ঢাবি ও সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে ভুয়া ফটোকার্ডের ছড়াছড়ি

40
ঢাবি ও সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে ভুয়া ফটোকার্ডের ছড়াছড়ি
ঢাবি ও সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে ভুয়া ফটোকার্ডের ছড়াছড়ি

২৬ জানুয়ারি রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এর প্রেক্ষিতে ২৭ জানুয়ারি ফেসবুকে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের নামে একাধিক ফটোকার্ড ছড়িয়ে পড়ে। এর মধ্যে কিছু ফটোকার্ড সম্পাদিত এবং কিছু ফটোকার্ড সম্পূর্ণ বানোয়াট। ফটোকার্ডগুলোর দাবির স্বপক্ষে কোনো তথ্য মূলধারার গণমাধ্যমে খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও ভুয়া ফটোকার্ডগুলোর ফন্টের সাথে আসল ফটোকার্ডগুলোর ফন্টের পার্থক্য লক্ষণীয়। 

ফটোকার্ড-১

ঢাবি ও অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ছাত্রদের “বেয়াদব” বলে অভিহিত করেছেন দাবিতে যমুনা টিভির আদলে বানানো একটি ফটোকার্ড ভাইরাল হয়েছে। কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে। 

যমুনা টিভির ওয়েবসাইট এবং ফেসবুক পেজ সন্ধান করে এমন কোনো ফটোকার্ড পাওয়া যায় না। তবে যমুনা টিভির ফেসবুক পেজ থেকে আজ প্রকাশিত “অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেছেন ঢাবি উপাচার্য” এমন খবর সম্বলিত একটি ফটোকার্ড পাওয়া যাচ্ছে, যেটি ভাইরাল ফটোকার্ডের সাথে হুবহু মিলে যাচ্ছে। 

অর্থ্যাৎ, প্রযুক্তির সহায়তায় যমুনা টিভির মূল ফটোকার্ডকে এডিট করে মিথ্যা সংবাদ বসিয়ে ফেসবুকে ছড়ানো হচ্ছে।

ফটোকার্ড-২

“নীলক্ষেতে সংঘর্ষের ঘটনায় গুলিবিদ্ধ ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী রাকিব মারা গেছেন” – এই মর্মে যমুনা টিভির আদলে বানানো আরেকটি ফটোকার্ড ছড়িয়েছে। কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে

পুনরায়, যমুনা টিভির ওয়েবসাইট এবং ফেসবুক পেজ সন্ধান করে দেখা যাচ্ছে তারা এমন কোনো ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি। বরং যমুনা টিভি তাদের ফেসবুক পেজ থেকে একটি সতর্কতামূলক পোস্ট করে জানিয়েছে তাদের নাম ব্যবহার করে ছড়ানো এই ফটোকার্ডটি ভুয়া।

ফটোকার্ড-৩

ইডেন কলেজের ৩ জন নারী শিক্ষার্থীকে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে ঢাবি শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে – এই মর্মে একুশে টেলিভিশনের আদলে বানানো একটি ফটোকার্ড পাওয়া যাচ্ছে ফেসবুকে। কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে। 

একুশে টেলিভিশনের ওয়েবসাইট এবং ফেসবুক পেজ সন্ধান করে এমন কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। বরং একুশে টেলিভিশন তাদের ফেসবুক পেজ থেকে একটি সতর্কতামূলক পোস্ট করে জানিয়েছে তাদের নাম ব্যবহার করে ছড়ানো এই ফটোকার্ডটি ভুয়া।

ফটোকার্ড-৪

“মধ্যরাতে রণক্ষেত্র নীলক্ষেত ; নিহত ৫, আহত শতাধিক” – এমন সংবাদে দৈনিক আমার দেশের আদলে বানানো একটি ফটোকার্ড পাওয়া গেছে ফেসবুকে। কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে। 

আমার দেশের ওয়েবসাইট এবং ফেসবুক পেজ সন্ধান করে দেখা যাচ্ছে তারা এমন কোনো ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি। বরং তারাও একইভাবে ফেসবুক পেজ থেকে একটি সতর্কতামূলক পোস্ট করে জানিয়েছে তাদের নাম ব্যবহার করে বিভিন্ন ভুয়া ফটোকার্ড ও সংবাদ ছড়ানো হচ্ছে। 

সঙ্গত কারণে ফ্যাক্টওয়াচ এসব ফটোকার্ডগুলোকে “মিথ্যা” সাব্যস্ত করছে।

Claim:
২৬ জানুয়ারি রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এর প্রেক্ষিতে ২৭ জানুয়ারি ফেসবুকে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের নামে একাধিক ফটোকার্ড ছড়িয়ে পড়ে।

Claimed By:
Facebook Users

Rating:
False

এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে। এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে

এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।

কোনো তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকে
ইমেইল করুনঃ contact@fact-watch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh