সম্প্রতি ফেসবুকে এক ব্যক্তিকে গাছে বেঁধে রেখে শাস্তি দেওয়ার ভিডিও পাওয়া যাচ্ছে। দাবি করা হচ্ছে, এই বাংলাদেশী ব্যক্তি হিন্দু ধর্মালম্বী। ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে জানা যাচ্ছে, ভিডিওর ব্যক্তিটি হিন্দু নন। হবিগঞ্জে মোবাইল চুরির অভিযোগে সাহিদুল ও জায়েদ মিয়া নামক দুই যুবককে আটক করে গণপিটুনি ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটায় এলাকাবাসী। এই দুইজনের মধ্যে একজনকে এই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে।
মূলত ভারতীয় বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট থেকে “এই দৃশ্য (ছাবা বা অন্য কোনো সিনেমার দৃশ্য নয়) এটা ওপার বাংলার হিন্দুদের সাথে ঘটা বাস্তব ঘটনা, সময় থাকতে সচেতন না হলে অনেক বড় বিপদে সম্মুখীন হতে হবে এপারের হিন্দুদের” ক্যাপশনে ভিডিওটি শেয়ার করতে দেখা যায়। Susanta Ghosh নামের একজন একটি পোস্টে কমেন্ট করেছেন, “হিন্দু ঘুমিয়ে থাকলে এবার পশ্চিমবঙ্গেও হবে”। Romario Majumder কমেন্ট করেছেন, “যত দূর সম্ভব ও বলছে, *ও আব্বা গো * তাহলে ও কি করে হিন্দু হতে পারে?”
ভিডিও থেকে বিভিন্ন কি-ফ্রেম নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে ‘Parvez Mallik’ নামক একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়। পোস্ট করা হয়েছে ১০ মার্চ, ২০২৫ তারিখে। ক্যাপশনে লেখা রয়েছে,“যমুনাবাদে দুই মোবাইল চোর জনতার হাতে আটক। সুশিল আইন থেকে বের হয়ে মাঝে মধ্যে ২-৪ টা এমন করতে হয় নাহলে শিক্ষা আর ভয় হবে না।“
‘Central University of Bangladesh’ নামক একটি পেজ থেকেও ১০ মার্চ, ২০২৫ তারিখ “যমুনাবাদে দুই মোবাইল চোর জনতার হাতে আটক” ক্যাপশনে ভিডিওটি শেয়ার দিতে দেখা যায়। এছাড়াও ‘Hridoy Hossain’ নামক একটি অ্যাকাউন্ট থেকে “মোবাইল চুরির অভিযোগে জোরপূর্বক গাছের সাথে বেঁধে নির্যাতন করে পিছে আগুন জ্বালিয়ে শিকারউক্তি নিচ্ছে এলাকাবাসী।“ ক্যাপশনে একই তারিখে ভিডিওটি পোস্ট করা হয়েছিলো।
পরবর্তীতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে “বাহুবলের যমুনাবাদে দুই মোবাইল চোরকে উত্ত্যম-মধ্যম, অগ্নিসংযোগ” শিরোনামে একটি প্রতিবেদন পাওয়া যাচ্ছে। “দৈনিক হবিগঞ্জ সমাচার” নামক একটি স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ১১ মার্চ, ২০২৫ তারিখে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে। প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার লামাতাসি ইউনিয়নের যমুনাবাদ গ্রামে মোবাইল চুরির অভিযোগে সাহিদুল ও জায়েদ মিয়া নামক দুই যুবককে আটক করে গণপিটুনি ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটায় এলাকাবাসী। এ ঘটনায় জায়েদ মিয়ার শরীরের একাংশ পুড়ে যায় এবং তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ থেকে নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে, ভিডিওতে থাকা ব্যক্তি দুইজন হিন্দু সম্প্রদায়ের নয়। তাই উক্ত দাবিতে ফেসবুকে অপপ্রচার চালানোয় ফ্যাক্টওয়াচ এ দাবিকে “মিথ্যা” সাব্যস্ত করছে।
No Factcheck schema data available.
এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের
নীতি মেনে লেখা হয়েছে। এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে।
এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।
কোনো তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকে ইমেইল করুনঃ contact@fact-watch.org অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh