শাহ পরাণ মাজারে একজন ফকির নিহত হওয়ার দাবিটি বিভ্রান্তিকর 

133
শাহ পরাণ মাজারে একজন ফকির নিহত হওয়ার দাবিটি বিভ্রান্তিকর  শাহ পরাণ মাজারে একজন ফকির নিহত হওয়ার দাবিটি বিভ্রান্তিকর 

সম্প্রতি সিলেটে অবস্থিত হযরত শাহ পরাণ (রঃ) এর মাজারের একজন ফকিরকে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে দাবি করে একটি ছবি প্রচার করা হচ্ছে। ছবিতে রক্তে ভেজা জামা এবং লুঙ্গি পরিহিত একজন ব্যক্তিকে হাসপাতালের বেডে শুয়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে। ছবিটি দেখে অনেকেই ভাবছেন এই লোকটিই সেই ফকির যাকে পিটিয়ে মেরা ফেলা হয়েছে। তবে সিলেট জেলার বেশকিছু স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে যোগাযোগ করে সেই ব্যক্তির পরিচয় জানা যায়। গত ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ এ শাহ পরাণের মাজারে দুর্বৃত্তদের হামলায় আহত হয়ে সিলেটের এম.এ.জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। স্থানীয় সাংবাদিকদের সহয়াতায় ঐ ব্যক্তির হাসপাতালের ছাড়পত্র জোগাড় করতে সমর্থ হয়েছি আমরা। সেখানে দেখা যাচ্ছে, তিনি গত ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ এ শারীরিক আক্রমনের শিকার হয়ে হাসপাতালের ক্যাজুয়ালটি বিভাগে ভর্তি হন। ঐদিনই ডাক্তাররা তাকে ছাড়পত্র দিয়ে ডিসচার্জ করে দেন। ঐ বিভাগে সেদিন দায়িত্বরত যে ডাক্তাররা ছিলেন তাদের সাথে যোগাযোগ করে আমরা বিষয়গুলো নিশ্চিত করেছি। সঙ্গত কারণে ফ্যাক্টওয়াচ সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবিটির সাথে সংশ্লিষ্ট দাবিকে “বিভ্রান্তিকর” বলে সাব্যস্ত করছে।

এমন কয়েকটি পোস্টের নমুনা দেখবেন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এবং এখানে

সিলেটের শাহ পরাণ (রঃ) এর মাজারে একজন ফকিরকে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে দাবি করে রক্তে ভেজা জামা এবং লুঙ্গি পরিহিত একজন ব্যক্তির একটি ছবি সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। ফ্যাক্টওয়াচ এই দাবিটি যাচাই করে দেখতে সিলেটের কয়েকজন স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে যোগাযোগ করেছে এবং ঐ ব্যক্তির পরিচয় নিশ্চিত হয়েছে। প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা গেছে, ছবির ঐ ব্যক্তিটি এখনও বেঁচে আছেন।

পরবর্তীতে আমরা সিলেটের স্থানীয় সাংবাদিকদের সাহায্যে ঐ ব্যক্তির হাসপাতালের ছাড়পত্রের একটি ছবি জোগাড় করি। ছাড়পত্রটি হাতে পাওয়ার পর আমরা জানতে পেরেছি তিনি গত ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ এ সিলেটের এম.এ.জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শরণাপন্ন হন। তিনি হাসপাতালটির ক্যাজুয়ালটি বিভাগে চিকিৎসা নিয়েছিলেন এবং একই দিনে, অর্থাৎ ১০ সেপ্টেম্বর তাকে ডিসচার্জ করা হয়। ছাড়পত্রটিতে তার হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার কারণ হিসেবে শারীরিক আক্রমনের (Physical Assault) কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

যিনি ঐ ব্যক্তিকে হাসপাতাল থেকে ডিসচার্জ করে দেন তিনি ঐ হাসপাতালের ক্যাজুয়ালটি বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার। ছাড়পত্রের নিচে সেই সহকারী রেজিস্ট্রারের সিলসহ স্বাক্ষর লক্ষ্য করেছি আমরা। পরবর্তীতে আমরা সিলেটের এম.এ.জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ক্যাজুয়ালটি বিভাগের উক্ত সহকারী রেজিস্ট্রারকে খুঁজে বের করে তার সাথে যোগাযোগ করতে সমর্থ হই। আলোচিত ঐ ব্যক্তির একটি ছবি এবং তার ছাড়পত্রটি আমরা উক্ত সহকারী রেজিস্ট্রারকে পাঠাই এবং তিনি আমাদের নিশ্চিত করেন এটিই সেই ব্যক্তি যাকে তিনি ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ এ ডিসচার্জ করেছিলেন।

অতএব, উপরের আলোচনা থেকে বুঝা যাচ্ছে যে, সিলেটের শাহ পরাণ (রঃ) এর মাজারে দুর্বৃত্তদের হামলায় মারা গেছে বলে যে ব্যক্তির ছবি সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে তিনি এখনও বেঁচে আছেন। সেদিন হামলায় গুরুতর আহত হয়ে তিনি এম.এ.জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছিলেন বলেও আমরা জানতে পেরেছি।

সুতরাং, সবকিছু বিবেচনা করে ফ্যাক্টওয়াচ সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার হওয়া ছবির সাথে সংশ্লিষ্ট দাবিটিকে বিভ্রান্তিকর বলে সাব্যস্ত করছে।

No Factcheck schema data available.

ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে। এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে

এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।

কোনো তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকে
ইমেইল করুনঃ contact@factwatch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh