সম্প্রতি দৈনিক প্রথম আলোর আদলে বানানো নিউজকার্ডে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং হিরো আলমের আলাদা আলাদা দুটি উক্তি ফেসবুকে ভাইরাল হতে দেখা যাচ্ছে। দাবি করা হচ্ছে, নিউজকার্ডগুলো প্রথম আলো থেকে প্রকাশ করা হয়েছে। কিন্তু, ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে ভাইরাল হওয়া নিউজকার্ডগুলো প্রথম আলো বা অন্য কোনো মূলধারার সংবাদমাধ্যমে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাছাড়া, প্রথম আলোর অফিসিয়াল ফেসবুক আকাউন্ট থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে যে, এই নিউজকার্ডগুলো তাদের তৈরি করা নয়। প্রথম আলোর নিউজকার্ড হুবহু নকল করে মির্জা ফখরুল এবং হিরো আলমের ভুয়া উক্তি জুড়ে দিয়ে এগুলো বানানো হয়েছে। সঙ্গত কারণে ফ্যাক্টওয়াচ এই পোস্টগুলোকে মিথ্যা হিসেবে সাব্যস্ত করেছে।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং হিরো আলমের উক্তি দাবিতে যা শেয়ার করা হচ্ছেঃ
“যুক্তরাষ্ট্র চাইলে বিএনপি যে কোন সময়েই ক্ষমতা গ্রহণে প্রস্তুত”- মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
“ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে আমার নির্বাচনী কাজে সহায়তার জন্য ২০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন আন্দালিব রহমান পার্থ কিন্তু মনোনয়ন বাতিল হওয়াতে তিনি সেই টাকা ফেরত চাইছেন”- হিরো আলম।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উক্তি সম্বলিত প্রথম আলোর যেই নিউজকার্ডটি ভাইরাল হতে দেখা যাচ্ছে সেখানে তারিখ উল্লেখ করা আছে ৩০ মে। সেই তারিখে প্রথম আলো থেকে যতগুলো নিউজকার্ড প্রকাশ করা হয়েছিল তার মধ্যে ভাইরাল নিউজকার্ডটি খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়া, মির্জা ফখরুল “যুক্তরাষ্ট্র চাইলে বিএনপি যে কোন সময়েই ক্ষমতা গ্রহণে প্রস্তুত” শীর্ষক কোনো বক্তব্য দিয়েছেন কি না এ ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়ার জন্য প্রাসঙ্গিক কিছু কি-ওয়ার্ড ধরে অনুসন্ধান করা হয়। অনুসন্ধানে প্রথম আলো সহ বেশ কিছু মূলধারার সংবাদমাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে মির্জা ফখরুলের বক্তব্য সম্পর্কিত কিছু প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। তবে, সেখানে তার এমন কোনো উক্তি খুঁজে পাওয়া যায়নি। প্রতিবেদনগুলো দেখুন এখানে এবং এখানে।
আবার, ভাইরাল হওয়া হিরো আলমের উক্তিটির সত্যতা যাচাই করতেও প্রাসঙ্গিক কিছু কি-ওয়ার্ড ধরে অনুসন্ধান করা হয়। অনুসন্ধানে প্রথম আলো অথবা নির্ভরযোগ্য কোনো সংবাদমাধ্যম থেকে এ সংক্রান্ত প্রমাণ পাওয়া যায়নি। আন্দালিব রহমান পার্থ ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে নির্বাচনী কাজে সহায়তার জন্য হিরো আলমকে ২০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন কি না এ বিষয়েও নিশ্চিত কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে, একাত্তর টিভির অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে গত ২০ জুন প্রকাশিত হিরো আলমের একটি সাক্ষাৎকার খুঁজে পাওয়া যায়। যেখানে তিনি বলছিলেন যে, আন্দালিব রহমান পার্থ নির্বাচনী কাজে সহায়তার জন্য তাকে কোনো টাকা দেয়নি এবং নির্বাচন থেকে সরানোর জন্য এটা তার বিরুদ্ধে করা একটি চক্রান্ত। তাছাড়া, হিরো আলমের উক্তি দাবিতে শেয়ার হওয়া নিউজকার্ডে তারিখ উল্লেখ আছে ১৮ জুন। কিন্তু ১৮ জুন প্রথম আলো হিরো আলমের উক্তি সম্বলিত কোনো নিউজকার্ড প্রকাশ করেনি।
অন্যদিকে, প্রথম আলো তাদের অফিশিয়াল ফেসবুক পেইজ থেকে আপলোড করা আলাদা আলাদা দুইটি পোষ্টে নিশ্চির করে যে, ভাইরাল হওয়া নিউজকার্ডগুলো প্রথম আলো থেকে প্রকাশিত হয়নি। প্রথম আলো এমন কোনো নিউজকার্ড তৈরিও করেনি। প্রথম আলোর দুইটি নিউজকার্ড হুবহু নকল করে মির্জা ফখরুল এবং হিরো আলোমের ভুয়া উক্তি জুড়ে দিয়ে এগুলো বানানো হয়েছে। পোষ্টগুলো দেখুন এখানে এবং এখানে।
সঙ্গত কারণে ফ্যাক্টওয়াচ এই পোস্টগুলোকে মিথ্যা হিসেবে সাব্যস্ত করেছে।
এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।। এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে। এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।