১৪ অক্টোবর ২০২১ তারিখে “বাংলাদেশে কোরআন শরিফ অবমাননা করায় পাকিস্তানের পূজামণ্ডপ ভেঙে ফেলা হচ্ছে” ক্যাপশনে একটি ভিডিও ফেসবুকে শেয়ার হয়েছে। ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে একটি মন্দিরে হামলা-ভাঙচুর চলছে। একই ভিডিও “কুমিল্লায় পবিত্র কোরআনকে মূর্তির পায়ের উপরে রেখে অবমাননা করায় আন্দোলনে পূজামণ্ডপ ভাঙচুর” ক্যাপশনে শেয়ার হয়েছে। বাস্তবে ভিডিওটি ৪ আগস্ট ২০২১ তারিখে পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশে একটি মন্দিরে হামলা ও ভাঙচুরের।
ভাইরাল ভিডিওগুলোর ক্যাপশনে দুই ধরণের তথ্য পরিবেশন করা হয়েছে। এর মধ্যে মুসাফির mf টিভি পেজ থেকে প্রকাশিত ভিডিওটির ক্যাপশনে বলা হয়েছে, “এবার ক্ষেপলো #পাকিস্তান বাংলাদেশে কোরআন শরিফ অবমাননা করায় পাকিস্তানের পূজামণ্ডপ ভেঙে ফেলা হচ্ছে।“
অপর ভিডিওগুলোতে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক সাম্প্রদায়িক উত্তেজনার বিভিন্ন ছবি এবং ভিডিওর সাথে এই ভিডিওটি কোলাজ করে “কুমিল্লায় পবিত্র কোরআনকে মূর্তির পায়ের উপরে রেখে অবমাননা করায় আন্দোলনে পূজামণ্ডপ ভাঙচুর” ক্যাপশনে শেয়ার করা হয়েছে। উল্লেখ্য যে, সম্প্রতি কুমিল্লার একটি পূজামণ্ডপে হনুমানের কোলে কুরআন রাখার ঘটনাকে কেন্দ্র করে পূজামণ্ডপে হামলা এবং ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।
ফ্যাক্টওয়াচ সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া ভিডিওটির “পাকিস্তানের পূজামণ্ডপ ভেঙে ফেলা হচ্ছে” ক্যাপশনটি ধরে মূল ভিডিওটির হদিস পেয়েছে। মূল ভিডিওটি এ বছরের ৪ আগস্ট পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশে একটি মন্দিরে হামলা ও ভাঙচুরের। লাহোর থেকে ৫৯০ কিলোমিটার দূরে রহিম ইয়ার খান জেলার ভং শহরে গনেশ মন্দিরে এই হামলা হয়েছিল। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের ব্যর্থতার পর পাকিস্তান রেঞ্জার্সকে ডাকা হয়েছিল। সেই পুরনো ভিডিওটি সম্প্রতি মিথ্যা ক্যাপশনে ব্যবহার করা হচ্ছে, যার সাথে কুমিল্লার ঘটনার কোনো সম্পর্ক নেই।
উপরোক্ত তথ্যপ্রমাণ অনুযায়ী, সম্প্রতি শেয়ার হওয়া ভিডিওটি পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশে একটি মন্দিরে হামলা ও ভাঙচুরের। এর সাথে কুমিল্লার ঘটনার কোনো সম্পর্ক নেই। কুমিল্লার ঘটনার প্রেক্ষিতে পাকিস্তানের পূজামণ্ডপে হামলা ও ভাঙচুর হচ্ছে, এমন কোনো সংবাদ মূলধারার জাতীয় কিংবা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে খুঁজে পাওয়া যায় নি। সঙ্গত কারণেই তাই ফ্যাক্টওয়াচ এটিকে মিথ্যা সাব্যস্ত করেছে।
আপনি কি এমন কোন খবর দেখেছেন যার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন? কোন বিভ্রান্তিকর ছবি/ভিডিও পেয়েছেন? নেটে ছড়িয়ে পড়া কোন গুজব কি চোখে পড়েছে?