যা দাবি করা হচ্ছেঃ “যে শর্তে মুক্তি পেল মির্জা ফখরুল এবং নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বার্তা”- এমন শিরোনাম সংবলিত একটি ভিডিও সম্প্রতি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
ফ্যাক্টওয়াচের সিদ্ধান্তঃ দাবিটি মিথ্যা। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মুক্তির তথ্যটি পাওয়া যাচ্ছে চ্যানেল ২৪ এর একটি ভিডিও প্রতিবেদন থেকে।তবে অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ভিডিওটি গত ৯ জানুয়ারি ২০২৩ এ আপলোড করা হয়েছিলো। অর্থাৎ, ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। এছাড়া, শিরোনামে যুক্তরাষ্ট্রের একটি বার্তার কথা বললেও শেয়ারকৃত ভিডিওতে এ নিয়ে কোনো তথ্যই দেয়া হয় নি।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আসলেই মুক্তি পেয়েছেন কি না এ বিষয়ে অনুসন্ধান করলে, মূলধারার গণমাধ্যম কিংবা বিএনপির অফিসিয়াল কোনো মাধ্যম থেকে এ জাতীয় কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায় নি। জানা যায় যে, গত ২৯ অক্টোবর ২০২৩ এ গুলশান-২-এর বাসা থেকে মির্জা ফখরুলকে আটক করে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। এরপর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কারাগার থেকে মুক্ত হওয়ার কোনো তথ্য নির্ভরযোগ্য কোনো মাধ্যম থেকে পাওয়া যায় নি। বরং এটি জানা যায় যে, আগামী ১৫ জানুয়ারি, ২০২৪ এ রাষ্টপক্ষের আবেদনের শুনানি হবে।
ভাইরাল ভিডিওটি সম্পর্কে আরো নিশ্চিত হওয়ার জন্য কিছু প্রাসঙ্গিক কী-ওয়ার্ড ধরে অনুসন্ধান করা হয়। ভিডিওটি লক্ষ্য করলে দেখা যায়, “Channel 24” এর একটি লোগো ব্যবহার করা হয়েছে। এর সূত্র ধরে ইউটিউবে অনুসন্ধান করা হলে, গত ০৯ জানুয়ারি, ২০২৩ এ চ্যানেল ২৪ এ প্রকাশিত মূল ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়। মূলত এই প্রতিবেদনের একটি অংশই ভাইরাল এই ভিডিওতে ব্যবহার করা হয়েছে। সেসময় মির্জা ফখরুলকে আটক করা হয়েছিলো এবং পরবর্তীতে জামিন দেওয়া হয়। উক্ত জামিনের প্রেক্ষিতে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলছিলেন মির্জা ফখরুলের পক্ষের আইনজীবীরা। অর্থ্যাৎ, অন্য আরেকটি ঘটনার ভিডিওকে সাম্প্রতিক দাবি করে ভাইরাল ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।
অন্যদিকে, নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বার্তার যে দাবিটি করা হয়েছে, সেটি নিয়েও ভিডিওটির পরবর্তী অংশে কোনো তথ্য দেয়া হয় নি।
উল্লেখ্য, আদালত উভয় পক্ষের শুনানি শেষে মির্জা ফখরুলের জামিন আবেদন নাকচ করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এ সংক্রান্ত কিছু প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে ও এখানে।
প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে জানা যাচ্ছে, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বর্তমানে কারাগারে আছেন।
সুতরাং, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জামিনে মুক্তি পেয়েছেন এ দাবিটি সঠিক নয়, বরং মির্জা ফখরুল এখনো কারাগারেই আছেন। তাই ফ্যাক্টওয়াচ উক্ত ভিডিওর দাবিটিকে “মিথ্যা” হিসেবে চিহ্নিত করছে।
সুতরাং, সবকিছু বিবেচনা করে ফ্যাক্টওয়াচ সামাজিক মাধ্যমে শেয়ারকৃত ভিডিওটির দাবিকে “মিথ্যা” বলে সাব্যস্ত করছে।
এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।। এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে। এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।