সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে একটি পোস্ট এই মর্মে ভাইরাল হয়েছে যে জ্বালানি তেল অকটেনের দাম কমেছে। এখন থেকে প্রতি লিটার অকটেনের মূল্য ১০০ টাকা ধার্য করা হয়েছে। যার পূর্ব মূল্য ছিলো ১৩০ টাকা। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, অকটেনের দাম কমানো বিষয়ক একটি আলোচনা চলমান রয়েছে। তবে এখনো কার্যকর হয়নি। সঙ্গত কারণে অকটেনের দাম ১০০ টাকা শীর্ষক দাবিটিকে ফ্যাক্টওয়াচ “বিভ্রান্তিকর” চিহ্নিত করেছে।
দাবিটির সত্যতা জানতে বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিন ব্যবহার করে গুগলে সার্চ করা হয়। ১০ ডিসেম্বর ২০২৩ তারিখে ডিজেলের দাম বাড়ছে শিরোনামে কালবেলা থেকে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, চলতি মাসেই বিশ্ববাজারের সঙ্গে দেশের জ্বালানি তেলের মূল্য সমন্বয়ে ‘স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতি’ বাস্তবায়ন করা হবে। এজন্য দেশে সর্বাধিক ব্যবহৃত জ্বালানি পণ্যগুলোর (তেল) মূল্য নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি)। বিপিসির দাম নির্ধারণের প্রক্রিয়ায় বাড়ছে ডিজেলের দাম, কমছে অকটেনের। প্রতিবেদনটি পড়ুন এখানে।
উল্লেখ্য, অকটেনের দাম ১০০ টাকা নির্ধারণ হয়েছে দাবিটির স্বপক্ষে কালবেলা পত্রিকার উক্ত প্রতিবেদনটিকে সূত্র হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। যদিও প্রতিবেদনটির বিস্তারিত অংশে বলা হয়েছে, “চলতি মাসে বিশ্ববাজারের সঙ্গে জ্বালানি তেলের দাম সমন্বয় করতে দুটি পণ্যে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ডিজেলের দাম বর্তমানের চেয়ে বেশি নির্ধারণ করা হয়েছে। এখন প্রতি লিটার ডিজেল বিক্রি হচ্ছে ১০৯ টাকায়। সমন্বয় করে লিটারপ্রতি দাম রাখা হবে ১১০ টাকা। অন্যদিকে, অপেক্ষাকৃত অনেক কম ব্যবহার হয় অকটেন। বর্তমানে ভোক্তা পর্যায়ে অকটেন লিটারপ্রতি ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অকেটেনের দাম কমিয়ে লিটারপ্রতি ১০০ টাকা রাখা হচ্ছে। অকটেনের চাহিদার পুরোটাই দেশে উৎপাদন হয়। সংশ্লিষ্টরা জানান, মূল্য সমন্বয়ে লিটারপ্রতি ১০ টাকা লাভ রাখার প্রস্তাব দিয়েছিল বিপিসি। কিন্তু বিপিসির এই প্রস্তাব সর্বশেষ বৈঠকে বাতিল করে দেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী। ফলে প্রতি লিটারে বিপিসি কত মুনাফা করবে, তা চলতি সপ্তাহে নির্ধারণ করা হবে”।
অর্থাৎ, ডিজেলের দাম বাড়ানোর বা অকটেনের দাম কমানোর প্রস্তাবনাটি এসেছে বিপিসি থেকে। তবে ডিজেল বা অকটেনে প্রতি লিটারে বিপিসি কত মুনাফা করবে, তা চলতি সপ্তাহে নির্ধারণ করা হবে। সুতরাং অকটেনের দাম ১০০ টাকা নির্ধারণ হয়ে গেছে এই দাবিটি এখনো সত্য নয়।
প্রসঙ্গগত, অকটেনের মূল্য ১০০ টাকা ধার্য করা হয়েছে এমন সংবাদটি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে জনসাধারণের মাঝে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে পড়ে। তাৎক্ষনিকভাবে অনেকে পাম্পে তেল নিতে যান। আজও পাম্পে যেয়ে খোঁজ নিয়ে জেনেছেন এখনো দাম কমানোর বা এ জাতীয় কোনো নিদের্শনা তাদের কাছে আসেনি। সামাজিক মাধ্যমে এ বিষয়ে অনেকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন।
যে কারণে অকটেনের দাম ১০০ টাকা নির্ধারণ শীর্ষক দাবিগুলোকে ফ্যাক্টওয়াচ “বিভ্রান্তিকর” চিহ্নিত করেছে।
এই নিবন্ধটি ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের নীতি মেনে লেখা হয়েছে।। এর উপর ভিত্তি করে ফেসবুক যে ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখানে। এছাড়া এই নিবন্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন, সম্পাদনা কিংবা আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার জন্য আবেদন করতে এই লিঙ্কের সাহায্য নিন।