সম্প্রতি ফেসবুকে একটি অদ্ভূত প্রাণীর ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে যার ক্যাপশনে এটাকে “জলপরী” বলে দাবি করা হচ্ছে । কিন্তু ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে ভিডিওগুলো কম্পিউটার এনিমেশন প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি করা যা বিনোদনের উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছিল। তাছাড়া বাস্তবেও জলপরী পাওয়ার কোন প্রমাণ এখনো পাওয়া যায়নি।
গুজবের উৎস
বাংলা ক্যাপশনসহ ভাইরাল হওয়া কয়েকটি ভিডিও দেখুন এখানে, এখানে।
গুগল ইমেজ সার্চ এবং বিভিন্ন কি-ওয়ার্ডের মাধ্যমে অনুসন্ধানে JJPD Producciones নামক একটি ইউটিউব চ্যানেলে একই ধরণের ভিডিও পাওয়া যায়।এই ভিডিওর ১ মিনিট ৫ সেকেন্ড সময় থেকে পরবর্তী ২৮ সেকেন্ডের অংশটুকু নিয়েই আলাদা ভিডিও ক্লিপ বানিয়ে ফেসবুকে জলপরীর দাবীতে প্রচার করা হচ্ছে।
JJPD Producciones ইউটিউব চ্যানেল থেকে জানা যাচ্ছে জলপরী বা মারমেইডের এনিমেশনগুলো বিনোদনের উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়। ভিডিওগুলো ২৬ আগস্ট, ২০২১ সালে আপলোড করা হয়। JJPD Producciones থেকে আপলোড করা ভিডিওটির ডেসক্রিপশনে স্প্যানিশ ভাষায় কিছু তথ্য ছিল, যা ইংরেজি অনুবাদ করলে দাঁড়ায় ,
“These are paranormal videos created by us to entertain.
All images shown are fictional.
CGI (Computer Generated Image) Video.”
অর্থাৎ এখানে পরিষ্কারভাবেই একে কম্পিউটার জেনারেটেড ইমেজ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
বর্ণনা থেকে আরো জানা যাচ্ছে ভিডিওগুলো জেমি জোস পেরেজ নামক এক ব্যক্তি তৈরি করেছেন।
তাছাড়া ২৫ জুলাই, ২০২১ সালে JJPD Producciones ইউটিউব চ্যানেল থেকে একটি ভিডিও আপলোড করা হয় যেখানে এনিমেশন ভিডিওগুলো তৈরির প্রক্রিয়াগুলো দেখানো হয়েছে।
সাধারনত, জলপরী বা মৎস্যকন্যা বলতে এমন প্রাণীদের বোঝায় যাদের উপরের অর্ধেক অংশ মানুষের মতো এবং নিচের অর্ধেক অংশ মাছের মতো। যুক্তরাষ্ট্রের National Ocean Service এর একটি নিবন্ধ থেকে জানা যাচ্ছে বিভিন্ন প্রাচীন সভ্যতার মিথলজিতে জলপরী নিয়ে অনেক গল্প আছে। তবে প্রকৃতিতে জলপরী পাবার কোন প্রমাণ এখনো পাওয়া যায়নি।
LIVE SCIENCE -এর একটি নিবন্ধে বলা হচ্ছে জলপরী থাকার কোন বৈজ্ঞানিক প্রমাণ এখনো পাওয়া যায়নি। জলপরী বিভিন্ন প্রাচীন কল্পকাহিনীতে পাওয়া যায়। তবে বাস্তবে এর প্রমাণ নেই। জলপরী নিয়ে যেসব তথ্য পাওয়া তার বেশিরভাগই গুজব। সমুদ্র বিজ্ঞানীদের ধারণা মানুষের মতো উচ্চতার সামুদ্রিক প্রাণী যেমন ম্যানাটিজ বা ডুগংকে অনেকে জলপরী মনে করতে পারে।
সারমর্ম
ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে ভিডিওগুলো কোন বাস্তব জলপরীর না। ভিডিওগুলো কম্পিউটার এনিমেশন যা বিনোদনের উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছে। তাই ফ্যাক্টওয়াচ ভাইরাল পোস্টগুলোকে “মিথ্যা” হিসেবে চিহ্নিত করছে।
আপনি কি এমন কোন খবর দেখেছেন যার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন? কোন বিভ্রান্তিকর ছবি/ভিডিও পেয়েছেন? নেটে ছড়িয়ে পড়া কোন গুজব কি চোখে পড়েছে?