ড. ইউনূস এবং নেতানিয়াহুর করমর্দন দাবিতে বিকৃত ছবি প্রচার

32
ড. ইউনূস এবং নেতানিয়াহুর করমর্দন দাবিতে বিকৃত ছবি প্রচার
ড. ইউনূস এবং নেতানিয়াহুর করমর্দন দাবিতে বিকৃত ছবি প্রচার

সম্প্রতি ফেসবুকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর করমর্দনের দাবিতে একটি ছবি ছড়িয়ে পড়েছে। কিন্তু ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে ছবিটি আসল নয়, ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে এটা বানানো হয়েছে। ২০২৩ সালে তোলা আসল ছবিতে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে পর্তুগালের প্রেসিডেন্ট মারসোলো রেবেলো ডি সুজা (Marcelo Rebelo de Sousa) ছিলেন। তাই ফ্যাক্টওয়াচ ছবিটিকে “বিকৃত” হিসেবে শনাক্ত করছে।

 

গুজবের উৎসঃ এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে। 

ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধান

ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ছবিটির উৎস খুঁজে পাওয়ার জন্য শুরুতেই একে ব্যবহার করে রিভার্স ইমেজ সার্চ করা হয়। এর ফলে ইউনূস সেন্টারের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে ২০২৩ সালের ১৮ মে আপলোড করা আলোচিত ছবিটির পূর্ববর্তী সংস্করণের একটি ছবি খুঁজে পাওয়া যায়।  সেই ছবিতে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে পর্তুগালের রাষ্ট্রপতি মারসোলো রেবেলো ডি সুজাকে দেখতে পাওয়া যায়। এই পোস্টে উল্লেখ করা হয় ছবিটি ২০২৩ সালের ১২ মে পর্তুগালের পোর্তোতে অনুষ্ঠিত ‘সাস্টেইনেবিলিটি এন্ড সোসাইটি ফোরাম’ চলাকালীন ছবিটি ধারণ করা হয়। মুহাম্মদ ইউনূস এই ফোরামে বক্তব্য রেখেছিলেন, যার উদ্বোধন করেছিলেন পর্তুগালের রাষ্ট্রপতি।

ইউনূস সোশ্যাল বিসনেস সেন্টার এবং ইউনূস সেন্টারের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে ‘সাস্টেইনেবিলিটি এন্ড সোসাইটি ফোরাম’ সম্পর্কিত প্রেস রিলিজ খুঁজে পাওয়া যায়। সেখানেও এই একই ছবি প্রকাশিত হয়। তাছাড়া, পর্তুগালে অনুষ্ঠিত এই ফোরাম সম্পর্কে দ্য ডেইলি স্টার বাংলা  ২০২৩ সালের ১৮ মে  এবং নিউ এইজ ১৯ মে রিপোর্ট প্রকাশ করে। সেখানেও ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে পর্তুগালের প্রেসিডেন্ট মারসোলো রেবেলো ডি সুজাকেই দেখা যায়। 

তাছাড়া ড. ইউনূস এবং ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর কোন সাক্ষাৎ এর খবর গণমাধ্যমে পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে, মূল ছবির সাথে ভাইরাল হওয়া ছবিটি তুলনা করলে দেখা যাচ্ছে যে, মূল ছবিতে মারসোলো রেবেলোর মুখের স্থানে নেতানিয়াহুর  ছবি যুক্ত করে বিকৃত করা হয়েছে, তবে বাকি সবকিছু অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। মূল ছবিতে মারসোলো রেবেলো মুহাম্মদ ইউনূসের দিকেই তাকিয়ে আছেন কিন্তু, ভাইরাল ছবিতে নেতানিয়াহু অন্য দিকে তাকিয়ে আছেন।

ইতিপূর্বেও মুহাম্মদ ইউনূস এবং নেতানিয়াহুর করমর্দন সম্পর্কিত ভিন্ন আরেকটি ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছিল। ফ্যাক্টওয়াচ থেকে সেই পোস্ট নিয়ে ফ্যাক্টচেক রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছিল। রিপোর্টটি দেখুন এখানে। 

তাই, উপরের উল্লিখিত প্রমাণের ভিত্তিতে ভাইরাল হওয়া ছবিটিকে ফ্যাক্টওয়াচ “বিকৃত” হিসেবে সাব্যস্ত করছে।

Claim:
সম্প্রতি ফেসবুকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু্র করমর্দন দাবিতে একটি ছবি ছড়িয়ে পড়েছে।

Claimed By:
Facebook users

Rating:
False

এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে। এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে

এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।

কোনো তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকে
ইমেইল করুনঃ contact@fact-watch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh