মতিউর রহমান নিজামীর নামে তুরষ্কে কোনো সড়ক নেই

28
মতিউর রহমান নিজামীর নামে তুরষ্কে কোনো সড়ক নেই
মতিউর রহমান নিজামীর নামে তুরষ্কে কোনো সড়ক নেই

Published on: [post_published]

“তুরষ্কে বাংলাদেশ দুতাবাস রাখতে হলে মতিউর রহমান নিজামীকে শহীদ বলতেই হবে এবং দেশটিতে বাংলাদেশ দুতাবাসের সামনের সড়কটির নাম রাখা হয়েছে শহীদ নিজামী স্ট্রিট। “– এমন শিরোনামে একটি পোস্ট ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে দেখা যায়, এই দাবির পক্ষে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্য প্রমাণ নেই। মতিউর রহমান নিজামীকে “শহীদ” বলা সংক্রান্ত কোনো বাধ্যবাধকতার ব্যাপারে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তাছাড়া, দেশটিতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের সামনে কিংবা আশেপাশের কোনো সড়কর নাম নিজামি স্ট্রিট নয়। এ কারণে ফ্যাক্টওয়াচ ভাইরাল হওয়া তথ্যটিকে “মিথ্যা” হিসেবে চিহ্নিত করেছে।     

ফেসবুকে ভাইরাল এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে

ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধান:

বিভিন্ন কী- ওয়ার্ড ধরে অনুসন্ধান করে জানা যায়, তুরষ্কে বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রধান অফিস দেশটির রাজধানী আঙ্কারায় অবস্থিত। যার ঠিকানা হচ্ছে ওরান মহলেসি, কিলিক আলী কাদেসি, নং: ১৪ কানকায়া – আঙ্কারা(Oran Mahallesi, Kılıç Ali Caddesi, No: 14 Çankaya – Ankara)। এবং, তুরস্কের ইস্তাম্বুলে বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রতিনিধিত্বকারী অফিসের নাম হচ্ছে কনস্যুলেট জেনারেল অফ বাংলাদেশ এবং এর ঠিকানা হচ্ছে (Gayrettepe, Hoşsohbet Street no:6, 34349 Beşiktaş/İstanbul, Turkey)। কিন্তু এদের ওয়েবসাইটে এমন কিছুর উল্লেখ পাওয়া যায়নি যার মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, দূতাবাসের সামনে বা আশেপাশে নিজামি স্ট্রিট নামে কোনো সড়ক রয়েছে।


পরবর্তীতে, তুরষ্কের আরও দুইটি প্রধান শহর ইজমির এবং গাজিয়ানটেপে বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রতিনিধিত্বকারী অফিস খুঁজে পাওয়া যায়। তবে এই সকল স্থানের ঠিকানা অনুসন্ধান করেও নিজামি স্ট্রিট নামে কোনো সড়কের হদিস খুঁজে পাওয়া যায়নি।


এরপর, বিভিন্ন ভাবে ভিন্ন ভিন্ন কী- ওয়ার্ড ধরে অনুসন্ধান করেও তুরষ্কে শহীদ নিজামি স্ট্রিট নামে কোনো সড়ক খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে, নিজামি স্ট্রিট নামে আজারবাইজানের রাজধানি বেকুতে অবস্থিত একটি সড়ক খুঁজে পাওয়া যায়, যার নামকরণ করা হয়েছিল ফার্সি কবি নিজামি গাঞ্জাভির নাম অনুসারে।

অন্যদিকে, ভাইরাল হওয়া পোস্টগুলোতে দাবি করা হচ্ছে, বাংলাদেশ দূতাবাসে যোগাযোগের ঠিকানায় “নিজামি স্ট্রিট” এটি উল্লেখ করতে হবে, কিন্তু দূতাবাসের প্রধান অফিস কিংবা প্রতিনিধিত্বমূলক অফিসগুলোর যোগাযোগের ঠিকানায় এমন কিছু উল্লেখ নাই। ঠিকানার কোথাও “নিজামি স্ট্রিট” নামটি খুঁজে পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, মতিউর রহমান নিজামীকে ফাঁসি দেয়ার পর তুরষ্কসহ আরও কিছু দেশ বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের বিচারের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল। কিন্তু বাংলাদেশ সরকার এসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে। মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসির প্রতিবাদে তুরস্কে বিক্ষোভ হয়েছিল, এবং বাংলাদেশ থেকে তুরষ্কের রাষ্ট্রদূত ডেভরিম ওসতুর্ককে দেশে ফিরিয়ে নেয়া হয়েছিল। তাছাড়া নিজামীসহ অন্যান্য  জামায়াত নেতাদের ফাঁসি না দেয়ার জন্য তুরষ্ক বাংলাদেশের কাছে চিঠি পাঠিয়েছিল। দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক মূলধারার সংবাদমাধ্যমে এ সংক্রান্ত কিছু প্রতিবেদন দেখুন এখানে এবং এখানে

তুরষ্কে বাংলাদেশ দুতাবাস রাখতে হলে মতিউর রহমান নিজামীকে শহীদ বলতেই হবে — এমন কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া পোস্টগুলোতে কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে। ফেসবুকে এই পোস্টটি ২০১৬ সাল থেকে প্রচার হয়ে আসতে দেখা যাচ্ছে। কিন্তু, তখন থেকে আজ পর্যন্ত বহাল তবিয়তেই তুরষ্কে বাংলাদেশের দূতাবাস পরিচালিত হতে দেখা যাচ্ছে। এর সাথে মতিউর রহমানকে শহীদ বলে আখ্যা দেয়া বা না-দেয়ার কোনো সম্পর্ক নেই।

সঙ্গত কারণে, ভিত্তিহীন এই দাবিটিকে ফ্যাক্টওয়াচ “মিথ্যা” হিসেবে সাব্যস্ত করছে।

আপনি কি এমন কোন খবর দেখেছেন যার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন?
কোন বিভ্রান্তিকর ছবি/ভিডিও পেয়েছেন?
নেটে ছড়িয়ে পড়া কোন গুজব কি চোখে পড়েছে?

এসবের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকে জানান।
আমাদেরকে ইমেইল করুনঃ contact@factwatch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh

No Factcheck schema data available.