সম্প্রতি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে উদ্ধৃত করে সামাজিক মাধ্যমে দাবি করা হচ্ছে যে, তিনি বলেছেন রমজান মাসে রোজা না রাখাটা স্বাধীনতা। কিন্তু মির্জা ফখরুল এমন কথা বলেছেন এরকম কোনো প্রমাণ খুঁজে পাওয়া যায় নি। দেশের মূলধারার গণমাধ্যমে এমন কোনো তথ্য ফ্যাক্টওয়াচ খুঁজে পায় নি। এছাড়া এসব পোস্টে ব্যবহৃত ছবিটিও পুরানো।দেখা যাচ্ছে, পুরানো একটি ছবির সাথে ভূয়া একটি উক্তি জুড়ে দিয়ে মির্জা ফখরুলের নামে চালিয়ে দেয়া হচ্ছে। সঙ্গত কারণে এটিকে ফ্যাক্টওয়াচ মিথ্যা সাব্যস্ত করছে।
বিভিন্ন কি-ওয়ার্ডের সাহায্যে অনুসন্ধান করা হলে মির্জা ফখরুলের এমন বক্তব্যের কোনো প্রমাণ অনলাইনে পাওয়া যায় নি। বাংলাদেশের মূলধারার গণমাধ্যম কিংবা বিএনপির পক্ষ থেকেও এমন কোনো বক্তব্য খুঁজে পাওয়া যায় নি।
সম্প্রতি গণমাধ্যমে মির্জা ফখরুলের রমজান মাস নিয়ে যে বক্তব্যটি খুঁজে পাওয়া যায় সেটি সম্পূর্ণই ভিন্ন। রমজান মাসে বিএনপির বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা নিয়ে একটি বক্তব্য দিয়েছিলেন তিনি। সেখানে বলেন, রমজান মাসে রাজনৈতিক কর্মসূচি দেওয়ার কথা নয়, তবে দেশে যে অবস্থা তৈরি হয়েছে, এই পরিস্থিতিতে তাঁরা কর্মসূচি দিতে বাধ্য হয়েছেন। গত ২৪ মার্চ, ২০২৩ এ ঢাকার লেডিস ক্লাবে বিএনপি আয়োজিত এক ইফতার মাহফিলে এই কথা বলেন।
ভাইরাল পোস্টে ব্যবহৃত ছবিটি ২০ নভেম্বর, ২০২১ এ তোলা এবং সেদিন এটি বাংলাদেশ জার্নালে প্রকাশিত হয়। ছবিটি তুলেছিলেন ইলিয়াস সাজু।
ছবির বিবরণীতে বলা হচ্ছে, বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসা নিতে দেয়ার দাবিতে বিএনপির নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে গণঅনশনে বক্তব্য রাখেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বাংলাদেশ জার্নাল প্রকাশিত ছবি এলবামটি দেখুন এখানে।
বিএনপির ভ্যারিফাইড ইউটিউব চ্যানেল থেকে সেদিনের বক্তব্যটি খুঁজে পাওয়া যায়। সম্পূর্ণ বক্তব্যে কোথাও তাকে রমজান মাসে রোজা না রাখাটা স্বাধীনতা — এ জাতীয় মন্তব্য করতে দেখা যায় নি।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালে রোজা শুরু হয়েছিলো এপ্রিল মাসে অন্যদিকে মির্জা ফখরুলের এই ছবিটি নভেম্বর মাসের।
এছাড়া, ভাইরাল ছবিটি পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যাচ্ছে, সেখানে নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্রের উল্লেখ নেই। মূলত দৈনিক প্রথম আলোর নাম বিকৃত করে উক্ত দাবিটি ছড়ানো হচ্ছে।
তাই নিশ্চিতভাবেই বলা যাচ্ছে, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এই বক্ত্যবটি ভিত্তিহীন এবং ব্যবহৃত ছবিটি পুরনো ও সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি প্রসঙ্গের। তাই ফ্যাক্টওয়াচ এমন উক্তিটিকে মিথ্যা হিসেবে চিহ্নিত করছে।
আপনি কি এমন কোন খবর দেখেছেন যার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন? কোন বিভ্রান্তিকর ছবি/ভিডিও পেয়েছেন? নেটে ছড়িয়ে পড়া কোন গুজব কি চোখে পড়েছে?