সম্প্রতি ভারতে হিজাব আন্দোলনে আলোচিত মুসকান খানের মৃত্যু সংবাদসহ একটি ছবি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। অনুসন্ধানে জানা যায়, ছবিটি মুসকানের নয়, বরং কাশ্মীরেরএকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আহত কোনো ছাত্রীর। এই আহত হবার ঘটনাটি ঘটেছিল ২০১৭ সালে কাশ্মীরের শ্রীনগরে। এছাড়া মূলধারার গণমাধ্যমেও মুসকানের মৃত্যু বিষয়ে কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি।
উক্ত ফেসবুক পোস্টে ইউনিফর্ম পরা একজন মেয়েকে মুসকান হিসেবে দাবি করা হচ্ছে। সেখানে বলা হচ্ছে, “মুসকান আর নেই??ভারত বর্ষে যে মেয়েটা আল্লাহু আকবার বলে আওয়াজদিয়ে বিশ্ব কাঁপিয়ে দিয়েছিল,সেই মুসকান মেয়েটাকে কাফেরেরদলেরা হত্যা করে ফেলেছে”।
ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধান
ভাইরাল ছবির সাহায্যে রিভার্স ইমেজ সার্চ করা হলে ভারতের “Mid-Day” প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। “When the girls come out pelting in Kashmir” শিরোনামের এই প্রতিবেদনটি ৩০ এপ্রিল, ২০১৭ সালে প্রকাশিত হয়। সেখানে ভাইরাল এই ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।
এখানে দাবি করা হচ্ছে, ছবিটি কাশ্মীরের নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে শ্রীনগরের বিভিন্ন স্কুলকলেজের ছাত্রীদের বিক্ষোভের সময়কার। এ ঘটনায় আহত এক কলেজ ছাত্রীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় ছবিটি তোলা হয়। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের০৮ জুলাই নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে বন্দুকযুদ্ধে হিজবুল কমান্ডার বোরহান ওয়ানি মারা যায়। এর প্রেক্ষিতেই এই বিক্ষোভটি সংঘটিত হয়।
এর আগে “Rediff.com” নামে ভারতের আরেকটি ওয়েবপোর্টালেও এই ছবিটি পাওয়া যায়। সেখানেও একই দাবি করা হয়।
তবে, ভাইরাল ছবির মেয়েটির আসল পরিচয় খুঁজে পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, মুসকান খান ভারতের কর্ণাটকের বাসিন্দা। এ বছরের শুরুতে কর্ণাটকের একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হিজাবের উপর নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে আন্দোলনে তার একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর থেকেই তাকে নিয়ে বিশ্বব্যাপী আলোচনা শুরু হয়।
মুসকান খান সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে বিবিসির একটি প্রতিবেদন পড়ুন এখানে।
ভাইরাল এসব পোস্টে মুসকানের মৃত্যুর খবরের সত্যতা খুঁজতে পুনরায় অনুসন্ধান করা হয়।তবে তার মৃত্যুর খবর মূলধারার কোনো গণমাধ্যমে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
অতএব বিষয়টি পরিষ্কার যে, কাশ্মীরের পুরানো একটি আন্দোলনে আহত এক ছাত্রীকে কর্ণাটকের মুসকান খান বলে দাবি করা হচ্ছে। ভাইরাল ছবিটি এবং মুসকান খানের ঘটনা দুইটি সম্পূর্ণ ভিন্ন এবং আলাদা সময়ের। এছাড়া মুসকানের মৃত্যুর খবরটিও ভিত্তিহীন।
সুতরাং, ফ্যাক্টওয়াচ ভাইরাল দাবিটিকে মিথ্যা চিহ্নিত করছে।
আপনি কি এমন কোন খবর দেখেছেন যার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন? কোন বিভ্রান্তিকর ছবি/ভিডিও পেয়েছেন? নেটে ছড়িয়ে পড়া কোন গুজব কি চোখে পড়েছে?