এই লোক নিজের সব দাঁত তুলে ফেলে, নিজের গার্লফ্রেন্ড এর জন্য দাঁত দিয়ে নেকলেস বানিয়েছে।ভালোবাসা মানুষকে অন্ধ না শুধু ফোকলা ও বানিয়ে দেয়।– এমন একটি ফেসবুক পোস্ট এবং সংশ্লিষ্ট ছবি ভাইরাল হয়েছে। ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে, এই ঘটনার কোনো সত্যতা নাই। মিশরের অভিনেতা ,মোহাম্মদ সোলায়মান আল সাইদ তার ফেসবুক একাউন্টে মজা করে এই ছবি পোস্ট করেছিলেন, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তিনি কোনো দাঁত তোলেননি।
মিশরের অভিনেতা Mostafa Soliman EL Sayed গত ৩১শে অক্টোবর নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক একাউন্ট থেকে দু’টি ছবি পোস্ট করে ক্যাপশনে লিখেন, সত্যিই , আমার জীবনে দেখা ভালবাসার সবচেয়ে সেরা উপায় হল, আপনার সবগুলা দাত খুলে আপনার ভালবাসার মানুষকে দিয়ে দেওয়া। (আরবিতে – بجد من اجمل معاني الحب اللي شوفتها في حياتي انك تخلع كل سنانك و ضروسك وتهديها للانسانة اللي بتحبها )
যে, দু’টি ছবি তিনি পোস্ট করেন, তার প্রথম ছবিটি কোনো জুয়েলারি শপ থেকে ডাউনলোড করা ছবি। কারন এই ধরনের ‘দাতের নেকলেস’ বিভিন্ন জুয়েলারি শপের ওয়েবসাইটে দেখা যায়। যেমন দেখুন এখানে , এখানে ।
তার দ্বিতীয়টি তার নিজের তার ফেসবুক একাউন্ট এবং ইনস্টাগ্রাম প্রফাইল থেকে চশমা পরিহিত একই ধরনের আরো ছবি পাওয়া যাচ্ছে, যার সাথে তার চেহারার সাদৃশ্য রয়েছে।
স্পষ্টতই তিনি মজা করে এই পোস্টটি করেছিলেন।
পরবর্তী কয়েকদিনে তার এই স্ট্যাটাস এর স্ক্রিনশট সোস্যাল মিডিয়ায় মিম ম্যাটেরিয়াল হিসেবে ছড়াতে থাকে।
বাংলাদেশে 14again.net ওয়েবসাইটে, স্যাটায়ার সেকশনে গত ১০ই নভেম্বর এই ছবি ব্যবহার করে একটি কাল্পনিক ঘটনা ছাপা হয়। পরে সেটা ফেসবুক পেজ থেকেও শেয়ার করা হয়।
এই স্যাটায়ার খবরে দাবি করা হয়, মিশরের ‘কেক’ নামের এক তরুণ তার বান্ধবী ‘লিসা’র অভিমান ভাঙ্গানোর জন্য নিজের দাত দিয়ে একটি নেকলেস বানিয়ে লিসাকে উপহার দিয়েছেন।
এই খবরের শুরুতে হেডিং এ এটাকে ‘স্যাটায়ার’ হিসেবে চিহ্নিত করা ছিল।
তবে গত কয়েকদিন বাংলাদেশের ফেসবুক ব্যবহারকারীদের মধ্যে এই ছবি ব্যবহার করে এটাকে সত্য খবর হিসেবে শেয়ার করতে দেখা গেছে।
মোস্তফা সোলায়মান এর বক্তব্য
বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্য ফ্যাক্টওয়াচের পক্ষ থেকে মিশরের অভিনেতা মোস্তফা সোলায়মান আল সায়িদ এর ভেরিফাইড ফেসবুক একাউন্টে যোগাযোগ করা হয়। সেখান থেকে এল সাইদ উত্তর দেন, এটা সম্পূর্ণই ট্রল ছিল। ইন্টারনেট থেকে ছবি নামিয়ে তিনি এটি আপলোড করেছেন। তার মুখ থেকে কোনো দাত তোলা হয়নি, সবগুলো দাতই তার মুখে রয়েছে।
একই সাথে তিনি ফ্যাক্টওয়াচকে নিশ্চিত করেন, ভাইরাল হওয়া ছবি দু’টির প্রথমটি তিনি নেট থেকে ডাউনলোড করেছেন এবং দ্বিতীয়টি তার নিজের ছবি।
কাজেই, ভাইরাল হওয়া এই ছবি এবং ঘটনার সত্যতা নাই। ফ্যাক্টওয়াচ একে স্যাটায়ার হিসেবে সাব্যস্ত করছে।
আপনি কি এমন কোন খবর দেখেছেন যার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন? কোন বিভ্রান্তিকর ছবি/ভিডিও পেয়েছেন? নেটে ছড়িয়ে পড়া কোন গুজব কি চোখে পড়েছে?