের অন্তরঙ্গ ফটোশুটের ঘটনাটি ভারতের

Published on: [post_published]

যা দাবি করা হচ্ছেঃশিক্ষা সফরে গিয়ে ছাত্রের সঙ্গে অন্তরঙ্গ ফটোশুট শিক্ষিকার’ শিরোনামে তৈরি করা ডিবিসি নিউজ, ঢাকা পোস্ট, দেশ রূপান্তর এবং বায়ান্ন টিভির ফটোকার্ড ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। কিছু সংখ্যক ফেসবুক ব্যবহারকারী তাদের পোস্টের ক্যাপশনে উক্ত ঘটনাকে বাংলাদেশের বলে দাবি করছে  এবং কখনো কখনো উক্ত ঘটনাটির মাধ্যমে বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থার সমালোচনা করা হচ্ছে।

ফ্যাক্টওয়াচের সিদ্ধান্তঃ অনুসন্ধানে জানা গেছে ১০ম শ্রেণীর ছাত্রের সঙ্গে শিক্ষিকার অন্তরঙ্গ ফটোশুটের ঘটনাটি ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের চিক্কাবল্লাপুর জেলার চিন্তামণি মহকুমার মুরুগামাল্লার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের। এই ঘটনার জন্য উক্ত শিক্ষিকাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। ফটোকার্ডের ক্যাপশনে জায়গার নাম উল্লেখ না-থাকায় সামাজিকমাধ্যম ব্যবহারকারীদের একাংশ এটিকে বাংলাদেশের ঘটনা ধরে নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন এবং শেয়ার করেছেন। সংগত কারণে ফ্যাক্টওয়াচ এ ধরনের পোস্টগুলোকে বিভ্রান্তিকর সাব্যস্ত করছে।

গুজবের উৎস:

ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানেএখানেএখানে, এখানে, এখানে, এখানে

 

ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানঃ

 ‘শিক্ষা সফরে গিয়ে ছাত্রের সঙ্গে অন্তরঙ্গ ফটোশুট শিক্ষিকার’ শিরোনামে তৈরি বিভিন্ন নিউজ চ্যানেলের (যেমন ঢাকা পোস্ট, ডিবিসি নিউজ, দেশ রূপান্তর, বায়ান্ন টিভি) ফটোকার্ড  ভিন্ন ভিন্ন ক্যাপশনে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। তবে ছড়িয়ে পড়া কিছু সংখ্যক ফেসবুক পোস্টে এই ঘটনাকে বাংলাদেশের ঘটনা বলে দাবি করা হচ্ছে।

যেমন SB Shahid  তার পোস্টের ক্যাপশনে লিখেছেন ‘শিক্ষা সফরে গিয়ে ছাত্রের সঙ্গে ম্যডামের অন্তরঙ্গ ফটোশুট শিক্ষিকার…! এইটা কি বাংলাদেশ নাকি অন্য  কিছু আপনারাই বলুন তো..?’

আবার MD Alauddin তার পোস্টের ক্যাপশনে লিখেছেন ‘শিক্ষা সফরে গিয়ে শিক্ষিকার সঙ্গে ছাত্রের অন্তরঙ্গ ফটোশুট, এইটা হলো বাংলাদেশ।’

কোন কোন ক্ষেত্রে ফেসবুকে ফটোকার্ডটি শেয়ার করে ক্যাপশনে বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার সমালোচনা করা হচ্ছে।

যেমন Pianaki Bhattacharya পিনাকী ভট্টাচার্য গ্রুপে Sohana Islam Roja ক্যাপশনে লিখেছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির সমালোচনা করে লিখেছেনখেলা ধংস করলো পাপন আর শিক্ষা ধংস করলো দিপু মনি আর দেশ ধংস করলো আপা মনি😓🥹’

MD HR Badsah Badsah তার পোস্টের ক্যাপশনে লিখেছেন ‘চিন্তা করা যায় শিক্ষার কত উন্নতি হয়েছে 😠😠 ঘেন্না লাগে এই দেশের সব নোংরা ব্যবস্থা ছিঃ 😠

ফটোকার্ডের শিরোনামটি গুগল কিওয়ার্ড সার্চ দিলে ঢাকা পোস্টের ২৯ ডিসেম্বর, ২০২৩ তারিখের একটা প্রতিবেদন পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে থেকে জানা যাচ্ছে ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য কর্ণাটকে একজন শিক্ষিকা এবং তার এক ছাত্রের ঘনিষ্ঠ ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। শিক্ষা সফরের সময় ছাত্রের সঙ্গে ওই অন্তরঙ্গ ‘ফটোশুট’ করেন শিক্ষিকা। ওই শিক্ষিকা কর্নাটকের চিক্কাবল্লাপুর জেলার চিন্তামণি মহকুমার মুরুগামাল্লার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে কর্মরত রয়েছেন।

বায়ান্ন টিভি এবং দেশ রূপান্তরের ওয়েবসাইট থেকেও জানা যাচ্ছে ঘটনাটি ভারতের।

উক্ত ঘটনাটি ভারতীয় গণমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে এবং এনডিটিভির ২৯ ডিসেম্বর, ২০২৩ তারিখে প্রকাশিত প্রতিবেদনেও পাওয়া যাচ্ছে। এসব প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে উক্ত দশম শ্রেণীর ছাত্রের পিতামাতা ব্লক এডুকেশন অফিসার (বিইও) এর কাছে অভিযোগ দায়ের করে ঘটনাটি তদন্তের আবেদন করেছে।

২৯ ডিসেম্বর, ২০২৩ তারিখেই প্রকাশিত এনডিটিভির আরেকটি প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে অভিযোগ পাওয়ার পর বিইও অফিসার ভি উমাদেবী তদন্ত চালিয়ে উক্ত শিক্ষিকাকে বরখাস্ত করেন।

অর্থাৎ,অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে ছাত্রের সঙ্গে শিক্ষিকার অন্তরঙ্গ ফটোশুটের ঘটনাটি বাংলাদেশের নয়। ঘটনাটি ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য কর্ণাটকের। একারণে ফ্যাক্টওয়াচ বাংলাদেশের ঘটনা বলে দাবি করা  ফেসবুকের পোস্টগুলোকে “বিভ্রান্তিকর” হিসেবে চিহ্নিত করছে।

এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।।
এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে
এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।

কোনো তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকেঃ
ইমেইল করুনঃ contact@factwatch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh

No Factcheck schema data available.