নাহিদ ও আসিফকে “খবর” দিতে শ্লোগান দেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা, “কবর” দিতে নয়

155
নাহিদ ও আসিফকে “খবর” দিতে শ্লোগান দেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা, “কবর” দিতে নয়
নাহিদ ও আসিফকে “খবর” দিতে শ্লোগান দেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা, “কবর” দিতে নয়

সামাজিক মাধ্যমে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে, যার ক্যাপশনে লেখা হয়েছে নাহিদরে খবর দে, আসিফরে খবর দে, ধরে ধরে কবর দে। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের এ কেমন স্লোগান! যদিও স্লোগানগুলো ভালো করে শুনে দেখা যায় সেখানে বলা হচ্ছে আসিফরে খবর দে, নাহিদরে খবর দে, আসিফ নজরুল স্যারকে খবর দে। ৩০ এর কবর দে। সারা বাংলায় খবর দে ৩০ এর কবর দে। অর্থাৎ অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াকে কবর দে এ জাতীয় কোনো স্লোগানই সেদিন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা দেননি। তাই এ ধরণের ক্যাপশনগুলোকে ফ্যাক্টওয়াচ “বিভ্রান্তিকর” হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

ছড়িয়ে পড়া কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে

ফেসবুকের একাধিক পোস্ট বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, আসিফকে খবর দে, নাহিদকে খবর দে ৩০ এর কবর দে এমন ক্যাপশনে আন্দোলনের ভিডিওগুলো পোস্ট করা হয়েছে। তবে আসিফকে খবর দে, নাহিদকে খবর দে, ধরে ধরে কবর দে এই ক্যাপশনে Sheikh Enan নামের একটি একাউন্ট থেকে প্রথমে একটি ভিডিও পোস্ট করা হয়। পরবর্তীতে উক্ত ক্যাপশনে ভিডিওটি ফেসবুকে ব্যাপক হারে ভাইরাল হতে থাকে। যার ফলে সাধারণ ব্যবহারকারীরা ভেবেছেন উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদের নামে বিরূপ স্লোগান দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। যাচাই-বাছাই করে দেখা যাচ্ছে যেই ভিডিওগুলো পোস্ট এমন দাবি করা হয়েছে সেখানেও এ জাতীয় স্লোগান নেই। বরং স্লোগানের মাধ্যমে তারা উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদের কাছে সরকারি চাকুরিতে প্রবেশের বয়স বাড়ানোর দাবি এবং ৩০ বছর বাতিলের আবেদন করছেন। তাই আসিফকে খবর দে, নাহিদকে খবর দে, ধরে ধরে কবর দে এ জাতীয় দাবিগুলো ভিত্তিহীন।

অপরদিকে ফেসবুকে একাধিক পোস্টের মাধ্যমে দাবি করা হয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপ‌দেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বুকে গুলি চালানো হয়েছে। সেখানে ৮ জন নিহত ও ৭০ জন আহত হয়েছেন। এ জাতীয় কিছু পোস্ট দেখতে পারবেন এখানে, এখানে এবং এখানে

অথচ গণমাধ্যমের সংবাদ অনুযায়ী প্রধান উপ‌দেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে পুলিশের হাতাহাতির মতো ঘটনা ঘটেছিল। বিশৃঙ্খলা থামাতে সে সময়ে পুলিশ কয়েক রাউন্ড টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করে। কয়েকজন শিক্ষার্থী এতে আহত হন। ঠিক কতজন তা গণমাধ্যমে উল্লেখ নেই। এছাড়া সেখানে শিক্ষার্থী নিহত হবার মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি। জাতীয় কোনো গণমাধ্যমে নিহত হবার কোনো সংবাদ প্রকাশিত হয়নি। বিশ্বাসযোগ্য একটি সূত্রও পাওয়া যায়নি যা থেকে নিশ্চিত হওয়া যাবে নিহত হবার ঘটনা। বলাই বাহুল্য, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে মিডিয়ার কাছে এমন কোনো দাবি করা হয়নি যে তাদের কোনো শিক্ষার্থী মারা গেছেন। বরং গণমাধ্যমের একাধিক প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে চাকুরির বয়স ৩৫ বছর করার দাবিতে সেদিন বেশ কয়েকজন উপদেষ্টার সাথে তাদের সাক্ষাৎ হয়। উপদেষ্টাদের থেকে আশ্বাস পেয়ে তারা যমুনা ছেড়ে গিয়েছিলেন।

সুতরাং, সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার যে আন্দোলন শিক্ষার্থীরা করেছিলেন এবং তা ঘিরে ফেসবুকে আলোচ্য যেই দুটি দাবি করা হচ্ছে তার কোনোটিই সঠিক নয়।

সঙ্গত কারণে এসকল দাবিকে “বিভ্রান্তিকর” চিহ্নিত করছে ফ্যাক্টওয়াচ।

No Factcheck schema data available.

এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে। এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে

এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।

কোনো তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকে
ইমেইল করুনঃ contact@fact-watch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh