সম্প্রতি একটি ফেসবুক পোস্টে “বাংলাদেশের পক্ষ থেকে গাজাবাসীর জন্য” লেখা একটি ট্রাকের ছবি দিয়ে দাবি করা হচ্ছে রমজান উপলক্ষে যুদ্ধপীড়িত গাজাবাসীদের জন্য বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ত্রাণ সহায়তা পাঠানো হয়েছে। মেটার অপর সোশাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম থ্রেডসেও এমন পোস্ট পাওয়া যাচ্ছে। ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে, মিশরের আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা সাধারণ বাংলাদেশিদের কাছ থেকে অনুদান সংগ্রহ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের দাতব্য সংস্থার মাধ্যমে ট্রাকে করে রমজানের তৃতীয় দিন গাজায় ত্রাণসহায়তা পৌঁছায়। এ কর্মসূচির সাথে বাংলাদেশ সরকার কোনোভাবে সংশ্লিষ্ট নয়। তাই বিভ্রান্তিকর ক্যাপশনের জন্য ফ্যাক্টওয়াচ এ পোস্টকে “বিভ্রান্তিকর” আখ্যা দিচ্ছে।
ফ্যাক্টওয়াচ অনুসন্ধান
দি ডেইলি স্টার সংবাদপত্র থেকে ১৩ মার্চ প্রকাশিত “রমজানে গাজায় পৌঁছালো বাংলাদেশিদের ত্রাণ” শিরোনামের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, পবিত্র রমজান মাসের তৃতীয় দিনে বাংলাদেশসহবিশ্বের৮০টিদেশেরপ্রতিনিধিদেরঅংশগ্রহণেদুইহাজারটনখাদ্যসহ১০০ট্রাকেরএকটিবহরমিশরেরসীমান্তদিয়েগাজাউপত্যকায়পাঠানোহয়েছে। এর সাথে যুক্ত আল–আজহারবিশ্ববিদ্যালয়েরবাংলাদেশিশিক্ষার্থীহোজাইফাখানের বরাতে জানা যায়, গাজারমানুষেরজন্যআল–আজহারকর্তৃপক্ষেরঅনুমতিক্রমেরমজানেরশুরুতেইবাংলাদেশিটাকায়মোট৩৫লাখটাকারত্রাণপাঠানোহয়েছে। এইঅর্থআল–আজহারবিশ্ববিদ্যালয়েঅধ্যয়নরতবাংলাদেশিশিক্ষার্থীরাহিউম্যানফার্স্ট, আজহারওয়েলফেয়ারসোসাইটিবাংলাদেশওহোয়াটপিগনছাত্রসংগঠনগুলোরমাধ্যমে বাংলাদেশিদের কাছ থেকেসংগ্রহকরেন।
মিশরের Egypt Today ও Ahram নামক সংবাদপত্র দুটো থেকে জানা যাচ্ছে, মিশরেরআল–আজহারবিশ্ববিদ্যালয়েরদাতব্যসংস্থাআল–আজহারজাকাতঅ্যান্ডচ্যারিটিহাউজের মাধ্যমে গাজায়এইত্রাণপাঠানোহয়েছে। এতে বাংলাদেশসহ বিশ্বের ৮০টি দেশের সাধারণ জনগণ অনুদান দিয়েছেন। সর্বোচ্চ অনুদান প্রেরণকারী দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ রয়েছে।
ডেইলি স্টারের প্রতিবেদনের সূত্র ধরে এ কর্মসূচির সাথে যুক্ত মিশরের আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হোজাইফা খান এবং আবদুল্লাহ হাশেমের ফেসবুক প্রোফাইলে উক্ত ত্রাণ সহায়তা সম্পর্কিত ছবিযুক্ত পোস্ট পাওয়া যায়। পোস্টে তারা উল্লেখ করেছেন – “আমরাআযহারেঅধ্যয়নরতবাংলাদেশিশিক্ষার্থীরাবাংলাদেশিভাইবোনদেরঅনুদানএকত্রকরেসম্পূর্ণব্যক্তিগতউদ্যোগেআলআযহারেরমাধ্যমেএইপাঁচলরিত্রাণগাযায়পাঠাতেসক্ষমহয়েছি।“
সংশ্লিষ্ট এ দুজন ব্যক্তির পোস্টের ট্রাকের ছবিটিই বিভ্রান্তিকর পোস্টে ব্যবহৃত হয়েছে।
উপরোক্ত অনুসন্ধানের ভিত্তিতে প্রমাণিত হয় যে, বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে এ ত্রাণ সহায়তা পাঠানো হয় নি, বরং সাধারণ বাংলাদেশিদের অনুদানে এ ত্রাণ পাঠানো হয়েছে। তাই বিভ্রান্তিকর ক্যাপশনের কারণে ফ্যাক্টওয়াচ এ পোস্টকে “বিভ্রান্তিকর” সাব্যস্ত করছে।
এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।। এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে। এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।