সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে “রিমান্ড শেষে হত্যার সাথে জড়িত সকলের নাম প্রকাশ করলেন মামুন” শিরোনামে একটি সংবাদ শেয়ার হতে দেখা গিয়েছে। তবে, ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে এই শিরোনামের কোন সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি এবং জানা গিয়েছে যে খাইরুন নাহারের স্বামী মামুন হোসেন বর্তমানে জামিনে রয়েছেন। সঙ্গত কারণে ফ্যাক্টওয়াচ উক্ত শিরোনামের দাবিকে মিথ্যা বলে সাব্যস্ত করছে।
শেয়ারকৃত সংবাদগুলোর শিরোনামের সত্যতা যাচাই করতে গিয়ে আমরা জানতে পেরেছি যে নাটোরের এম. হক. কলেজের সহকারী অধ্যাপক খাইরুন নাহারের মৃত্যুর ঘটনায় তার স্বামী মামুন হোসেনকে ৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ এ অস্থায়ী জামিনের আদেশ দিয়েছিলেন নাটোরের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গোলজার হোসেন এবং ২৩ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ এ শুনানির দিন উক্ত জামিনের মেয়াদ বাড়িয়ে ২৫ই অক্টোবর, ২০২২ এ মামলার শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছিলো। মামুন হোসেনের জামিন আদেশ মঞ্জুর নিয়ে কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের সংবাদ পড়ুন এখানে, এখানে, এবং এখানে।
এর আগে গত ১৪ই আগস্ট, ২০২২ এ নাটোরের ভাড়া বাসা থেকে শিক্ষিকা খাইরুন নাহারের মরদেহ উদ্ধার করা হয় এবং এই ঘটনায় তার স্বামী মামুন হোসেনকে গ্রেফতার করে পুলিশ এবং ১৫ই আগস্ট, ২০২২ এ জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। পড়ুন এখানে এবং এখানে।
খাইরুন নাহারের মৃত্যুর ঘটনার পরপরই সামাজিক মাধ্যমে একটি পোস্ট ভাইরাল হয় যেখানে দাবি করা হয়েছিলো ময়নাতদন্তের রিপোর্ট জানা গিয়েছে স্বামী মামুন হোসেনই তাকে হত্যা করেছে। তবে, ফ্যাক্টওয়াচ এই বিষয়টি নিয়ে তখনই একটি ফ্যাক্ট-চেকিং রিপোর্ট তৈরি করে এবং অনুসন্ধান করে জানতে পারে যে ময়নাতদন্তের রিপোর্টে বলা হয়েছে খাইরুন নাহারের শরীরে কোন নির্যাতন বা আঘাতের চিহ্ন মেলেনি এবং শ্বাসরোধেই তার মৃত্যু হয়েছে। রিপোর্ট কোথাও উল্লেখ করা হয়নি যে মামুন হোসেন খাইরুন নাহারকে হত্যা করেছে। ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানের রিপোর্টটি পড়ুন এখানে।
এছাড়াও, খাইরুন নাহার এবং মামুন হোসেন এর কেস সম্পর্কিত আরেকটি ভুয়া খবর ভাইরাল হয় যেখানে দাবি করা হয়েছিলো ময়নাতদন্তের পর স্বামী মামুন হোসেনের মৃত্যুদন্ড ঘোষণা করেছে আদালত। তবে, ফ্যাক্টওয়াচ তাদের অনুসন্ধানের মাধ্যমে তখন দেখিয়েছিলো যে দাবিটি সঠিক নয়। এই বিষয়ে ফ্যাক্টওয়াচের আরেকটি ফ্যাক্ট-চেকিং রিপোর্ট পড়ুন এখানে।
উল্লেখ্য, গত বছরের ১২ই ডিসেম্বর শিক্ষিকা খাইরুন নাহার এবং সিরাজ-উদ-দৌলা সরকারি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মামুন হোসেন বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়ের প্রায় সাত মাস পর গত জুলাই মাসে তাদের বিয়ের খবরটি ছড়িয়ে পড়ে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে এটি আলোচিত হয়।
অতএব, আমাদের অনুসন্ধানে শেয়ারকৃত সংবাদগুলোর শিরোনামের কোন সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি এবং আমরা জানতে পেরেছি যে শিক্ষিকা খাইরুন নাহারের স্বামী মামুন হোসেন বর্তমানে আদালতের আদেশে জামিনে রয়েছেন।
সুতরাং, সবকিছু বিবেচনা করে ফ্যাক্টওয়াচ সামাজিক মাধ্যমে শেয়ারকৃত সংবাদগুলোকে “মিথ্যা” বলে সাব্যস্ত করছে।
আপনি কি এমন কোন খবর দেখেছেন যার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন? কোন বিভ্রান্তিকর ছবি/ভিডিও পেয়েছেন? নেটে ছড়িয়ে পড়া কোন গুজব কি চোখে পড়েছে?