“বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জামিনে মুক্ত হয়ে গেছেন” এমন দাবির সাথে “NEWS 24” থেকে প্রচারিত একটি ভিডিও ফুটেজ ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। তবে অনুসন্ধানে দেখা গেছে, “NEWS 24” এর ভিডিওটি পুরানো। তাছাড়া অক্টোবর ২৯ তারিখে রমনা থানায় করা নাশকতা ও প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা-ভাঙচুর মামলায় এখনো পর্যন্ত জামিন পাননি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ কারণে ফ্যাক্টওয়াচ ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া পোস্টগুলোকে “মিথ্যা” হিসেবে চিহ্নিত করছে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল জামিন পেয়েছেন, এমন কিছু অনুসন্ধান করে পাওয়া যায়নি। বিএনপির পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো বক্তব্য কোথাও প্রকাশিত হয়নি। বিএনপির ভ্যারিফাইড ফেসবুক পেজে আটককৃত নেতাদের নিয়ে বিভিন্ন বক্তব্য থাকলেও জামিন-সংক্রান্ত কোনো তথ্য নেই। তাছাড়া মির্জা ফখরুলের জামিন- সংক্রান্ত কোনো প্রতিবেদন মূলধারার কোনো গণমাধ্যমে এখন পর্যন্ত প্রকাশিত হয়নি।
অক্টোবর ২৯ তারিখে মির্জা ফখরুলকে সকাল সাড়ে নয়টার দিকে তাঁর গুলশানের বাসা থেকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। পরে তাঁকে ডিবির মিন্টো রোডের কার্যালয়ে নেওয়া হয়। রাত আটটার পর তাঁকে আদালতের হাজতখানায় নেয় পুলিশ। পরে রমনা থানার একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে মির্জা ফখরুলকে কারাগারে রাখার আবেদন করে পুলিশ। অপরদিকে, জামিন চেয়ে তাঁর আইনজীবীরা আদালতে আবেদন করেন। জামিনের বিরোধিতা করেন ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর।
উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত মির্জা ফখরুলের জামিন আবেদন নাকচ করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। প্রথম আলোর একটি প্রতিবেদনে আরও বিস্তারিত দেখুন এখানে। প্রাপ্ত তথ্য থেকে জানা যাচ্ছে, এরপর থেকে তিনি কারাগারে আছেন।
এ পর্যায়ে দেখা হয় উক্ত দাবিটির সাথে “NEWS 24” এর যেই প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে তা সাম্প্রতিক কোনো প্রতিবেদন কিনা। বিভিন্ন কী-ওয়ার্ড ধরে ইউটিউবে সার্চ করে “কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন ফখরুল-আব্বাস” শিরোনামে “NEWS 24” প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটি দেখুন এখানে।
উল্লেখ্য, ৯ জানুয়ারি ২০২৩ তারিখে প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছে। এই প্রতিবেদনটির সাথে বর্তমানে ভাইরাল ফুটেজের হুবহু মিল রয়েছে। প্রতিবেদনটি থেকে জানা যাচ্ছে, রাজধানীর নয়াপল্টনে ৭ ডিসেম্বর ২০২৩ তারিখে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় করা মামলায় কারাবন্দী হয়েছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। নিম্ন আদালতে তাঁর পক্ষে দুই দফায় জামিনের আবেদন করা হলেও তা নাকচ হয়ে গিয়েছিল। পরে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে ছয় মাসের জন্য জামিন দিয়েছিল হাইকোর্ট। সেই প্রতিবেদনটি বর্তমানে ভাইরাল হয়েছে। প্রথম আলোর একটি প্রতিবেদনে আরও বিস্তারিত দেখুন এখানে।
সুতরাং, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জামিনে মুক্তি পেয়েছেন দাবিটি সত্য নয়। এই দাবিতে যে ভিডিও ফুটেজ প্রচারিত হচ্ছে তা জানুয়ারি মাসের।
তাই ফ্যাক্টওয়াচ সামাজিক মাধ্যমে শেয়ারকৃত এ ধরনের পোস্টগুলোকে “মিথ্যা” বলে সাব্যস্ত করছে।
এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।। এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে। এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।