গবাদি পশুর ওপর কর নির্ধারণের চুক্তিটি বাংলাদেশের নয় 

123
গবাদি পশুর ওপর কর নির্ধারণের চুক্তিটি বাংলাদেশের নয় 
গবাদি পশুর ওপর কর নির্ধারণের চুক্তিটি বাংলাদেশের নয় 

Published on: [post_published]

যা ছড়িয়েছে: প্রথমবারের মতো গবাদি পশুর ওপর কর নির্ধারণ, গরুপ্রতি সাড়ে ১১ হাজার টাকা। 

যে ধারণা দেয়া হচ্ছে: ঘটনাটি ঘটেছে বাংলাদেশে! 

ফ্যাক্টওয়াচের সিদ্ধান্ত: দাবিটি বিভ্রান্তিকর। প্রথমবারের মতো গবাদি পশুর ওপর কর নির্ধারণ এবং গরুপ্রতি সাড়ে ১১ হাজার টাকা কর দেওয়ার চুক্তিটি বাংলাদেশের নয়। মূলত ইউরোপের কৃষি ও খামার নির্ভর অর্থনীতির দেশ ডেনমার্কে ২৫ জুন ২০২৪ তারিখে এই সংক্রান্ত একটি চুক্তি সই হয়েছে। ২০৩০ সাল থেকে পশুর ওপর নতুন এই কর আদায় কার্যকর হবে। কিন্তু ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া এসব সংবাদের শিরোনামে নির্দিষ্ট কোনো দেশ বা স্থানের উল্লেখ নেই। যে কারণে সংবাদটি দেখে প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে এটি হয়তো বাংলাদেশের ঘটনা। যার ফলে সাধারণ ব্যবহারকারীদের অনেকে বিষয়টি বাংলাদেশের ঘটনা ভেবে শেয়ার করেছেন। 

 ফেসবুক ভাইরাল এমন কিছু লিংক বাছাই করা হয়েছে। যা দেখতে পাবেন এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে


ফেসবুকে আলোচিত সংবাদটি বাংলাদেশের কয়েকটি মূলধারার গণমাধ্যমে প্রথমবারের মতো গবাদি পশুর ওপর কর নির্ধারণ, গরুপ্রতি সাড়ে ১১ হাজার টাকা বা প্রথমবারের মতো গরুর ওপর কর নির্ধারণ শিরোনামে প্রকাশিত হয়েছে। সংবাদটির সাথে একটি ফটোকার্ড ব্যবহার করা হয়েছে। ফটোকার্ডটিতে কিছু গরু দেখা যাচ্ছে। উক্ত সংবাদের বিস্তারিত অংশে দেখা যায়, ইউরোপের কৃষি ও খামার নির্ভর অর্থনীতির দেশ ডেনমার্কে এই সংক্রান্ত একটি চুক্তি সই হয়েছে। ২০৩০ সাল থেকে পশুর ওপর নতুন এই কর আদায় কার্যকর হবে। চুক্তি অনুযায়ী পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়াতে পশু থেকে নির্গত গ্যাস (কার্বন) বিশেষভাবে দায়ী। তাই পশুপালনকারীকেও এই দায় বহন করতে হবে। প্রতি গরুর জন্যে পালনকারীকে দিতে হবে ৬৭২ ক্রোন বা ৯৬ মার্কিন ডলার। 

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের গণমাধ্যমে উক্ত ঘটনাটি আমেরিকার গণমাধ্যম সিএনএনের বরাতে প্রকাশিত হয়েছে। সিএনএন সংবাদটিতে যেই ফিচার ইমেজ ব্যবহার করেছে তার নিচে ছবিটি কোথায় ধারণ করা হয়েছে এবং কত তারিখে তা উল্লেখ করেছে। বাংলাদেশী গণমাধ্যমে যা অনুপস্থিত। তাছাড়া আমেরিকান গণমাধ্যম সিএনএন যুক্তরাজ্যের গণমাধ্যম ফিনান্সিয়াল টাইমস, দ্য গার্ডিয়ান এবং The Scottish Farmer ওয়েবসাইটে এ বিষয়ে যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সেখানে শুরুতে স্থান বা দেশের নাম উল্লেখ করেছে। গণমাধ্যমগুলোর শিরোনাম দেখেই পরিষ্কার ধারণা পাওয়া যায় এটি কোন স্থান বা দেশের সংবাদ। 

শিরোনামগুলো হলো “Denmark to charge farmers 100 a cow in first carbon tax on agriculture” এবং “Denmark introduces world’s first cow tax”। প্রতিনিয়ত একাধিক প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, প্রতিবেদনের শিরোনামে যখন স্থানের নাম বা দেশের নাম উল্লেখ করা হয়, তখন তা নিয়ে কোনো বিভ্রান্তি হয় না। অথচ “প্রথমবারের মতো গবাদি পশুর ওপর কর নির্ধারণ” এ জাতীয় শিরোনাম থাকলে বিভ্রান্তি তৈরি হয়। যেমনটি দেখা যাচ্ছে, এটি ডেনমার্কের ঘটনা হলেও অনেকে বাংলাদেশের ঘটনা বলে ভেবেছেন। অনেকেই সংবাদটির নিচে বিভিন্ন মন্তব্য করেছেন। ভেতরের সংবাদ পড়ে যখন দেখেছেন এটি ডেনমার্কের ঘটনা, তখন বাংলাদেশের সাংবাদিকতার মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। 

 

সুতরাং, সবকিছু বিবেচনা করে ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া সংবাদটিকে ফ্যাক্টওয়াচ “বিভ্রান্তিকর” হিসেবে সাব্যস্ত করেছে।

এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।।
এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে
এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।

কোনো তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকেঃ
ইমেইল করুনঃ contact@factwatch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh

No Factcheck schema data available.