সম্প্রতি ভারতের মণিপুর রাজ্যের আন্দোলনকে ঘিরে একটি ফটোকার্ড ভাইরাল হয়েছে। তারিখ দেওয়া ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪। ফলে অনেকেই ভাবছেন এটি সাম্প্রতিক সময়ের ছবি। ফটোকার্ডটিতে দেখা যাচ্ছে, মণিপুরের দুই বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা একটি সংবাদ সম্মেলনে মণিপুরের স্বাধীনতা ঘোষণা করছেন। তবে ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ছবিটি ২০২৪ সালের নয় বরং পাঁচ বছর আগের। তাই ফ্যাক্টওয়াচ ফটোকার্ডটিকে “বিভ্রান্তিকর” বলে সাব্যস্ত করছে।
ভাইরাল ছবিটি দিয়ে রিভার্স ইমেজ অনুসন্ধান করে আমরা পাঁচ বছর আগে প্রকাশিত এই ছবিটির সন্ধান পাই। বাংলাদেশের দৈনিক দি বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড এ প্রকাশিত ৩০ অক্টোবর ২০১৯ এর এক রিপোর্টে একই ছবি ব্যবহার করে আল জাজিরার বরাতে বলা হয়েছে, মণিপুরের স্বাধীনতা ঘোষণা করে প্রবাসী সরকার গঠনের পর লন্ডনে এই সংবাদ সম্মেলন হয়। সেই সময় প্রবাসী সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রী নারেংবাম সমরজিৎ, স্বাধীন মণিপুরের জাতিসংঘের সদস্যপদ বিষয়েও কথা বলেন।
ইন্ডিয়া টাইমসের ৩০ অক্টোবর ২০১৯ এর রিপোর্টেও হুবহু এই ছবিটি ব্যবহার করা হয়েছিল। সেই প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালের অক্টোবরের ঐ সংবাদ সম্মেলন লন্ডনে অনুষ্ঠিত হয়। ছবিতে যে দুজনকে দেখা যাচ্ছে, তারা প্রবাসী সরকারের মন্ত্রী হিসেবে নিজেদের উল্লেখ করেন বলে ইন্ডিয়া টাইমস জানায়।
আজতক বাংলা এর ফ্যাক্টচেকেও একই তথ্য পাওয়া যায়। সেখানে আবার অভিযোগ আকারে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে ভারত-বিদ্বেষের কারণে পাঁচ বছর আগের ফটোকার্ডটি নতুন করে ভাইরাল করা হয়েছে।
গত সাত সেপ্টেম্বরে মণিপুরে মেইতেই গোষ্ঠীর সঙ্গে বিদ্রোহীদের বন্দুকযুদ্ধে পাঁচজন নিহত হলে নতুন করে উত্তাল হয়ে ওঠে মণিপুর। দীর্ঘদিন ধরে ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার সংগ্রাম করে আসছে তারা। তবে এবারের আন্দোলনে তারা স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে কোন সংবাদ সম্মেলন করেন নি।
সুতরাং, সবকিছু বিবেচনা করে ফ্যাক্টওয়াচ সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ফটোকার্ডের দাবিটিকে বিভ্রান্তিকর হিসেবে সাব্যস্ত করছে।
এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।। এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে। এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।