সম্প্রতি পানির নিচে ডুবে থাকা দ্বারকা নগরীতে শ্রীকৃষ্ণের মন্দির দাবিতে ফেসবুকে একটি ভিডিও ভাইরাল হচ্ছে। ভিডিওটিতে পানির নিচে শ্রীকৃষ্ণের একটি মন্দির দেখা গেলেও ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে জানা যায়, বাস্তবে এটি প্রাচীন দ্বারকা নগরী থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে শ্রী রাম নামের একজন শিল্পীর বানানো একটি ত্রিমত্রিক ভিডিও, বাস্তব ভিডিও নয়। কিন্তু ভাইরাল হওয়া পোস্টে উল্লেখ করা হয়নি যে, ভিডিওটি একটি থ্রিডি ভিডিও। তাছাড়া, বাস্তবে পানির নিচে এমন কোনো মন্দিরের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায় নি। যদিও দ্বারকা শহরের অনেক প্রত্নবস্তু পানির নিচে আবিষ্কৃত হয়েছে, কিন্তু সেগুলো সম্পুর্ণরূপে অক্ষত অবস্থায় নেই।
দ্বারকা নগরী হল ভারতের গুজরাট রাজ্যের একটি প্রাচীন শহর। ভারতের সাতটি প্রাচীনতম শহরের একটি হল দ্বারকা। এটি শ্রীকৃষ্ণের একটি পৌরাণিক নগরী ছিল। মহাভারতের বর্ণনা অনুযায়ী, গোমতী নদী এবং আরব সাগরের মিলনস্থানে প্রায় ৮৪ কিঃমি জুড়ে একটি সুরক্ষিত শহর হিসাবে বিস্তৃত ছিল এই প্রাচীন ভারতীয় নগরী। শ্রীকৃষ্ণের আধ্যাত্মিক জগতে যোগদানের জন্য পৃথিবী ত্যাগ করার পর প্রাচীন শহরটি আরব সাগরের নিচে তলিয়ে যায়। গত শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধে, প্রত্নতাত্ত্বিকরা বর্তমান দ্বারকা শহরের উপকূলে ডুবে যাওয়া প্রাচীন দ্বারকা শহরের অনেক প্রত্নবস্তু পানির নিচ থেকে আবিষ্কার করেছে যেমনঃ পাথরের খণ্ড এবং স্তম্ভ। তবে, সেখানে শ্রীকৃষ্ণের মন্দির পাওয়া গেছে কি না — এ সংক্রান্ত নিশ্চিত কোনো প্রমাণ নেই।
অন্যদিকে, ভাইরাল হওয়া ভিডিওটির বিভিন্ন অংশ ধরে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে লস্ট টেম্পল নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে গত ৩১ মার্চ পোস্ট করা একটি রিল ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিওটির ক্রেডিট দেওয়া হয়েছে “@artz_by_ram” নামের একটি ইনস্টাগ্রাম আইডিকে। এই সূত্র ধরে ইন্সটাগ্রামে @artz_by_ram নামের আইডিটি খুঁজে পায় ফ্যাক্টওয়াচ টিম। মূলত, শ্রী রাম নামের একজন শিল্পীর ইনস্টাগ্রাম আইডি এটি। এই আইডি থেকেই গত ২০ মার্চ ভাইরাল ভিডিওটি পোস্ট করা হয়েছিল। ভিডিওটির ক্যাপশন পড়ে জানা যায় প্রাচীন দ্বারকা শহরের অনুপ্রেরণা নিয়ে এই থ্রিডি ভিডিওটি বানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, এর আগেও দ্বারকা নগরীর অস্তিত্ব নিয়ে বিভিন্ন সময়ে গুজব ছড়িয়ে পড়েছিল। ফ্যাক্টওয়াচের এ সংক্রান্ত একটি ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন দেখুন এখানে।
অর্থাৎ, শ্রী রাম নামের একজন শিল্পীর বানানো প্রাচীন দ্বারকা শহরের একটি থ্রিডি ভিডিওকে বাস্তব দৃশ্য বলে দাবি করা হচ্ছে। তাই ফ্যাক্টওয়াচ এই দাবিকে বিভ্রান্তিকর হিসেবে সাব্যস্ত করছে।
আপনি কি এমন কোন খবর দেখেছেন যার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন? কোন বিভ্রান্তিকর ছবি/ভিডিও পেয়েছেন? নেটে ছড়িয়ে পড়া কোন গুজব কি চোখে পড়েছে?