তদন্ত রিপোর্টের কারণে বেঁচে যাচ্ছেন ওসি প্রদীপ?

34
তদন্ত রিপোর্টের কারণে বেঁচে যাচ্ছেন ওসি প্রদীপ?
তদন্ত রিপোর্টের কারণে বেঁচে যাচ্ছেন ওসি প্রদীপ?

Published on: [post_published]

সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে, কপাল খুলে গেছে ওসি প্রদীপের। তদন্ত রিপোর্টের কারণে বেঁচে গেছেন তিনি। ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, হত্যা মামলায় আদালতের রায়ে  মৃত্যুদণ্ড পেয়েছেন কক্সবাজারের টেকনাফ থানার এই বরখাস্ত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)। তাছাড়া দূর্নীতির অভিযোগেও প্রদীপ কুমার দাশকে ২০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। প্রসঙ্গত, প্রদীপ কুমার দাশের বিচারিক কার্যক্রম আদালতের গতি মোতাবেক চলমান রয়েছে। যে কারণে ওসি প্রদীপ নিয়ে উক্ত দাবিগুলোর কোনো ভিত্তি নেই।

এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে

 ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধান:

ভাইরাল পোস্টগুলোতে যে দাবি করা হয়েছে, সে বিষয়ে মূল ধারার সংবাদমাধ্যম কি বলেছে তা যাচাই-বাছাই করে দেখা হয়। সংবাদমাধ্যমের একাধিক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ওসি প্রদীপের বিচারিক কার্যক্রম ধারাবাহিকভাবে চলমান রয়েছে। প্রতিবেদনগুলোতে এমন কিছু উল্লেখ নেই, যা দেখে মনে হতে পারে কোনো তদন্ত প্রতিবেদনের জন্য ওসি প্রদীপের সুবিধা হয়েছে, বা তার সাজা কম হওয়ার সুযোগ আছে। ওসি প্রদীপকে নিয়ে কিছু প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এবং এখানে

ভিডিওটির বিস্তারিত অংশে বলা হয়েছে, ওসি প্রদীপের বাংলাদেশে কোনো সম্পদ নেই, যা নিয়ে দুদক কোনো সুরাহা করতে পারছে না।

যদিও আগেই অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলায় টেকনাফ থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশকে ২০ বছরের ও তার স্ত্রী চুমকি কারণকে ২১ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন চট্টগ্রামের একটি আদালত। দুদকের তদন্ত কর্মকর্তার প্রতিবেদনে  অনুযায়ী ওসি প্রদীপ অবৈধভাবে যে সম্পদ অর্জন করেছেন সেগুলো তিনি তার স্ত্রী চুমকি কারণের নামে করে দিয়েছেন। যে কারণে তার নামে কোনো সম্পদ পাওয়া যায়নি। এই মামলাটির অভিযোগপত্র গঠনের পর আদালত ২৯ জন সাক্ষীর মধ্যে ২৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করে আদালত। সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালত উক্ত রায়টি ঘোষণা করেন। অর্থাৎ, স্ত্রীর নামে যে সম্পদ আছে তা যে ওসি প্রদীপেরই অবৈধ অর্জিত সম্পদ সেটি দুদক প্রমাণ করতে পেরেছে। যার কারণে আদালত প্রদীপ ও তার স্ত্রীকে সাজা দিয়েছেন। প্রতিবেদন দেখুন এখানে

এখন ভাইরাল ভিডিওটিতে এমন দাবিও করা হয়েছে, ওসি প্রদীপের নামে দেশে কোনো সম্পদ না থাকার কারণে বিদেশে কোনো সম্পদ আছে কিনা জানতে চট্টগ্রাম দুদক কার্যালয় থেকে প্রদীপের সম্পদ অনুসন্ধানে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, কানাডা, আরব আমিরাত ও ভারতের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। এটিও বিভ্রান্তিকর তথ্য। দুদক থেকে বলা হয়েছে, ওসি প্রদীপের স্ত্রী আয়কর বিবরণীতে যে তথ্য প্রদান করেছেন তা পর্যাপ্ত নয়। ওসি প্রদীপের অবৈধভাবে অর্জিত আরও সম্পদ দেশের বাইরে থাকতে পারে। যে কারণে তারা ৭ দেশে যে চিঠি পাঠিয়েছে। চিঠির জবাব পেলে পরবর্তীতে আরও পদক্ষেপ নিবে দুদক।

৭ দেশে যে চিঠি পাঠানো নিয়ে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখুন এখানে।

সুতরাং, তদন্ত রিপোর্টের কারণে সুবিধা পেয়েছেন ওসি প্রদীপ বা মুক্তি পেতে যাচ্ছেন– এধরণের দাবি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। অতএব, ওসি প্রদীপকে নিয়ে ভিত্তিহীন দাবিগুলোকে ফ্যাক্টওয়াচ “মিথ্যা” সাব্যস্ত করেছে।

আপনি কি এমন কোন খবর দেখেছেন যার সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন?
কোন বিভ্রান্তিকর ছবি/ভিডিও পেয়েছেন?
নেটে ছড়িয়ে পড়া কোন গুজব কি চোখে পড়েছে?

এসবের সত্যতা যাচাই করতে আমাদেরকে জানান।
আমাদেরকে ইমেইল করুনঃ contact@factwatch.org
অথবা ফেইসবুকে মেসেজ দিনঃ facebook.com/fwatch.bangladesh