লকডাউনে সেনাবাহিনীর লাঠিচার্জ করার ভিডিওটি বিভ্রান্তিকর

10
লকডাউনে সেনাবাহিনীর লাঠিচার্জ করার ভিডিওটি বিভ্রান্তিকর লকডাউনে সেনাবাহিনীর লাঠিচার্জ করার ভিডিওটি বিভ্রান্তিকর

Published on: [post_published]

“কঠোর” লকডাউনের প্রথম দিনেই একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমগুলোতে ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, কঠোর লকডাউনের প্রথম দিনে অর্থাৎ ১ জুলাই, ২০২১ তারিখে বিধিনিষেধ অমান্য করার কারণে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কিছু পথচারীকে শাস্তি দিচ্ছে। ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে দেখা যায় যে, এই ভিডিওটি পুরনো। ইউটিউবে এই ভিডিওটি চলতি বছরের ১৮ এপ্রিল আপলোড করা হয়। তবে সেটি সে সময়কার লকডাউন অমান্য করার কারণেই ঘটেছিল, এমনটা ভিডিওর বিবরণ থেকে জানা যায়। ফ্যাক্টওয়াচের বিবেচনায়, “কঠোর” লকডাউনের পয়লা দিনে সেনাবাহিনীর লাঠিচার্জ করার পুরনো ভিডিও গণ-অসন্তোষ ও বিভ্রান্তি ছড়াতে পারে। আর তাতে করে লকডাউনের মূল উদ্দেশ্য ব্যাহত হতে পারে।

উৎস

“Light Travel” – নামের একটি ফেসবুক পেজ পহেলা জুলাই- “লকডাউনে বন্ধুরা মিলে একটু বের হয়েছিল। চলুন লকডাউন দেখে আসি” এমন শিরোনামে একটি ভিডিও আপলোড করে। একই ভিডিওটি “ViRal to ViRal” এবং “বাংলার কলকাতা নিউজ।”- নামের দুই বা ততোধিক ফেসবুক পেজ এর বরাত দিয়ে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এছাড়াও ব্যক্তিগত আরোও অনেকগুলো অ্যাকাউন্ট থেকেও এই একই ভিডিও ফেসবুকে প্রকাশ করা হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে “Teto Molla” নামের একজন ফেসবুক ব্যবহারকারীর পোস্টটি।  “লকডাউনে দুরত্ব বজায় রেখে সেনাবাহিনীর লাঠিচার্জ” – এই শিরোনামের ওই ভিডিওটি চারশো’র অধিক মানুষ দেখে থাকে এবং এগারোজন শেয়ার করে। এর বাইরে ইউটিউবেও ভিডিওটি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে।

ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া কিছু ভিডিও দেখতে পাবেন  এখানে, এখানে, এখানে, এখানে  এবং এখানে

 

 

 

 

 

 

 

 

 

মানুষের বিভ্রান্ত হওয়ার কিছু নমুনা

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ভিডিওর বিষয়বস্তু

এক মিনিটেরও কম দৈর্ঘ্যের ভিডিওটিতে দেখা যায়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কিছু সদস্য কতিপয় মানুষকে একটি ব্রিজের উপরে গড়াগড়ি করাচ্ছে। মাঝে মাঝে লাঠিপেটাও করা হচ্ছে। কয়েকজনকে কানে ধরিয়েও শাস্তি দেওয়া হচ্ছে।

 

ফ্যাক্টওয়াচের রায়

চলমান কঠোর লকডাউনের প্রেক্ষিতে নতুন করে শেয়ার করার কারণে ফ্যাক্টওয়াচ এই ভিডিওকে “বিভ্রান্তিকর” বিবেচনা করছে।

চলতি বছরের এপ্রিল মাসের ১৮ এবং ১৯ তারিখে এই একই ভিডিও ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপ/পেজ এবং ইউটিউবে দেখতে পাওয়া যায়। “Sabbir Hossen” নামের একটি ইউটিউব চ্যানেল থেকে ১৮ এপ্রিল, ২০২১ তারিখে এই ভিডিওটি প্রকাশিত হয়ে থাকে। পরবর্তীতে “পথিক” নামের একটি ফেসবুক গ্রুপে ১৯ এপ্রিল আবার এই ভিডিওটি দেখতে পাওয়া যায়। অন্যদিকে, এপ্রিলের ১৯ তারিখ “ONE by ONE” নামের অন্য একটি ইউটিউব চ্যানেলও ঠিক এই ভিডিওটিই প্রকাশ করে। ফলে এটি পরিষ্কার যে, এটি একটি পুরনো ভিডিও। যেসব পেজ থেকে ছড়াচ্ছে, তারা যে জোরেশোরে ঘটনাটিকে গতকালকের (১ জুলাই ২১) ঘটনা বলে চালাচ্ছে এমনও না, কিন্তু তাদের পাঠককূল ঘটনাটিকে গতকালকের মনে করে পোস্টে প্রতিক্রিয়া দিচ্ছেন। এতে করে আমাদের মনে হওয়ার যথেষ্ঠ কারণ আছে যে, জনগণ বিভ্রান্ত হচ্ছে।

এপ্রিলের ১৯ তারিখে ফেসবুকে শেয়ার হওয়া ভিডিওগুলো থেকে জানা যাচ্ছে যে ঘটনাটি যশোর জেলার অভয়নগর অঞ্চলে ঘটেছিল।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষিত

বাংলাদেশে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে দেশটি আবার ১ জুলাই থেকে ৭ জুলাই পর্যন্ত “কঠোর” লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেয়। লকডাউন সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়ন করতে সরকার বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে দায়িত্ব দেয়। এই প্রেক্ষিতেই পুরনো ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ে।

 

আপনি কি এমন কোন খবর দেখেছেন যার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন?
কোন বিভ্রান্তিকর ছবি/ভিডিও পেয়েছেন?
নেটে ছড়িয়ে পড়া কোন গুজব কি চোখে পড়েছে?

এসবের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকে জানান।
আমাদেরকে ইমেইল করুনঃ contact@factwatch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh

 

 

 

No Factcheck schema data available.