ঝিনাইদহ চার আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারের মৃত্যু নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। ২১ মে ২০২৪ তারিখে মূলধারার একাধিক গণমাধ্যম থেকে সংবাদ প্রকাশ করে জানানো হয়েছিল সংসদ সদস্য আনার কলকাতায় খুন হয়েছেন এবং কলকাতার নিউটাউন এলাকার সঞ্জিভা গার্ডেন থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
যদিও ২২ মে ২০২৪ তারিখেই The Daily Star বাংলা থেকে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের শিরোনাম হলো “এমপি আনারের মরদেহ পাওয়া যায়নি, ক্রাইম সিনে ফরেনসিক দল আছে: পশ্চিমবঙ্গ সিআইডি প্রধান”। সংবাদটির বিস্তারিত অংশে বলা হয়েছে, “পশ্চিমবঙ্গ সিআইডির মহাপরিদর্শক (আইজি) অখিলেশ চতুর্বেদী কলকাতায় আজ বিকেলে সাংবাদিকদের বলেন, পুলিশের কাছে ‘নির্ভরযোগ্য তথ্য’ আছে যে, এমপি আনারকে হত্যা করা হতে পারে। কিন্তু পুলিশ এখনো তার মরদেহ উদ্ধার করতে পারেনি”।
উল্লেখ্য, সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারের হত্যা কিভাবে সম্পন্ন হয় সে বিষয়ে তথ্য প্রকাশ করে বিভিন্ন গণমাধ্যম। যেমন, এমপি আনারকে শ্বাসরোধে হত্যার পর তার নিথর দেহ নিয়ে নির্মমতা ও পৈশাচিকতা চালিয়েছে খুনিরা। লাশের পাশে বসে খাবার খেয়েছে তারা। এমপির মরদেহ থেকে প্রথমে চামড়া তুলে ফেলা হয়। পরে নিথর দেহটি টুকরো টুকরো করা হয়। হাড় থেকে মাংস আলাদা করার পর মাংস কিমা করা হয়। পরে একাধিক প্লাস্টিকের ব্যাগে ভরে শহরজুড়ে যত্রতত্র অংশগুলো ফেলে দেয়া হয়।
প্রসঙ্গত যে, এখনো পর্যন্ত গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য থেকে জানা যাচ্ছে, সংসদ সদস্য আনোয়ারুলের খুনের ঘটনায় ভারতে দুই বাংলাদেশিসহ তিনজন গ্রেফতার হয়েছে। তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী কয়েকদিন বিভিন্ন জায়গায় লাশের টুকরোর সন্ধান করছেন ভারতের সিআইডির সদস্যরা। যদিও এখনও মরদেহের এক টুকরো মাংসের সন্ধান পায়নি দেশটির গোয়েন্দারা। এছাড়া হত্যা বা মরদেহের বিষয়ে অনুসন্ধান করতে ভারতে গিয়েছিলেন বাংলাদেশের গোয়েন্দা দল।
লক্ষণীয় যে, সাংসদ আনোয়ারুলের মৃত্য নিয়ে এখনো পর্যন্ত যা জানা গেছে তা সবকিছুই গণমাধ্যম থেকে। তবে মরদেহ না পাওয়াতে গণমাধ্যমে এখন ভিন্ন সংবাদ প্রচার হচ্ছে। সময় টিভি থেকে প্রকাশিত একটি ভিডিও প্রতিবেদনের শিরোনাম হলো “আনার খুন হয়েছেন নাকি নিখোঁজ!” চ্যানেল ২৪ থেকে প্রকাশিত প্রতিবেদনের শিরোনাম হলো “মরদেহ না পেলে মিলবে না মৃত্যু সনদ, অপেক্ষা করতে হতে পারে ৭ বছর” এছাড়া প্রথম আলো থেকে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের শিরোনাম “লাশ না পেলে আনোয়ারুল আজীমের সংসদের আসন শূন্য ঘোষণা নিয়ে জটিলতা” প্রতিবেদনটি পড়তে পারবেন এখানে। অর্থাৎ ২১ এবং ২২শে মে ২০২৪ তারিখে একাধিক গণমাধ্যম থেকে সংসদ সদস্য আনারের লাশ উদ্ধারের যে দাবি করা হয়েছিল তা সঠিক নয়। কেননা মরাদেহ বা লাশের কোনো টুকরো উদ্ধার হয়নি সেই তথ্য এখন গণমাধ্যম থেকে পাওয়া যাচ্ছে। মরদেহ না পাওয়া গেলে কি কি অসুবিধা হতে পারে বিষয়েও তথ্য পাওয়া যাচ্ছে।
সুতরাং, সাংসদ আনোয়ারুলের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে এমন দাবি এখনো পর্যন্ত ভিত্তিহীন। তাই “লাশ উদ্ধারের” সকল দাবিকে ফ্যাক্টওয়াচ “মিথ্যা” সাব্যস্ত করছে।
এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।। এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে। এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।