সম্প্রতি “ভেবে দেখেছেন কি?” শিরোনামে সুগন্ধা নদীতে পুড়ে যাওয়া লঞ্চের ছবির প্রেক্ষিতে পোড়া টাকার একটি ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। এই একই ছবি এর আগেও বিভিন্ন সময় ভাইরাল হয়েছিলো। গত ২১ অক্টোবর ২০২১ তারিখে ফ্যাক্টওয়াচ এই একই ছবি নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিলো। অর্থাৎ এই ছবিটি সম্প্রতি পুড়ে যাওয়া লঞ্চের সাথে সম্পৃক্ত নয়। যদিও পোস্টে প্রচারিত লঞ্চের ছবিটি সত্য, কিন্তু পোড়া টাকার ছবিটি এই ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট না হওয়ায় ফ্যাক্টওয়াচ দাবিটিকে “মিথ্যা” সাব্যস্ত করছে।
ভাইরাল এই পোস্টে দুইটি ছবি দেখতে পাওয়া যায়। একটিতে পুড়ে যাওয়া একটি লঞ্চের ছবি এবং অন্যটিতে পুড়ে যাওয়া টাকার ছবি। দাবি করা হচ্ছে, চারদিকে এত পানি থাকার পরেও লঞ্চের ভিতরে থাকা এই টাকাগুলোকে রক্ষা করা গেলো না। যে টাকার জন্য এতকিছু সেই টাকাগুলোই পুড়ে ছাই হয়ে গেলো।
ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধান
প্রথমেই, পুড়ে যাওয়া লঞ্চের ছবির সাহায্যে গুগল রিভার্স ইমেজ সার্চ করা হলে বার্তা সংস্থা রয়টার্স প্রকাশিত ২৪ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখের একটি প্রতিবেদন সামনে আসে। “Bangladesh launch fire kills 38 people” শিরোনামের এই প্রতিবেদনে পুড়ে যাওয়া এই লঞ্চের ছবিটি পাওয়া যায়।
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ছবিটি গত ২৪ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখের। সম্প্রতি বাংলাদেশের ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে পুড়ে যাওয়া একটি লঞ্চের ছবি এটি।উক্ত ঘটনায় প্রায় ৩৮ জন মানুষের প্রাণহানি ঘটে।
ভাইরাল ওই পোস্টে থাকা দ্বিতীয় ছবির সাহায্যে একইভাবে গুগল রিভার্স ইমেজ সার্চ করা হলে, ফ্যাক্ট-ওয়াচ প্রকাশিত ২১ অক্টোবর ২০২১ তারিখের একটি ফ্যাক্ট-চেকিং প্রতিবেদন পাওয়া যায়। “আগুনে পুড়ে যাওয়া টাকার ছবিটি রংপুরের পীরগঞ্জের নয়” শিরোনামে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে দেখানো হয়, কিভাবে এই একই ছবি এর আগে ভিন্ন একটি দাবিতে প্রকাশিত হয়েছিলো।
ছবিটির মূল উৎস জানা না গেলেও উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ছবিটি কমপক্ষে ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২১ তারিখের। একটি ফেসবুক গ্রুপে উক্ত ছবিটি দেখতে পাওয়া যায়।
অর্থাৎ, সম্প্রতি ভাইরাল এই পোস্টে থাকা দ্বিতীয় ছবিটির সাথে প্রথম ছবির কোনো মিল নেই। পুড়ে যাওয়া টাকার ছবির সাথে পুড়ে যাওয়া লঞ্চের কোনো সম্পর্ক নেই। এর ফলে সাধারণ ব্যবহারকারীদের মধ্যে এক ধরনের বিভ্রান্তির সৃষ্টি হতে পারে।
অতএব, এই বিষয়টি নিশ্চিতভাবেই বলা যায় দ্বিতীয় ছবিটি ভুল প্রেক্ষাপটে শেয়ার করা হচ্ছে। ছবিটি পুরনো এবং এর সাথে সম্প্রতি পুড়ে যাওয়া লঞ্চের কোনো সম্পর্ক নেই। তাই ফ্যাক্টওয়াচ ছবিসহ পোস্টটিকে “মিথ্যা” চিহ্নিত করছে।
আপনি কি এমন কোন খবর দেখেছেন যার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন? কোন বিভ্রান্তিকর ছবি/ভিডিও পেয়েছেন? নেটে ছড়িয়ে পড়া কোন গুজব কি চোখে পড়েছে?