মেট্রোরেলে দুই সময়ের আয়ের মধ্যে বিভ্রান্তিকর তুলনা

91
মেট্রোরেলে দুই সময়ের আয়ের মধ্যে বিভ্রান্তিকর তুলনা
মেট্রোরেলে দুই সময়ের আয়ের মধ্যে বিভ্রান্তিকর তুলনা

মেট্রোরেলের ২০২৩ সালের প্রথম ছয় মাসের আয় এবং ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরের ১৮ দিনের আয় নিয়ে, বিভ্রান্তি ছড়িয়ে পড়েছে। এখানে, ইচ্ছে করে অথবা না জেনে একটি তথ্য আড়াল করা হয়েছেঃ প্রথম ছয় মাসে মেট্রোরেলের রুট ছোট ছিল, ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে সম্পূর্ণ রুট চালু হয়েছে। ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে বিষয়টি স্পষ্ট করা হয়েছে।

দৈনিক কালবেলাও এমন একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ এ। সেখানে বলা হয়, বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএসটিসিএল) প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত কনফারেন্সে ডিএমটিসিএল-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবদুর রউফ এ তথ্য জানান।

২২ সেপ্টেম্বরের বাংলা নিউজ টুয়েন্টিফোর ডট কমে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম ১৮ দিনে ৪৯ লাখ ৯ হাজার ৪৯ জন যাত্রী মেট্রোরেলে ভ্রমণ করেছেন। এতে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষের আয় হয়েছে ২০ কোটি ৬৭ লাখ তিন হাজার ৫৯১ টাকা।

এ বছরের ৪ মার্চ দৈনিক যুগান্তরে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের বলা হয়, ৬ মাসে মেট্রোরেলের আয় ১৮ কোটি ২৮ লাখ। এই প্রতিবেদনটিতে আরও উল্লেখ্য করা হয়েছিল, ২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর মেট্রো রেল চালু হওয়ার পর থেকে গত বছরের জুন পর্যন্ত এই টাকা আয় হয়। প্রথম ছয় মাসে মেট্রো রেল চলেছে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত। অর্থ্যাৎ, ভাইরাল এসব পোস্টে যে ছয় মাসের কথা বলা হচ্ছে সেটি আসলে মেট্রোরেল শুরু হওয়ার প্রথম ছয় মাসের হিসাব। নির্দিষ্ট সালের কথা উল্লেখ না থাকায় অনেকেই বিভ্রান্ত হয়েছেন।

আবার কালবেলায় সালের কথা উল্লেখ থাকলেও যে তুলনাটি করা হয়েছে সেটি অসম। প্রথম ছয় মাসের হিসাবে মেট্রোরেল চলাচল করতো উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত। কিন্তু এখন যে ১৮ দিনের হিসাব দেয়া হয়েছে সেসময়ে মেট্রোরেল উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত যাতায়ত করে। স্বাভাবিকভাবেই এর মধ্যে অনেকগুলো স্টেশন বেড়েছে এবং বেড়েছে যাত্রী সংখ্যাও। অর্থ্যাৎ, দুই অসম তথ্য এক করে, আগের সরকার আর এই সরকারের মধ্যে তুলনা করছেন অনেকেই। এখানে স্পষ্ট যে, প্রথম ছয় মাসের আয় কম হওয়ার সঙ্গে মেট্রো রেলের যাত্রী পরিবহনের সংখ্যা এবং রুট অর্ধেক হওয়ার সরাসরি সম্পর্ক আছে। 

এছাড়া দৈনিক আজকের পত্রিকার একটি প্রতিবেদনে এমআরটি-৬ এর (মতিঝিল-উত্তরা) অতিরিক্ত প্রকল্প পরিচালক মো. জাকারিয়ার বরাতে বলা হয়, মেট্রোরেল মতিঝিল পর্যন্ত চালু হওয়ার পর থেকেই তাদের প্রতিদিন গড় আয় ১ কোটি টাকা ও গড় যাত্রী ৩ লাখ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ৬ মাসের আয় নিয়ে যা ছড়িয়েছে সেটি সঠিক নয়।

থ্রেডসে দুই সময়ের আয়ের তুলনা করে শেয়ারকৃত বিভ্রান্তিকর পোস্টগুলি, এখানে ,এখানে, এখানে এবং এখানে

যেহেতু আয়ের দুটি তথ্যের মধ্যে সময়ের মধ্যে ব্যবধান রয়েছে এবং মেট্রোরেল প্রথম ছয়মাসে মাত্র কয়েকটি স্টেশনে চালু ছিল, ফলে দুই সময়ের আয়ের তুলনা যথেষ্ট অসংগতিপূর্ণ। এর কারণে বিভ্রান্তির তৈরি হয়েছে। এসব বিবেচনায় ফ্যাক্টওয়াচ এটিকে বিভ্রান্তিকর সাব্যস্ত করছে।   

No Factcheck schema data available.

এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে। এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে

এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।

কোনো তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকে
ইমেইল করুনঃ contact@fact-watch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh