হেফাজতে ইসলাম নেতা মামুনুল হক গত ৩ মে পুলিশের কাজে বাধা ও বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে করা পৃথক পাঁচটি মামলায় সম্প্রতি জামিন পেয়েছেন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ফেসবুকে কিছু পোস্টে দাবি করা হচ্ছে, মামুনুল হক জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। কিন্তু, ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে জানা যায়, মামুনুল হক পাঁচটি মামলায় জামিন পেলেও তার বিরুদ্ধে আরও মামলা রয়েছে। যার কারণে তিনি জামিনে মুক্তি পাননি বরং এখনও কারাভোগ করছেন। অন্যদিকে, ভাইরাল পোস্টগুলোতে ব্যবহৃত ছবিটিও ২০২১ সালে মামুনুল হককে গ্রেফতারের সময়কার। এ কারণে ফ্যাক্টওয়াচ ভাইরাল হওয়া পোস্টটিকে “মিথ্যা” হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
হেফাজতে ইসলাম নেতা মামুনুল হককে ২০২১ সালের ১৮ এপ্রিল ঢাকার মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ, একাধিক সহিংস তাণ্ডব, নারী কেলেঙ্কারির সহ আরও অনেক মামলার থাকায় ২ বছরের বেশি সময় ধরে কারাগারেই আছেন।
কিন্তু, ফেসবুকে ভাইরাল পোস্টগুলোতে দাবি করা হচ্ছে মামুনুল হক মুক্তি পেয়েছেন। তাই তার জামিন পাওয়া সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার জন্য প্রাসঙ্গিক কিছু কি-ওয়ার্ড ধরে অনুসন্ধান করা হয়। অনুসন্ধানে জানা যায়, গত ৩ মে হাইকোর্ট হেফাজতে ইসলাম নেতা মামুনুল হককে ঢাকার পল্টন ও চট্টগ্রামের হাটহাজারী থানায় দায়ের করা নাশকতার ৫ মামলা থেকে জামিন দিয়েছে। পুলিশের কাজে বাধা ও বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে তার বিরুদ্ধে এই পৃথক পাঁচটি মামলা দায়ের করা হয়েছিল।
পরবর্তিতে আরও জানা যায় যে, মামুনুল হকের বিরুদ্ধে মোট ৪১টি মামলা দায়ের করা ছিল। এর মধ্যে থেকে ১৩টি মামলায় তিনি আগেই জামিন পেয়েছিলেন। এরপর নতুন করে আরও পাঁচটি মামলায় জামিন পেলেন তিনি। তবে এই ১৮ টি মামলায় জামিন পেলেও তিনি কারামুক্ত হতে পারছেন না। কারণ, তার বিরুদ্ধে আরও ২৪ টি মামলা রয়েছে, যেগুলো থেকে তিনি এখনও মুক্ত নন। এমন কিছু প্রতিবেদন দেখুন এখানে এবং এখানে।
অন্যদিকে, ভাইরাল হওয়া পোস্টে ব্যবহৃত ছবিটি সম্পর্কে জানার জন্য রিভার্স ইমেজ অনুসন্ধান করা হয়। অনুসন্ধানে স্টক ফটো শেয়ারিং ওয়েবসাইট অ্যালামিতে ২০২১ সালের ১৮ এপ্রিল আপলোড করা একই ছবি পাওয়া যায়। ছবির বর্ণনা থেকে নিশ্চিত হওয়া যায়, এটি মামুনুল হকের জামিনে মুক্তি পাওয়ার ছবি নয় বরং, তাকে গ্রেফতারের পর তেজগাঁও জেলা পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়ার সময়কার ছবি।
তাছাড়া, মূলধারার কোনো সংবাদমাধ্যমে বা নির্ভরযোগ্য কোন উৎস থেকে এমন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি যার মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, মামুনুল হক জামিনে মুক্তি পেয়েছেন।
অর্থাৎ, সকল মামলা থেকে জামিন পাওয়ার আগেই ভাইরাল হওয়া পোস্টগুলোতে দাবি করা হচ্ছে মামুনুল হক জামিনে মুক্ত। সঙ্গত কারণে ভিত্তিহীন এই দাবিটিকে ফ্যাক্টওয়াচ “মিথ্যা” হিসেবে সাব্যস্ত করছে।
আপনি কি এমন কোন খবর দেখেছেন যার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন? কোন বিভ্রান্তিকর ছবি/ভিডিও পেয়েছেন? নেটে ছড়িয়ে পড়া কোন গুজব কি চোখে পড়েছে?