“মেট্রো রেল স্টেশনে ইংরেজি ও হিন্দিতে গন্তব্য লেখা অথচ বাংলা নেই! মেট্রোরেল কি ভারতে চলে?” এমন শিরোনামে একটি ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে দেখা যায়, দাবিটি সম্পুর্ণ সত্য নয়। ইংরেজিতে গন্তব্যের নাম লেখা থাকলেও হিন্দিতে লেখা শব্দটি আসলে কোনো গন্তব্যের নাম নয়, বাংলায় রূপান্তর করলে তা দাঁড়ায় “কোচ”। মেট্রোরেল উদ্বোধন করার আগে যখন পরীক্ষামূলক ভাবে স্টেশন চালু করা হয়েছিল তখন হিন্দি ভাষায় কোচ (कोच) শব্দটি দেখা গিয়েছিল। কিন্তু মেট্রোরেল চালু হবার পরে “কোচ” শব্দটিসহ যাবতীয় লেখা শুধুমাত্র বাংলা এবং ইংরেজি ভাষায় দেখতে পাওয়া যায়। সঙ্গত কারণে ফ্যাক্টওয়াচ ভাইরাল হওয়া তথ্যটিকে “আংশিক মিথ্যা” হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
মেট্রোরেল স্টেশনে হিন্দি লেখা আছে কি না এ ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়ার জন্য প্রাসঙ্গিক কিছু কী ওয়ার্ড ধরে অনুসন্ধান করা হয়। এভাবে মেট্রোরেল উদ্বোধন নিয়ে মূলধারার সংবাদমাধ্যমে অনেক ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। কিন্তু সেই ভিডিওগুলোতে বাংলা এবং ইংরেজি লেখা দেখতে পাওয়া গেলেও, কোথাও হিন্দি লেখা পাওয়া যায়নি। মেট্রোরেলের প্রতিটি স্টেশনে এবং ট্রেনে বাংলা এবং ইংরেজি ভাষায় বিভিন্ন জিনিস লেখা রয়েছে যেমনঃ টিকেট বিক্রয় মেশিন, লিফট, টয়লেট, সিঁড়ি, স্টেশনে ঢোকার এবং বের হওয়ার স্থান, ষ্টেশনের নাম, ট্রেনের ভিতরে বিভিন্ন নির্দেশনা ইত্যাদি। এ সংক্রান্ত কিছু প্রতিবেদন দেখুন এখানে এবং এখানে।
অন্য একটি অনুসন্ধানে জানা যায়, ভাইরাল হওয়া ছবিতে যে হিন্দি শব্দটি (कोच) দেখা যাচ্ছে সেটি আসলেই আগারগাঁও স্টেশনে মেট্রোরেলের আনষ্ঠানিক উদ্বোধনের আগে দেখা যেত। নিচের ভিডিওটির ৫ মিনিট ৩৩ সেকেন্ড এবং ৭ মিনিট ৮ সেকেন্ডের সময় তার প্রমাণ পাওয়া যাবে। ভিডিওটি গত ১৬ নভেম্বর SamZone নামের একটি ইউটিউব চ্যানেল থেকে প্রচারিত হয়েছিল। কিন্তু, মেট্রোরেল উদ্বোধন করা হয় গত ২৮ ডিসেম্বর । অতএব, স্টেশনে হিন্দি ভাষায় “कोच” লেখাটি সত্যিই ছিল, কিন্তু তা মেট্রোরেল উদ্বোধনের অনেক আগের ঘটনা।
ভিডিওটির ঠিক ৫ মিনিট ৩৮ সেকেন্ডের সময় হিন্দি শব্দটির স্থানে বাংলায় আগারগাঁও লেখা দেখতে পাওয়া যায়।
উল্লেখ্য, ভাইরাল হওয়া ছবিতে হিন্দি শব্দটি হচ্ছে “कोच”। বাংলায় এর অর্থ “কোচ”। মেট্রোরেল চালু হওয়ার পরে স্টেশনে বাংলায় এবং ইংরেজিতে “কোচ” শব্দটি খুঁজে পাওয়া যায়।
আনুষ্ঠানিক ভাবে মেট্রোরেল উদ্বোধনের পর বাংলা এবং ইংরেজি ভাষা ছাড়া অন্য কোনো ভাষা খুঁজে পাওয়া যায় নি। তবে, উদ্বোধনের আগে যখন পরীক্ষামূলক ভাবে স্টেশন চালু ছিল তখন এই দুটি ভাষার সাথে হিন্দি লেখা দেখা যেত।
সঙ্গত কারণে ফ্যাক্টওয়াচ ভাইরাল হওয়া তথ্যটিকে “আংশিক মিথ্যা” হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
আপনি কি এমন কোন খবর দেখেছেন যার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন? কোন বিভ্রান্তিকর ছবি/ভিডিও পেয়েছেন? নেটে ছড়িয়ে পড়া কোন গুজব কি চোখে পড়েছে?