“নোবেল শান্তি পুরস্কারের সবচেয়ে বড় দাবিদার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এমনটা বলেছেন অ্যাশলে তোজে” এমন শিরোনামে একটি তথ্য ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে দেখা যায়, দাবিটির পক্ষে নির্ভরযোগ্য কোনো প্রমাণ নেই। নোবেল কমিটির ভাইস চেয়ার অ্যাশলে তোজে (Asle Toje) এই দাবিটিকে গুজব বলে নিশ্চিত করেছেন। যদিও ভারত সফরের সময় তিনি নরেন্দ্র মোদির প্রশংসা করে বক্তব্য দিয়েছিলেন, কিন্তু সেখানে তিনি “মোদি নোবেল পুরস্কারের দাবিদার” এ জাতীয় কোনো মন্তব্য করেননি। তাছাড়া, ভারতীয় মূলধারার সংবাদমাধ্যম অনুযায়ী, তোজে নোবেল কমিটির ভাইস চেয়ার হিসেবে নোবেল পুরস্কার সংক্রান্ত কোনো কাজে ভারতে সফর করেননি। তার সফরের উদ্দেশ্য ভিন্ন ছিল। এ কারণে ফ্যাক্টওয়াচ ভাইরাল হওয়া তথ্যটিকে “মিথ্যা” হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
নরেন্দ্র মোদি এবং অ্যাসলে তোজেকে নিয়ে ভাইরাল দাবিটি তোজের ভারত সফরের পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হতে থাকে। বিষয়টি জানার পরে তোজে সরাসরি দাবিটিকে গুজব বলে চিহ্নিত করেছেন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ANI কে দেয়া তার এক সাক্ষাৎকার থেকে জানা যায়, তথ্যটি সম্পূর্ণরূপে মিথ্যা। তিনি ভারত সফরকালে কোনো বক্তব্যে মোদিকে নিয়ে এমন কিছু বলেননি।
এছাড়াও, ABP News, The New Indian এবং NDTV এর অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে তোজের আলাদা তিনটি সাক্ষাৎকার খুঁজে পাওয়া যায়। সেখানে তাকে নরেন্দ্র মোদির নোবেল পুরষ্কার পাওয়ার ব্যাপারে সরাসরি প্রশ্ন করা হয়। জবাবে তিনি কেবল নরেন্দ্র মোদি নয় বরং প্রতিটি জাতির প্রতিটি নেতা যারা পৃথিবীতে শান্তি বজায় রাখার জন্য পদক্ষেপ নিয়েছেন, তারা সকলেই নোবেল নোবেল শান্তি পুরষ্কার পাওয়ার যোগ্যতা রাখেন বলে ইঙ্গিত করেন।
অন্যদিকে, The Nobel Prize এর ওয়েবসাইটে উল্লেখ করা বিধান অনুযায়ী, নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনয়নের মানদণ্ড পূরণ করে যে কোনো ব্যক্তি মনোনয়ন পত্র পূরণ করে জমা দিতে পারে। তবে, ৫০ বছর অতিবাহিত না হওয়া পর্যন্ত পুরস্কারের জন্য মনোনীত এবং মনোনীতকারীর নাম কারও কাছে প্রকাশ করে না নোবেল পুরষ্কার কমিটি। অ্যাসলে তোজে যেহেতু নোবেল কমিটির ভাইস চেয়ার সেক্ষেত্রে নোবেল পুরষ্কারের বিধান লঙ্ঘন করে, এমন একটি বক্তব্য দেয়া তার পক্ষে নিতান্তই অবাস্তব।
উল্লেখ্য, বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে দেয়া সাক্ষাতকারে তোজে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে ইতিবাচক হস্তক্ষেপের জন্য এবং ভারতের যাবতীয় উন্নয়নের জন্য নরেন্দ্র মোদির প্রশংসা করেছেন। যেমনঃ রাশিয়াকে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের পরিণতি মনে করিয়ে দেওয়া এবং কাউকে হুমকি না দিয়ে কেবল বন্ধুত্বপূর্ণভাবে ভারতের অবস্থান জানানো, একটি উন্নয়নশীল দেশ থেকে বিশ্বের অন্যতম প্রধান অর্থনীতিতে পরিণত হওয়া, ইত্যাদি। তোজে মোদিকে বিশ্বের শান্তির অন্যতম নির্ভরযোগ্য মুখ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। কিন্তু তিনি কোনোভাবেই বলেন নি যে, নোবেল শান্তি পুরস্কারের সবচেয়ে বড় দাবিদার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এ সংক্রান্ত কিছু প্রতিবেদন দেখুন এখানে এবং এখানে।
সঙ্গত কারণে ফ্যাক্টওয়াচ ভাইরাল হওয়া তথ্যটিকে “মিথ্যা” হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
আপনি কি এমন কোন খবর দেখেছেন যার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন? কোন বিভ্রান্তিকর ছবি/ভিডিও পেয়েছেন? নেটে ছড়িয়ে পড়া কোন গুজব কি চোখে পড়েছে?